এক আইপিএলেই তাঁদের দৌড় শেষ

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) প্রত্যেক বিভাগে দুর্দান্ত পারফর্ম করার সুবাদে বিভাগ প্রতি সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার দেয়। এর পাশাপাশি নতুন পারফর্মার যারা দুর্দান্ত পারফর্ম করে তাদেরকে দেয়া হয় এমার্জিং ক্রিকেটার অফ দ্যা ইয়ার পুরস্কার।

প্রত্যেক বছর কোনো না কোনো ক্রিকেটার ইমার্জিং ক্রিকেটারের পুরস্কার পায়। আইপিএলের মত আসরে যেসব ক্রিকেটার দুর্দান্ত পারফর্ম করে তারা জাতীয় দলের রাডারে চলে আসে বলেই ধরে নেওয়া হয়।

আইপিএল ইতিহাসে এমন অনেক ক্রিকেটার আছে যারা আইপিএলে ইমার্জিং ক্রিকেটারের পুরস্কার পেয়েছেন কিন্তু জাতীয় দলে সুযোগ পাননি। তারা এক মৌসুমেই চমক দেখাতে পেরেছেন।

এক মৌসুমে চমক দেখিয়ে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া যাবে না এটা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। যারা ইমার্জিং ক্রিকেটারের পুরস্কার পাবার পরও জাতীয় দলে সুযোগ পাননি তাদেরকে নিয়েই আজকের এই আয়োজন।

  • শ্রীবৎস গোস্বামী – ২০০৮

আইপিএলের প্রথম আসরের উদীয়মান তারকা ছিলেন শ্রীবৎস গোস্বামী। ২০০৮ সালে ভারতের যুব বিশ্বকাপ জয়ী দলে উইকেট কিপার ছিলেন শ্রীবৎস গোস্বামী। তিনি আইপিএলের প্রথম আসরে খেলেন রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে।

প্রথম আসরে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন এই বাঙালি ক্রিকেটার। কিন্তু এরপর আর দুর্দান্ত পারফর্ম করতে পারেননি। ঘরোয়া লিগে রাজ্য দল কিংবা পরবর্তীতে আইপিএলে কখনোই ভালো খেলতে পারেননি তিনি। এই কারণে আর জাতীয় দলে আসা হয় নাই শ্রীবৎস গোস্বামী।

  • সৌরভ তিওয়ারি – ২০১০

সৌরভ তিওয়ারি ছিলেন ভারতের ২০০৮ সালের অনূর্ধ্ব- ১৯ দলের বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য। ২০১০ সালে আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের হয়ে খেলেন তিনি। সেখানের দুর্দান্ত পারফর্ম করে উদীয়মান ক্রিকেটারের স্বীকৃতি অর্জন করেন। এর পর নিজ রাজ্যদল ঝাড়খন্ডের হয়ে ভালো পারফর্ম করতে পারেননি।

এরপর মুম্বাই থেকে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুতে পাড়ি জমান তিনি। সেখানে নিজের সেই আগের পারফর্মন্সে দেখাতে পারেননি। এছাড়াও তাঁর মধ্য ছিল ফিটনেসের সমস্যা। এর মধ্যেও জাতীয় দলের হয়ে স্বল্প সময়ের জন্য খেলেছিলেন তিনি। এরপর আর জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর আর জাতীয় দলে আসতে পারেননি তিনি। ২০২১ সালের আইপিএলে মুম্বাইয়ের হয়ে খেলেছিলেন সৌরভ তিওয়ারি।

  • বাসিল থাম্পি – ২০১৭

বাসিল থাম্পি আইপিএলের বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটার নির্বাচিত হন ২০১৭ সালে। এরপর থেকেই খারাপ সময়ের সূচনা হয় তাঁর ক্যারিয়ারে। এই কেরালা পেসার দেখিয়েছিলেন কিভাবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পেস বলে ভ্যারিয়েশন করতে হয়।

এছাড়া সব দুর্দান্ত ইয়র্কার দিতে পারতেন তিনি। আইপিএলের উদীয়মান ক্রিকেটার হবার পর থেকে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ বা কেরালা কোনো দলের হয়েই পারফর্ম করতে পারছেন না বাসিল থাম্পি।

  • ইকবাল আব্দুলাহ – ২০১১

ইকবাল আব্দুলাহ ছিলেন ভারতের ২০০৮ সালের অনূর্ধ্ব- ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য। ২০১১ সালে আইপিএলে খেলেছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) হয়ে। সেইবার কলকাতাকে আইপিএল জেতাতে ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।

তিনি বোলিংয়ের পাশাপাশি লোয়ার অর্ডারে ভালো ব্যাটিং কর‍তে পারেন। এই মুম্বাই ক্রিকেটার আইপিএলে কলকাতা ছাড়ার পর যোগ দেন ব্যাঙ্গালুরুতে। সেখানেও দুর্দান্ত পারফর্ম করেন কিছুদিন। এরপর আস্তে আস্তে হারিয়ে যাওয়ার সূচনা হয় তাঁর। এখন তিনি আর রাজ্য দল মুম্বাইতেও সুযোগ পান না।

  • মানদ্বীপ সিং – ২০১২

মানদ্বীপ সিংকে বিবেচনা করা হত তিনি ভারতের পরবর্তী ওপেনার। এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান বয়সভিত্তিক দলে থাকার সময় থেকে অন্যতম প্রতিভাবান হিসেবে বিবেচনা করা হত। আইপিএলে তাঁর শুরু কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে। তাঁর ওপেনিং সঙ্গী ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।

অনেক বারই পাঞ্জাবকে জয় এনে দিয়েছেন তিনি। মানদ্বীপ সিং আইপিএল থেকে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু পারফর্ম কর‍তে না পারার কারণে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। এখনো নিজের সেই আগের পারফর্মেন্স ফিরে পেতে লড়াই করছেন তিনি।

লেখক পরিচিতি

খেলাকে ভালোবেসে কি-বোর্ডেই ঝড় তুলি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link