আইপিএলের বেশিরভাগ দলগুলোই নিজেদের খেলোয়াড় গুছিয়ে নিয়েছে আগের নিলামেই। তবুও এবারের মিনি নিলামে দলগুলো চাইবে নিজেদের দুর্বলতা কাটিয়ে তুলতে। আসুন দেখে নেয়া যাক এবারের আইপিএল নিলামে সর্বোচ্চ দাম পেতে পারেন এমন কয়েকজন ক্রিকেটারকে।
- জেসন হোল্ডার
গত আইপিএল নিলামে বেশ অংকের দাম পেয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডার। লখ-নৌ সুপার জায়ান্টস তাঁকে দলে দলে ভিড়িয়েছিল ৮.৭৫ কোটি রুপিতে। কিন্তু নিজের দামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি এই অলরাউন্ডার। ফলে এবারের মিনি অকশনের আগে তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে দলটি।
৩১ বছর বয়সী হোল্ডার টি-টোয়েন্টিতে একজন কার্যকরী ক্রিকেটার। ব্যাট এবং বল দুই ভূমিকাতেই যেকোনো সময়ে ম্যাচের চিত্রনাট্য বদলে দেয়ার সামর্থ্য রাখেন এই তারকা। আইপিএলে এখনো পর্যন্ত ৩৮ ম্যাচ খেলে ১২৩ স্ট্রাইক রেটে সংগ্রহ করেছেন ২৪৭ রান। এছাড়া বল হাতে সংগ্রহ করেছেন ৪৯ উইকেট। ধারাবাহিকভাবে ভাল করতে না পারলেও নিজের দিনে একাই ম্যাচ জেতাতে জানেন এই তারকা।
- নিকোলাস পুরান
গত মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারদের মাঝে সর্বোচ্চ ১০.৭৫ কোটি রুপিতে নিকোলাস পুরানকে দলে ভিড়িয়েছিল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। টুর্নামেন্টে হায়দ্রাবাদ শেষের দিকে অবস্থান করলেও ব্যাট হাতে পুরান মন্দ করেননি। কিন্তু নতুন আসরকে সামনে রেখে নতুন করে দল সাজাতে চাওয়া হায়দ্রাবাদ তাই ছেড়ে দিয়েছে এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যানকে।
২০২২ সালে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন পুরান। এই বছরে ২৩ টি টোয়েন্টি খেলে ১৩০ স্ট্রাইকরেটে তাঁর সংগ্রহ ৫৮২ রান। সদ্য সমাপ্ত টি টেন লিগে হয়েছে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক।
এবারের আইপিএলের নিলামে তাই বেশ ভাল দাম পাওয়ার সম্ভাবনা আছে পুরানের। বিশেষ করে চেন্নাই সুপার কিংস নিশ্চিতভাবেই চাইবে পুরানকে নিজেদের দলে ভেড়াতে। মহেন্দ্র সিং ধোনি যে তাঁর ক্যারিয়ারের ইতি টানতে পারেন এবারের আইপিএল দিয়েই।
- ক্যামেরন গ্রিন
ভারতের বিপক্ষে অভিষেক সিরিজেই নিজের প্রতিভার জানান দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিন। তিন ম্যাচের সিরিজের দুই ম্যাচেই ওপেনিং এ নেমে করেছিলেন ঝড়ো ফিফটি। ইনিংসের শুরুতে নেমে মারকুটে ব্যাটিংয়ের সুনাম রয়েছে অজি এই তরুণের।
ভারতের স্পিননির্ভর পিচেও সমান সাবলীল গ্রিন। যুজবেন্দ্র চাহাল এবং আক্সার প্যাটেলের মত স্পিনারদের সীমানা ছাড়া করেছেন অবলীলায়। কেবল ব্যাটিং নয়, টি-টোয়েন্টিতে তাঁর মিডিয়াম পেসও দারুণ কার্যকরী। বিশেষ করে মাঝের ওভারগুলোতে তিনি হতে পারেন অধিনায়কের তুরুপের তাস। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ এবং পাঞ্জাব কিংসের মত দলগুলো তাঁর প্রতি আগ্রহী এমন গুঞ্জনই ভেসে বেড়াচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট পাড়ায়।
- বেন স্টোকস
বড় মঞ্চে জ্বলে ওঠার সুখ্যাতি রয়েছে ইংলিশ অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালেও অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংস খেলে দলকে শিরোপা জিতিয়েছেন। এছাড়া টেস্ট অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর থেকেই আরো দায়িত্বশীল স্টোকসের দেখা পেয়েছে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব।
ওডিয়াই থেকে অবসর নিয়ে ফেলায় স্টোকসের মূল মনোযোগ এখন টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে। আইপিএলেও তাঁর রেকর্ডটা ঈর্ষণীয়, রাজস্থান রয়্যালস এবং রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টসের হয়ে ৯২০ রানের পাশাপাশি সংগ্রহ করেছেন ২৮ উইকেট।
মানসিক অবসাদে থাকায় গতবারের আইপিএল থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন স্টোকস। তবে এবারের আইপিএলে তাঁর প্রতি পাখির নজর রয়েছে বেশ কয়েকটি দলের। বিশেষ করে কিয়েরন পোলার্ডের বিকল্প খুঁজতে থাকা মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স নিশ্চিতভাবেই ঝাঁপাবে স্টোকসের জন্য।
- স্যাম কারেন
বর্তমানে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় নাম ইংলিশ অলরাউন্ডার স্যাম কারেন। বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে এক যুগ পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা ফিরিয়ে এনেছেন ইংরেজ মুলুকে । বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কারও জিতেছেন এই তারকাই।
ফাইনাল ম্যাচে ১২ রানে তিন উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের ব্যাটারদের দাঁড়াতেই দেননি। আইপিএলেও খেলার অভিজ্ঞতা আছে কুরানের। পাঞ্জাব কিংস এবং চেন্নাই সুপার কিংসের হয়েও মন্দ করেননি। কেবল বল হাতে নয়, শেষের দিকে নেমে বিস্ফোরক ইনিংস খেলার সামর্থ্য আছে তাঁর।
এবারের মিনি অকশনে কুরানের জন্য রীতিমতো লড়াই করতে হবে দলগুলোকে। যেকোনো দলই চাইবে তাঁর মত অলরাউন্ডারকে দলে ভেড়াতে।