ভারতীয় আম্পায়াররা কেনো টেস্টে সুযোগ পান না, এই নিয়ে একটা হতাশা ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে লক্ষ করা যায়। শ্রীনিবাস বেঙ্কটরাঘবন ছাড়া ভারত থেকে সেরকম সফল আম্পায়ার গত ৩০ বছরে বেরোয়নি। আর বেঙ্কটরাঘবনের আম্পায়ারিংয়ের মানও প্রায়ই ছিলো তথৈবচ।
শেষের দিকে স্টিভ বাকনার যেমন খামখেয়ালি সিদ্ধান্তের জন্যে প্রসিদ্ধ ছিলেন, বেঙ্কটরাঘবন প্রায় পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই তাই। এরপর এসেছেন এস রবি। তিনি বেশ কিছুদিন এলিট প্যানেলে ছিলেন এবং শুরুর দিকে ভালো আম্পায়ারিং করেওছেন। কিন্তু আস্তে আস্তে তিনিও ধারাবাহিকতা ও ছন্দ হারান। আমীষ সাহেবা, হরিহরণ-ইত্যাদি অনেক নাম কিছুদিনের জন্যে থেকেছেন, কিন্তু অচিরেই তাঁরাও হারিয়ে গিয়েছেন মধ্যমেধার অতল গহ্বরে।
পিলু রিপোর্টার ও রামস্বামী বেশ কিছুদিন সম্মানের সাথে আম্পায়ারিং করেছেন, কিন্তু কেউ যদি বলেন, তাঁরা খুব উচ্চমানের আম্পায়ার ছিলেন, আমি একমত হতে পারবো না। আর বর্তমানে ভারতীয় আম্পায়ারদের মান যে কতটা খারাপ তার প্রমাণ পেলাম ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে।
ঘূর্ণি পিচে আম্পায়ারিং করা সহজ নয়। বিশেষত রাহানের যে আউট নিয়ে আজ ইংল্যান্ড আজ অমন মাথা ফাটাফাটি করলো সেরকম সিদ্ধান্ত। মাঠের আম্পায়ারের ভুল হতেই পারে। কিন্তু প্রশ্নটা সেখানে নয়। প্রশ্নটা হলো, টেলিভিশন আম্পায়ার কি করছিলেন? প্রথমে আসি রোহিত শর্মার স্ট্যাম্পিং বিষয়ে। বর্তমান যুগে ঋদ্ধিমান সাহার সাথে উইকেটরক্ষার মামলায় যুগ্ম বিজয়ী হবেন বেন ফোকস।
তা ঐরকম তড়িৎ গতির স্ট্যাম্পিং করার পর স্বভাবতই তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এবং তার যথেষ্ট কারণ ছিল। তা লেগ আম্পায়ার যথারীতি সেটা পাঠালেন অনিল চৌধুরীর কাছে। আর মাত্র দুটো অ্যাঙ্গেল দেখেই তিনি বেন ফোকসের গ্লাভসের গতিতেই নট আউট ঘোষণা করে দিলেন। সিদ্ধান্তটা সঠিক না বেঠিক সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হলো, প্রক্রিয়াটি।
এবার আসা যাক, রোহিত শর্মার মুম্বাইকর বন্ধু আজিঙ্কা রাহানের বিতর্কিত ক্যাচ বিষয়ে। ঘূর্ণি পিচে, এবং যেখানে এমন অহরহ বাউন্স পাওয়া যাচ্ছে, আগেই বলেছি এমন সিদ্ধান্ত দেয়া একজন অন-ফিল্ড আম্পায়ারের পক্ষে সহজ নয়। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে যেখানে সবরকম রিপ্লে দেখার সুযোগ আছে, সেখানে তিনি শুধুমাত্র ব্যাটপ্যাড অবধি আলট্রা এজ দেখেই ক্যাচ আউট নাকচ করে দিলেন।
এরপরেও যে বল বাউন্স করে রাহানের হাতে লেগে ক্যাচ আউট হতে পারে, সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন। ব্যক্তিগত মতামত, কাল ইংল্যান্ডকে তাদের এই রিভিউ ফিরিয়ে দেয়া উচিত। আর এটাও দেখে ভালো লাগলো যে, স্টার টিভি ধারাভাষ্যকারদের এটা নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ অনর্গল আলোচনা করতে দিল। এটা শাকুর রানার জমানা নয়। কোভিড না থাকলে নির্দলীয় আম্পায়াররাই থাকতেন। কিন্তু সেই রানা-গ্যাটিং দ্বৈরথের পর ৩৪ বছর কেটে গেলেও, ভারতীয় আম্পায়ারদের আম্পায়ারিং মান সেই একই জায়গায় রয়ে গেলো।