টপ অর্ডারের বিপর্যয়ের কারণে বাংলাদেশ দল তখন ধুঁকছিল, ভরসা হয়ে তখনও ক্রিজে ছিলেন দলের মোস্ট ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিম। কিন্তু জাসপ্রিত বুমরাহর আউটসুইং ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারেননি, বল তাঁর ব্যাট ছুঁয়ে উড়ে গেল স্লিপ কর্ডনের দিকে। এরপর কি হলো, একটা বাজপাখি নেমে এলো যেন মাঠে; অবিশ্বাস্য রিফ্লেক্সে ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচ লুফে নিলেন লোকেশ রাহুল।
উইকেটকিপার হওয়াতেই বোধহয় রাহুলের রিফ্লেক্স আর উইকেটের পিছনে ফিল্ডিংয়ের দক্ষতা দুর্দান্ত মানের। সেটারই একটা হাইলাইট হয়ে রইলো মুশফিকের এই কোচ। তবে স্রেফ তাঁর দক্ষতা নয়, এই ক্যাচ জয়ের প্রতি কতটা ক্ষুধার্ত টিম ইন্ডিয়া সেটাই ফুটিয়ে তুলেছে।
শুধু কি রাহুল, স্লিপ কর্ডনে দাঁড়ানো প্রতিটা ফিল্ডার এদিন নিজেকে সাধনায় উৎসর্গ করেছিলেন বোধহয়। কখনও তিনজন, কখনও চারজন দল বেঁধে চাপ বাড়িয়েছেন বাংলাদেশের ওপর।
মুশফিক আউট হওয়ার একটু আগেই অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ক্যাচ দিয়েছিলেন সেকেন্ড স্লিপে। অভিজ্ঞ বিরাট কোহলি একটুও ভুল করেননি, হাসান মাহমুদের ক্যাচটাও তিনি নিয়েছেন স্লিপে দাঁড়িয়ে। অর্থাৎ বাংলাদেশ যতবারই সুযোগ দিয়েছে স্ট্যাম্পের পিছনে ততবারই হিংস্র বাঘের মত সেটা লুফে নিয়েছে টিম ইন্ডিয়া।
দুই একটা হাফচান্স মিস হয়নি, এমন কিন্তু না – এই যেমন শুভমান গিলের ঠিক সামনে পড়েছিল একটা ক্যাচ। কিন্তু পুরো ইনিংস জুড়ে ফিল্ডাররা যে নিবেদন দেখিয়েছেন স্লিপে সেটা প্রশংসনীয়। তাঁরা আগ্রাসন দেখিয়েছেন, তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেছেন বোলারদের দাপট সেটাও ব্যাটারদের মনস্তাত্ত্বিকভাবে পিছিয়ে দিয়েছে। স্লিপ পজিশনকে ঘিরে আলাদা পরিকল্পনা করার জন্য অধিনায়ক রোহিতের প্রশংসাও করতে হয়।
বলা হয়, ক্যাচেস উইন ম্যাচেস। আর টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচিং পজিশন স্লিপ। ভারতও এগিয়ে গিয়েছে ঠিক এখানটায়, বোলাররা স্লিপের ভাবনা মাথা রেখেই বোলিং করেছেন, সতীর্থরাও তাঁদের কাজটুকু করেছেন। স্লিপ ফিল্ডিংয়ে অনভ্যস্ত বাংলাদেশীদের সঙ্গে তাঁদের ব্যবধান তৈরি হয়েছে এভাবেই।