অ্যাশেজের মঞ্চে ব্যাটিং দাপট

অ্যাশেজ, ক্রিকেটের আদি ফরম্যাটের কঠিনতম পরীক্ষা। টেস্ট ক্রিকেটের প্রতিদ্বন্দ্বিপূর্ণ এই লড়াই উত্তাপ ছড়িয়ে আসছে ক্রিকেটার ও ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে। টেস্ট ক্রিকেটের তীব্র লড়াইয়ে মেতে উঠে অন্যতম সেরা দুই দল অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড।

১৯৮২ সাল থেকে চলে আসা এই ক্রিকেটীয় লড়াইয়ের জন্য এখনো অপেক্ষা করে দর্শকরা। অপেক্ষা করেন ক্রিকেটাররাও। টেস্ট ক্রিকেটের কঠিনতম লড়াইয়ে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ। হিরো হয়ে উঠার সবচেয়ে বড় মঞ্চ। অ্যাশেজে এমনই কিছু পারফর্মেন্স দিয়ে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন কয়েকজন ব্যাটসম্যান। এই লড়াইয়ের সর্বোচ্চ ইনিংস গুলো এসেছে তাঁদের ব্যাট থেকেই। অ্যাশেজের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস গুলো নিয়েই এই তালিকা।

  • ডন ব্র্যাডম্যান (অস্ট্রেলিয়া): ৩০৪ (লিডস, ১৯৩৪)

ক্রিকেটবোদ্ধাদের মতে কোন বিতর্ক ছাড়াই ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যানের নাম স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে কিংবদন্তি এই ব্যাটসম্যান্ খেলেছেন মোট ৫২ টি টেস্ট ম্যাচ। সেখানে ৯৯.৯৪ ব্যাটিং গড়ে করে তাঁর ঝুলিতে আছে ৬৯৯৬ রান।

অ্যাশেজে নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা একট ইনিংস খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২০০ রানেই অল আউট হয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ব্র্যাডম্যান একাই করেছিলেন ৩০৪ রান। তাঁর এই ইনিংসে ৩৮৪ রানের বিশাল লিড পেয়েছিল অজিরা। এটি অ্যাশেজের ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত ইনিংস।

  • বব কুপার (অস্ট্রেলিয়া): ৩০৭ (মেলবোর্ন, ১৯৬৬)

টেস্ট ক্রিকেটে অজিদের সফল ব্যাটসম্যান বব কুপার। অজিদের হয়ে এই ব্যাটসম্যান খেলেছিলেন ২৭ টি টেস্ট। সেখানে রান করেছেন প্রায় ৫০ ছুঁই ছুঁই গড়ে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি করার রেকর্ডও তাঁর ঝুলিতেই।

অজিদের হয়ে এই কীর্তিটি তিনি করেছিলেন অ্যাশেজ সিরিজেই। ১৯৯৬ সালে মেলবোর্নে এই কীর্তি করেন বব কোপার। সেদিন তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ৩০৭ রানের ইনিংস। এই ইনিংসে ভর করে ৫৪৩ রানের সংরহ পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।

  • ববি সিম্পসন (অস্ট্রেলিয়া): ৩১১ (ম্যানচেস্টার, ১৯৬৪)

অস্ট্রেলিয়ার  অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করার জন্য সময় নিয়েছিলেন ৩০ টেস্ট ম্যাচ। ১৯৫৭ সালে টেস্ট অভিষেক হবার পর ৫১ টি ইনিংস খেলেছেন। তারপরেই দেখা মিলেছিল স্বপ্নের সেঞ্চুরি।

তবে ম্যানচেস্টারে ১৯৬৪ সালে এক অ্যাশেজ সিরিজে নিজের সক্ষমতা দেখিয়েছিলেন তিনি। সেই ম্যাচে ৭৪৩ বল খেলে করেছিলেন ৩১১ রান। তাঁর এই ইনিংসে ৬৫৬ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে পরে ম্যাচটি ড্র হয়ে যায়।

  • ডন ব্র্যাডম্যান (অস্ট্রেলিয়া): ৩৩৪ (লিডস, ১৯৩০)

এই তালিকায় দ্বিতীয় বারের মত জায়গা করে নিয়েছেন ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান। এর আগেও একবার অ্যাশেজে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন। তবে ১৯৩০ সালে লিডসে ছাড়িয়ে গেলেন সেটিকে।

সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ব্যাট হাতে করলেন ৩৩৪ রান। ৪৪৮ বলের এই ইনিংসটিতে ছিল ৪৬ টি বাউন্ডারি। অ্যাশেজে এটি তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংস। এছাড়া তাঁর ক্যারিয়ারে ৩৩৪ রানের একটি ইনিংসও আছে।

  • লেন হটন (ইংল্যান্ড): ৩৬৪ (দ্য ওভাল, ১৯৩৮)

এই তালিকায় ইংল্যান্ডের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন স্যার লেন হটন। অ্যাশেজের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ইনিংসটিও এসেছে তাঁর ব্যাট থেকেই। ইংল্যান্ডের হয়ে মোট ৭৯ টি টেস্টে এই ব্যাটসম্যান রান করেছিলেন ৫৬.৬৭ গড়ে।

১৯৩৮ সালে দ্য ওভালে বিখ্যাত সেই ইনিংসটি খেলেছিলেন লেন হটন। কিংবদন্তি এই ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে সেই ম্যাচে এসেছিল ৩৬৪ রানের বিশাল এক ইনিংস। তাঁর এই ইনিংসে চড়ে ইংল্যান্ড করেছিল মোট ৯০৩ রান।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link