আইপিএলের প্রায় প্রতি মৌসুমেই হাইস্কোরিং সব ম্যাচ দেখেছে গোটাবিশ্ব। কখনো অতিমানবীয় সব ইনিংস, আবার কখনো দলীয় প্রচেষ্টা দলকে পৌঁছে দিয়েছে রানপাহাড়ে। আসুন দেখে নেয়া যাক আইপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ পাঁচ দলীয় সংগ্রহ।
- কলকাতা নাইট রাইডার্স (২৪৫/৬)- ২০১৮
২০১৮ মৌসুমে সেবার ইন্দোরে টুর্নামেন্টে টিকে থাকার ম্যাচে পাঞ্জাবের মুখোমুখি হয়েছিল কলকাতা। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে সুনীল নারাইনের ৩৬ বলে ৭৫ রানের ইনিংসে উড়ন্ত সূচনা পায় কলকাতা।
এরপর নারাইনের গড়ে দেয়া ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে বাকি কাজটা সারেন আন্দ্রে রাসেল এবং দীনেশ কার্তিক। রাসেল ১৪ বলে ৩১ রানে ফিরলেও অধিনায়ক কার্তিক খেলেছেন ২৩ বলে ৫০ রানের মারকুটে এক ইনিংস। ছোট কিন্তু কার্যকরী সব ঝড়ো ইনিংসের সুবাদেই ২৪৫ রানের বড় সংগ্রহ পায় কলকাতা।
জবাব দিতে নেমে লোকেশ রাহুল ২৯ বলে ৬৬ রানের ইনিংস খেললেও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় ম্যাচ জেতা হয়নি স্বাগতিক পাঞ্জাবের। ব্যাটিংয়ে আলো ছড়ানোর পাশাপাশি বল হাতেও তিন উইকেট শিকার করেন রাসেল।
- চেন্নাই সুপার কিংস (২৪৬/৫)- ২০১০
২০১০ আইপিএল মৌসুমে ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগছিলো মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। তবে সেবারে ঘরের মাঠে মুরালি বিজয় খেলেছিলেন আইপিএল ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ইনিংস।
শুরুর ঝড়ে সবাই ভেবেছিল চেন্নাই হয়তো দুইশো রানের লড়াকু সংগ্রহ পাবে। কিন্তু বিজয়ের পাশাপাশি আলবি মরকেলের ৩৪ বলে ৬২ রানের ইনিংসে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় রাজস্থান। অন্যদিকে বিজয় খেলেন ৫৬ বলে ১২৭ রানের অনবদ্য এক ইনিংস।
জবাব দিতে নেমে নমন ওঝার ক্যারিয়ার সেরা ৯৪ রানে ভর করে ভালোই এগোচ্ছিল রাজস্থান। যদিও জয় থেকে ২৩ রান দূরে থাকতেই থামতে হয় তাঁদেরকে।
- রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু (২৪৮/৩)- ২০১৬
রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর ঘরের মাঠ চেন্নাস্বামী স্টেডিয়াম বরাবরই রানপ্রসবা। তবে ২০১৬ আইপিএলে গুজরাট লায়ন্সের বিপক্ষে বিরাট কোহলি এবং এবি ডি ভিলিয়ার্স মিলে গড়েছিলেন টি টোয়েন্টি ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা জুটি।
মাত্র ১৯ রানে গেইল সাজঘরে ফেরায় শুরুটা ভালো হয়নি ব্যাঙ্গালুরুর। কিন্তু কে জানতো পরের দেড় ঘন্টায় সে আউটই যেন শাপেবর হয়ে দাঁড়াবে তাঁদের জন্য! কোহলি এবং ডি ভিলিয়ার্স দুজনে মিলে যেন প্রতিপক্ষের বোলারদের উপর স্টিমরোলার চালান।
কোহলির ৫৫ বলে ১০৯ রানের ইনিংসের বিপরীতে ডি ভিলিয়ার্স খেলেন ৫২ বলে অপরাজিত ১২৯ রানের ইনিংস। তাঁদের ২২৯ রানের জুটি সকল টি টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ব্যাঙ্গালুরুর ২৪৮ রানের জবাব দিতে নেমে মাত্র ১০৪ রানেই গুটিয়ে যায় গুজরাট।
- লখনৌ সুপার জায়ান্টস (২৫৭/৫)- ২০২৩
২০২৩ আইপিএলের পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে আইপিএল ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে লখনৌ সুপার জায়ান্টস। তাঁদের এই দলীয় সংগ্রহে ব্যক্তিগত অতিমানবীয় ইনিংস না থাকলেও দলের প্রত্যেকেই ইম্প্যাক্টফুল সব ইনিংস উপহার দিয়েছেন।
কাইল মেয়ার্স ২৪ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলে পরবর্তী ব্যাটারদের জন্য সৌধটা নির্মাণ করে যান। তাঁর গড়ে দেয়া ভীতের উপর দাঁড়িয়ে রীতিমতো ধবংসযজ্ঞ চালান মার্কাস স্টোয়িনিস, আয়ুশ বাদোনি, নিকোলাস পুরানরা। এই ম্যাচেই আইপিএল ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪১টি বাউন্ডারি হাঁকানোর রেকর্ড গড়েন লখনৌর ব্যাটাররা। জবাব দিতে নেমে ২০১ রানেই থামে পাঞ্জাব কিংসের ইনিংস।
- রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু (২৬৩/৫)- ২০১৩
২০১৩ আইপিএলে পুনে ওয়ারিহর্স ইন্ডিয়ার বিপক্ষে ব্যাঙ্গালুরুর সেই ম্যাচটাকে সবাই মনে রেখেছেন ক্রিস গেইলের ম্যাচ হিসেবেই। এই বাঁহাতি ব্যাটার যেন উল্টেপাল্টে দিয়েছিলেন টি টোয়েন্টির রেকর্ডবুক।
মাত্র ৩০ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন এই ক্যারিবীয় তারকা। একপর্যায়ে তো মনে হচ্ছিল ডাবল সেঞ্চুরিও অসম্ভব নয় তাঁর জন্য। কিন্তু শেষদিকে খানিকটা ধীর হয়ে পড়ায় ৬৬ বলে ১৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
আটটি চারের পাশাপাশি এগারোটি ছক্কা হাঁকান এই ক্যারিবীয় তারকা। এছাড়া শেষদিকে নেমে আট বলে ৩১ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। আইপিএল ইতিহাসে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটাই।জবাব দিতে নেমে ১৩৩ রানের বেশি এগোতে পারেনি পুনে।