গল টাইটান্সের হলুদ জার্সিতে সাকিব আল হাসান যখন মাঠের নামার অপেক্ষায়, ক্যারিয়ারে ৮০০ ম্যাচ খেলার মাইলফলক তখন তার দরজায় কড়া নাড়ছিল। জাফনা কিংসের বিপক্ষে মাঠের ঘাস সাকিবের বুটের ছোঁয়া পেতেই মর্যাদার সেই ক্লাবে ঢুকে পড়লেন তিনি; বাংলাদেশের রেকর্ড বয়ের ঝুলিতে যুক্ত হয়েছিল নতুন রেকর্ডের পালক।
তবে আটশত ম্যাচকে রঙিন করে রাখতে পারেননি সাকিব আল হাসান, উল্টো তাঁকে হটিয়ে লাইমলাইট দখল করেছেন আরেক বাংলাদেশী তাওহীদ হৃদয়। জাফনা কিংসের বিশাল জয়ে শুধু অবদানই রাখেননি তিনি, সাকিবের বোলিংকে একরকম তুলোধুনো করেছেন। মজাচ্ছলে বলাই যায়, রেকর্ড গড়ার দিনে সাকিবকে চার আর ছয় উপহার দিয়েছেন এই তরুণ।
অন্য বোলারদেরও ছাড় দেননি তাওহীদ হৃদয়। সবমিলিয়ে করেছেন ২৩ বলে ৪৪ রান; রীতিমতো টর্নেডো ইনিংস বলা যায়। বিশেষ করে বাংলাদেশের কোন ব্যাটার এত সহজে ছয় হাঁকাতে পারেন সেটা তাওহীদকে না দেখলে হয়তো বোঝা যেত না; পুরো ইনিংসে ৪টি বিশাল ছয় হাঁকিয়েছেন তিনি। এছাড়া তাঁর স্ট্রাইক রোটেশনের সক্ষমতা আর গেমসেন্স আরো একবার মোহিত করেছে লঙ্কান দর্শকদের।
ম্যাচের প্রথম ভাগে ব্যাট হাতে করেছেন মাত্র ছয় রান; এমনকি ছিল না কোন বাউন্ডারির মার। সুযোগ ছিল রয়ে সয়ে খেলে দলকে ভাল অবস্থানে এনে দেয়ার, কিন্তু সেটা পারেননি তিনি। গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ কিংবা এলপিএলে ধারাবাহিক রান পাওয়া সাকিব শেষ ছয় ম্যাচে পাঁচবারই অন্তত বিশ রান করেছিলেন, তবে আজকে দুই অঙ্কের ঘরেও যেতে পারেননি।
যদিও এদিন পুরো গল টাইটান্সই খাবি খেয়েছে প্রতিপক্ষের বোলারদের বিপক্ষে; বিশেষ করে দুনিথ ওয়েল্লালেগের কোন জবাব ছিল না সেইফার্টদের কাছে। ৪ ওভারের স্পেলে স্রেফ দশ রান খরচ করে এই স্পিনার তুলে নিয়েছেন চারটি উইকেট। দাসুন শানাকা কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁর ৩০ রানে ভর করে শেষপর্যন্ত ১১৭ রানের পুঁজি পেয়েছে দলটি।
ব্যাটিংয়ল সুবিধা করতে না পারলে বোলিংয়ে ঠিকই পুষিয়ে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। প্রথম ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠিয়েছেন চারিথ আসালঙ্কাকে। কিন্তু নিজের দ্বিতীয় ওভারে রহমানউল্লাহ গুরবাজ আর তাওহীদ হৃদয়ের তোপে মুখে পড়তে হয় তাঁকে, সে ওভারে ১৭ রান খরচ করে বসেন।
দশম ওভারে পুনরায় বোলিং এসে ছয় রান দিয়েছেন সাকিব আল হাসান, ততক্ষণে অবশ্য ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছে গল টাইটান্স। কিন্তু সাকিব ঠিকই চালিয়ে গিয়েছেন আঁটসাঁট বোলিং। ব্যক্তিগত শেষ ওভারে সেট ব্যাটার গুরবাজকে আউট করেছেন। শেষপর্যন্ত সাকিবের বোলিং ফিগার ছিল ৪-০-৩১-২; ম্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনায় এমন পারফরম্যান্স ছোট করে দেখার সুযোগ কই।
৪৪ বল আর ৮ উইকেট হাতে রেখে জয় পেয়েছে জাফনা কিংস, মন খারাপ হতেই পারে গল টাইটান্সের ভক্তদের। তবে বাংলাদেশীরা নিশ্চিত আনন্দে ভাসছে, কেননা দুই দলের দুই টাইগারই ছিলেন সেরা পারফর্মার৷