রমিজের ভাগ্য ঝুলছে!

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পিসিবির প্যাট্রন ইন চিফ হিসেবে বিবেচিত হন। পাকিস্তান ক্রিকেট গভর্নিং বোর্ডের দুইজন সদস্যকে নির্বাচন করা হয় সরকার থেকে। সেখান থেকে ভোটের মাধ্যমে একজন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। অবশ্য সরকার চাইলেই রমিজকে সরাতে পারবেন না। এর জন্য প্রয়োজন গভর্নিং বোর্ডের অনাস্থা ভোট। চার ভাগের তিন ভাগ অনাস্থা ভোট হলেই বিদায় নিতে হবে পিসিবি চেয়ারম্যানকে।

সপ্তাহখানেক আগেই অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে সাবেক বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খানকে। ১৯৯২ এর বিশ্বকাপে ইমরানের নেতৃত্বেই প্রথমবার বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করে পাকিস্তান। সেবার ইমরানের অধীনেই খেলেছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) বর্তমান চেয়ারম্যান রমিজ রাজা। তাই দু’জনের মধ্যে সম্পর্কটা বন্ধুর মতই। ইমরানের বিদায়ে শঙ্কা জেগেছে রমিজের পদ নিয়েও।

পিসিবির চেয়ারম্যান পদ থেকে রমিজ সরে দাঁড়াবেন এমনটাই ছিল গুঞ্জন। ইমরান খানের কাছের মানুষ হওয়ায় পদ না ছাড়লেও রমিজ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাবেন সেটা অনেকটাই নিশ্চিত। কারণ ইমরানের খানের ইচ্ছেতেই গেল বছর পিসিবির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান রমিজ রাজা। অবশ্য পাকিস্তান ক্রিকেটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে পাকিস্তানের নতুন সরকার চায় পিসিবির চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকবেন রমিজ!

যদিও এখনও গুঞ্জন রয়েছে রমিজ রাজার দায়িত্ব শেষের দিকেই। পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের কাছের লোকজন চাচ্ছেন রমিজকে সরিয়ে ওই পদে নতুন কাউকে নিয়োগ দিতে। বেশ কিছু নামের মাঝে জোড়ালো ভাবে শোনা যাচ্ছে সাবেক পিসিবি চেয়ারম্যান ও শরীফ পরিবারের সদস্য নাজম শেঠি আবারও নিয়োগ পেতে পারেন পিসিবি চেয়ারম্যান হিসেবে।

যদিও এই ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। তবে ক্রিকেটের উন্নয়ের স্বার্থে রমিজ রাজাকেই পিসিবির চেয়ারম্যান পদে বহাল রাখতে চায় নতুন সরকার এমনটাই জানা গেছে পাকিস্তানের গণমাধ্যমগুলোতে। সবশেষ গেল সপ্তাহে দুবাইতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) বার্ষিক এক সভায় চার জাতি টুর্নামেন্ট আয়োজনের ব্যাপারে প্রস্তাব রাখেন রমিজ। যদিও আইসিসি সেটি প্রত্যাখান করে।

পিসিবির বোর্ড সদস্যদের অনেকেই নতুন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন পূর্বের মত করে ঘরোয়া ক্রিকেট পরিচালনার কথা। প্রদেশভিত্তিক ভাগ হয়ে টুর্নামেন্ট আয়োজনের। সেই সাথে ঘরোয়া ক্রিকেটের উন্নতিও চায় পিসিবির বর্তমান বোর্ড। রমিজ অবশ্য সে নিয়ে কাজ করছেন দীর্ঘ সময় ধরেই। নিয়েছেন বেশ কিছু পদক্ষেপও।

অপরদিকে, পাকিস্তান ক্রিকেটের উন্নতি চান শাহবাজ শরীফের সরকার এমনটাই শোনা যাচ্ছে পাকিস্তানের গণমাধ্যমের দ্বারা। আর রমিজের অধীনে এসেছে পাকিস্তান ক্রিকেটের ব্যাপক পরিবর্তন। এমনকি জুনিয়র ক্রিকেটারদের নিয়ে একটি টি-টোয়েন্টি লিগ আয়োজনের ব্যাপারেও ইমরান খানকে জানিয়েছিলেন রমিজ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পিসিবির প্যাট্রন ইন চিফ হিসেবে বিবেচিত হন। পাকিস্তান ক্রিকেট গভর্নিং বোর্ডের দুইজন সদস্যকে নির্বাচন করা হয় সরকার থেকে। সেখান থেকে ভোটের মাধ্যমে একজন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। অবশ্য সরকার চাইলেই রমিজকে সরাতে পারবেন না। এর জন্য প্রয়োজন গভর্নিং বোর্ডের অনাস্থা ভোট। চার ভাগের তিন ভাগ অনাস্থা ভোট হলেই বিদায় নিতে হবে পিসিবি চেয়ারম্যানকে।

এছাড়া পিসিবি চেয়ারম্যান নিজ থেকে পদত্যাগ করলে পরবর্তী চেয়ারম্যানকে নিয়ম অনুযায়ী ভোটের মাধ্যমে আবার নির্বাচিত করা যাবে। ২০১৮ সালে ইমরান খানের সরকার আসার পর শেঠি নিজে পদত্যাগ করে এহসান মানিকে পিসিবির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিতে সহজ করে দিয়েছিলেন!

তবে ২০১৪ সালে সরকার পরিবর্তনের পর তৎকালীন পিসিবি চেয়ারম্যান জাকা আশরাফ পদত্যাগ করতে অনীহা প্রকাশ করেন। ফলস্বরূপ তৎকালীন পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ নতুন একটি ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করে আশরাফকে সরিয়ে শেঠিকে পিসিবি চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেন।

আপাতত তাই রমিজের ভাগ্য ঝুলছে নতুন সরকারের ওপরে। ইমরান খান অবশ্য রমিজকে উদ্দেশ্য করে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে আমার বন্ধু।’

এই লড়াইয়ে জয়টা কার হবে সেটা সময়ই বলে দিবে। তবে পূর্বের ঘটনায় স্পষ্ট যে সরকার না চাইলে পিসিবির চেয়ারম্যান পদ আকড়ে রাখতে পারবেন না রমিজ। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...