তিনি পুরো দলের ‘মুশতাক ভাই’। স্পিনারদের দায়িত্ব নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু এখন পেসার, ব্যাটার, এমনকি ক্যাপ্টেনের ছায়াসঙ্গী তিনিই। এই পাকিস্তানি লেগস্পিন গ্রেট এমনই এক চরিত্র, যিনি কোচিংকে বানিয়ে ফেলেছেন একরকম আত্মীয়তার বন্ধন।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত কৌশল সাজিয়ে নিচ্ছেন। সঙ্গী তাঁর মুশতাক আহমেদ। নাহিদ রানা ছন্দ পাচ্ছেন না। তিনি গেলেন মুশতাক আহমেদের কাছে। মুমিনুল হক ভুগছেন আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিতে, তিনিও যাচ্ছেন মুশতাক আহমেদের কাছে। গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক নিয়মিত আর পরিচিত দৃশ্য।
অথচ, পাকিস্তানের এই স্পিন গ্রেট বাংলাদেশে এসেছেন স্পিন বোলিং কোচের দায়িত্ব নিয়ে। তাঁর কাজ স্পিনারদের নিয়ে। যদিও, দলের সবার যেকোনো প্রয়োজনে সবার আগে হাজির পাকিস্তানের সাবেক এই লেগ স্পিনার। যেন সবার প্রিয় বড় ভাই তিনি।
নাজমুল হোসেন শান্ত নেটে ব্যাট করছিলেন। বোলিংয়ে তখন তাইজুল ইসলাম। শান্ত একটা ড্রাইভ করলেন, মুশতাক বলে উঠলেন, দ্যাটস আ গ্লোরিয়াস কাভার ড্রাইভ। শীষ্যদের পিঠ চাপড়ে দিতে এক বিন্দুও ছাড় দেন না এই কোচ।
এটা যেন মুশতাক আহমেদের নিত্যদিনের কাজ। খেলোয়াড়দের সাথে দারুণ সখ্যতা তাঁর। স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে বাংলাদেশ দলের সাথে কয়েক মেয়াদে কাজ করেছেন মুশতাক। ফলে, দলের ক্রিকেটারদের নাড়ি নক্ষত্র সব জানা আছে তাঁর।
তাই, অন্য যেকোনো কোচের চেয়ে দলের সাথে যোগাযোগটা তাঁর বেশি। দলকে, দলের প্রতিটা খেলোয়াড়কে আলাদা করে বোঝাটাও সহজ। কোচিং মানেই তো কেবল ট্রেনিং নয়। খেলোয়াড়দের মনের দরজা খুলতে হয়।
এরপরই কৌশলে বা মানসিকতায় আসে পরিবর্তন। আর তার প্রভাবটা পড়ে খেলার মাঠে। মুশতাকের ভূমিকাটাও বাংলাদেশ দলে তেমনই। দলের মানসিক দুয়ার খুলে ভেতরে ঢুকে পড়েছেন তিনি। বড় ভাই হয়ে সবার সকল সমস্যার মুশকিল আসান করে বেড়াচ্ছেন এই কোচ।
মুশতাক আহমেদ বাংলাদেশের ডাগআউটে শুধু একজন কোচ না, তিনি আমাদের দলটার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মানুষ। মাঠে ঝড় থাকুক, কিংবা মন খারাপের দিন—সবার আগে যার কাছে ছুটে যাওয়া যায়, সেই মানুষটার নাম মুশতাক আহমেদ।
কখনো কঠোর হন না, গর্জে ওঠেন না, বরং শিষ্যদের ভুলের মধ্যেও খুঁজে নেন সম্ভাবনার আলো। এটা তাঁর অভ্যাস নয়, এটা তাঁর চরিত্র। কে কোন সংকোচে, কার চোখে তেষ্টা, আর কার মগজে ধোঁয়াশা—সব টের পান। মুশতাক আহমেদ এখানেই তো আলাদা!