বোর্ডার – গাভাস্কার ট্রফির তৃতীয় টেস্টও ফুরিয়েছে তিন দিনেই। তবে মূল চমকটা এসেছে ম্যাচের ফলাফলে! রীতিমতো ধবংসস্তুপ থেকে ফিনিক্স পাখির ন্যায় ঘুরে দাঁড়িয়ে তৃতীয় টেস্ট জিতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়ানরা। তাতে করেই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে নিজেদের জায়গা পাকা করে নিয়েছে প্যাট কামিন্সের দল। অন্যদিকে ভারতের ভাগ্য এখন ঝুলছে খানিকটা আশা – নিরাশার দোলাচলে।
ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার জয়টা এসেছে দাপুটে ক্রিকেট খেলেই। ম্যাচে ভারতকে রীতিমতো কোনো সুযোগই দেননি অজি বোলাররা। তাঁদের ঘূর্ণি তোপে চতুর্থ ইনিংসে মাত্র ৭৬ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় স্বাগতিকরা।
পরবর্তীতে মারনাস লাবুশেইন এবং ট্রাভিড হেডের ব্যাটে ভর করে নয় উইকেটের বড় জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। এ ম্যাচে অবশ্য ছিলেন না তাঁদের নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, তাঁর বদলি হিসেবে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন ডেপুটি স্টিভেন স্মিথ।
ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২-০ ব্যবধানে হারানোর পর অজিদের ফাইনালের সমীকরণ ছিল সোজা। ভারতের মাটিতে ন্যূনতম এক ম্যাচে হার এড়াও আর ফাইনালের নিশ্চিত করো। কিন্তু নাগপুরে ইনিংস এবং ১৩২ রানে হারের পর দিল্লিতেও ছয় উইকেটের হারে অসহায় আত্নসমর্পন করে সফরকারীরা।
মনের ঈশাণ কোণে তখন বারবার উঁকি দিয়ে যাচ্ছিলো অজিদের বিদায়ের সম্ভবনা। কিন্তু আরো একবার খাদের কিনারা থেকে ফিরলো অজিরা। ফিরলো নিজেদের সেরা ক্রিকেটটা খেলেই।
অন্যদিকে এই হারে খানিকটা বিদায়ের সম্ভাবনা উঁকি দিয়েছে ভারতীয় শিবিরে। যদিও এখনো ভাগ্যটা নিজেদের হাতেই রয়েছে রোহিত শর্মার দলের। চতুর্থ টেস্টে জয় পেলেই কোনো রকম নাটকীয়তা ছাড়াই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু হেরে গেলেই তাকিয়ে থাকতে হবে শ্রীলংকা বনাম নিউজিল্যান্ড সিরিজের দিকে। সেই সিরিজে লংকানরা ২-০ ব্যবধানে জিততে পারলে ভারত নয় বরং তাঁরাই উঠবে ফাইনালে।
বর্তমানে ১৭ টেস্টে ৬০.২৯ শতাংশ জয়ের হার এবং ১২৩ পয়েন্ট পেয়েছে ভারত। যদি শেষ টেস্ট জিততে পারে রোহিত শর্মার দল, সেক্ষেত্রে তাঁদের জয়ে হার গিয়ে দাঁড়াবে ৬২.৫ শতাংশে। সেক্ষেত্রে কোনোভাবেই ভারতকে পেছনে ফেলতে পারবে না শ্রীলংকা, পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থেকে ফাইনালে খেলবে ভারত।
কিন্তু হেরে গেলেই যত গোলমাল, তখন আর ভাগ্যটা নিজেদের হাতে থাকবে না। ভারত হেরে গেলে তাঁদের জয়ের হার কমে গিয়ে দাঁড়াবে ৫৮.৭৯ শতাংশে, অন্যদিকে ড্র করলে সেটা হবে ৫৯.৭২ শতাংশ। সেক্ষেত্রে তাঁদেরকে ভাগ্যের উপর ভরসা করা ছাড়া উপায় থাকবে না।
লংকানদের অবশ্য ফাইনালে উঠতে হলে কিউইদের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের বিকল্প নেই। ভারত ড্র কিংবা হারলে এবং তাঁরা নিজেদের কাজটা ঠিকমতো করতে পারলে তাঁদের জয়ের হার দাঁড়াবে ৬১.১১ শতাংশে। তখন সবাইকে চমকে দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থেকে শেষ করবে দিমুথ করুণারত্নের দল।
তবে লংকানরা যদি ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতে কিংবা ড্র করে, সেক্ষেত্রে ফাইনালে যাবে ভারতই। রোহিত শর্মারা অবশ্য এতসব সমীকরণে যেতে চাইবেন না, শেষ টেস্ট জিতেই নিশ্চিত করতে চাইবেন ফাইনালটা। কিন্তু তৃতীয় টেস্ট জিতে আত্নবিশ্বাসে টইটম্বুর অজিদের বিপক্ষে কাজটা সহজ হবে না মোটেই।