‘বিশ্বকাপ নিয়ে বেশি প্রত্যাশা করার দরকার নেই’। নাজমুল হোসেন শান্তর বলা এই কথা গুলো মেনে নিয়েছে দর্শকরা। পাগলাটে সমর্থকরাও মেনে নিয়েছে যে এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভাল করবার সম্ভাবনা নেই। সমস্যাটা হচ্ছে খোদ বাংলাদেশ দলও যেন তেমনটিই মেনে নিয়েছে।
অবশ্য মেনে নেওয়া ছাড়া যে উপায় খুব বেশি নেই। দলের টপ অর্ডার অফ-ফর্মের যাতাকলে পৃষ্ঠ। বোলারদের মধ্যেও নেই তেমন কোন লড়াকু মনোভাব। আত্মবিশ্বাস একেবারে তলানীতে। এর পেছনের কারণ সম্ভবত দলের অভ্যন্তরীণ যাচ্ছেতাই পরিস্থিতি।
বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ বেজায় বাজে। একজন আরেকজনের সাথে ঠিকঠাক কথাও বলেন না অনেকে। দলের ভেতর গ্রুপিং যেন ওপেন সিক্রেট। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে খুব কাছ থেকে দেখা অধিকাংশ মানুষের ভাষ্যই প্রায় এক। তারা আবার বোর্ড সংশ্লিষ্টও বটে।
একটা দলের ভেতরকার পরিবেশ যখন সৌহার্দ্যপূর্ণ না হবে তখন সে বিষয়ের প্রতিফলন দেখা যাবে মাঠে। পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে তারা হয়ত খেলতে নামছেন। কিন্তু পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে নিজের মধ্যকার কোন্দল বা অভিমানকে দূরে ঠেলে দিতে পারছেন না।
দলের অন্দরমহলের পরিবেশ নিয়ে সাম্প্রতিক জলঘোলা হয়েছে তাওহীদ হৃদয়ের ফেসবুক পোস্টকে ঘিরে। স্বনামধন্য এক ক্রিকেট সামগ্রী প্রতিষ্ঠান পৃষ্ঠপোষকতা করেছে হৃদয়ের সঙ্গে। তাতে উৎফুল্ল হয়ে হৃদয় স্পন্সর করা ব্যাট-প্যাড নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
আর পোস্টের বার্তায় তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন দলের বাইরে থাকা তামিম ইকবালকে। কিছুক্ষণ বাদে তিনি সে পোস্ট ডিলিট করে দেওয়ায় বাংলাদেশ দলের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে প্রভাব বিস্তার করা গ্রুপিং ইস্যু।
ঠিক সে কারণেই যেন বাংলাদেশ দল একটা দল হয়ে মাঠে নামতে পারছে না। জয়ের স্পৃহা কোথাও একটা মলিন হয়ে আছে। চাইলেও অফ-ফর্ম থেকে বেড়িয়ে আসতে পারছেন না কেউ কেউ। মাথার ভেতরে আবর্জনার মত করে অবস্থান নিয়েছে ‘ইন্টার্নাল পলিটিক্স’। কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে যেন সকলকেই।
নাজমুল হোসেন শান্ত সম্ভবত আগেভাগেই আন্দাজ করতে পেরেছিলেন বিষয়টি। বোর্ড কর্তারাও তো অবহিত এই বিষয়গুলো নিয়ে। তাইতো তারা ফলাও করে সাফল্য প্রত্যাশার বাণী দেননি ছড়িয়ে। আর যাই হোক মেলবন্ধন না থাকলে অন্তত যুদ্ধ জয় করা যায় না। নতুবা নবাব সিরাজউদ্দৌলাও সিংহাসনচ্যুত হতেন না। অবশ্য বাংলাদেশ দল সিংহাসন থেকে রয়েছে যোজন যোজন দূরে।