সায়িম আইয়ুব যদি চান তবে কি তাঁর ব্যাট কথা বলতে শুরু করবে? অবাস্তব প্রশ্ন মনে হতেই পারে, তবে একেবারে যে অবান্তর তা কিন্তু নয়। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি যেভাবে পারফরম করে চলছেন তাতে মনে হতেই পারে যে কাঠের উইলোটা বোধহয় তাঁর আজ্ঞাবহ দাস। ঠিক যেভাবে চাইছেন সেভাবেই সবকিছু হচ্ছে – আর সেজন্যই প্রশ্ন জাগে তিনি কথা বলতে বললে ব্যাটও কি কথা বলবে?
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলতি সিরিজের কথাই ধরা যাক, প্রথম ওয়ানডেতেই এই তরুণ আদায় করেন সেঞ্চুরি। সতীর্থ ব্যাটারদের ব্যর্থতার মাঝেও তিনি ছিলেন উজ্জ্বল, তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ১১৯ বলে ১০৯ রান। যা কি না দলের রানের প্রায় অর্ধেক।
দ্বিতীয় ম্যাচে সেট হয়ে অবশ্য বড় রান করতে পারেননি এই বাঁ-হাতি। আউট হয়ে গিয়েছিলেন দ্রুতই, তবে সেটার শোধ তুললেন পরের ম্যাচেই। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন তিনি একাই, করেছেন ৯৪ বলে ১০১ রান। শতক হাঁকানোকে ছেলের হাতের মোয়া বানিয়ে ফেলেছেন বোধহয়।
আকাশসম প্রত্যাশা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছিলেন সায়িম; তাঁর ব্যাটিংয়ের স্টাইল, টেকনিক সবকিছুতেই ছিল আভিজাত্যের ছাপ। কিন্তু শুরুটা কেন যেন মনমতো হয়নি; প্রত্যাশার চাপে উল্টো কুঁকড়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে টিম ম্যানেজম্যান্টের ভরসার হাত কখনো সরেনি তাঁর কাঁধ থেকে। আর সেটাই কলি থেকে ফুল হয়ে উঠার সুযোগ করে দিয়েছে তাঁকে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পারফরম করেই রানে ফিরেছিলেন এই ওপেনার। এরপর জিম্বাবুয়ে আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই ফর্মের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন তিনি। ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে শেষ বারো ইনিংসে তিনি ত্রিশের নিচে আউট হয়েছেন মাত্র তিনবার – আর পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলেছেন পাঁচটা!
সাঈদ আনোয়ারের পর থেকে পাকিস্তান সেই অর্থে বিশ্বমানের ওপেনার পায়নি। স্টাইলিশ ব্যাটিং আর ধারাবাহিকতার অপূর্ব মিশেল কারো মধ্যে দেখা যায়নি – সায়িম আইয়ুব হয়তো সেই অভাবটা মিটিয়ে দিতে এসেছেন। তাঁর উদয় তো সেই বার্তাই দেয়, এখন কেবল পূর্ণ যৌবনা হয়ে উঠা বাকি।