বাজি ধরার মত একাদশ বাংলাদেশের, নাকি পুরনো শঙ্কার পুনরাবৃত্তি?

বাংলাদেশের একাদশ সত্যিই কি প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো? নাকি আবারও চেনা ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে?

বাংলাদেশের একাদশ সত্যিই কি প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো? নাকি আবারও চেনা ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে? চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি যখন দরজায় কড়া নাড়ছে, তখন বাংলাদেশর একাদশ নিয়ে আলোচনাও তুঙ্গে। কেমন হবে গেলবারের সেমিফাইনালিস্টদের একাদশ?

তানজিদ হাসান ও সৌম্য সরকার—দুই বাঁহাতির ওপেনিং জুটি। একদিকে তারুণ্য, অন্যদিকে অভিজ্ঞতা, তবে দুজনেরই সমস্যা ধারাবাহিকতা। তানজিদের ব্যাটে আছে শট খেলার সাহস, কিন্তু আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা তুলনামূলক কম। সৌম্যরও আছে খেই হারিয়ে ফেলার প্রবণতা। দুইজন এক কালে ক্লিক করলে তো হলই, না হলে ভুগবে বাংলাদেশ।

তিন নম্বরে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি বাংলাদেশের ব্যাটিং ভরসা হয়ে উঠেছেন। সমালোচনা হলেও ওয়ানডেতে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ব্যাটার তিনি। নেতৃত্বের চাপ তাঁর ব্যাটিংয়ে প্রভাব ফেলবে কি না, সেটাই দেখার বিষয়।

মেহেদী হাসান মিরাজকে লম্বা সময় লোয়ার-মিডল অর্ডারে দেখা গেলেও এবার চার নম্বরে তার উপস্থিতি কৌশলগত পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। এখানে তাঁর মধ্যে সাকিব আল হাসানের বিকল্প দেখছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু, মিরাজের ব্যাটিং সেকেলে ঘরাণার। রানপ্রসবা উইকেটে তাঁর ব্যাটিং দলের জন্য বড় সেট ব্যাক।

পাঁচ নম্বরে তাওহীদ হৃদয় — তরুণ-দায়িত্বশীল ব্যাটার। মিডল অর্ডারে নির্ভরতার আরেক নাম। ওয়ানডেতে তার স্ট্রাইক রেট ও চাপ সামলানোর ক্ষমতা তাকে বড় ম্যাচের জন্য উপযুক্ত করে তুলেছে। এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও তার ব্যাটিং হবে নির্ণায়ক, তবে এর জন্য হারানো ফর্মটা ফিরে পেতে হবে হৃদয়কে।

ছয়-সাতে দুই অভিজ্ঞ দিকপাল মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিপিংয়ের পাশাপাশি মিডল অর্ডারের স্তম্ভ মুশফিক। সাত নম্বরে মাহমুদউল্লাহ, বাংলাদেশের জন্য এক নম্বর পরীক্ষিত ফিনিশার। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে তার স্ট্রাইক রেট নিয়ে প্রশ্ন আছে, তবুও বড় মঞ্চে মাহমুদউল্লাহকে কখনোই হিসাবের বাইরে রাখা যায় না। তাঁর জন্যই সম্ভবত, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একাদশের বাইরে থাকবেন জাকের আলী।

অথচ, জাকের আলীর সাম্প্রতিক ফর্ম অভাবনীয়। তাঁর জন্য চাইলে হৃদয়কে বসিয়ে ব্যাটিং অর্ডারটাকে একটু শাফল করে দেখা যেতে পারে। বড় মঞ্চে জাকের আলীকে বসিয়ে রাখলে ভুল করবে বাংলাদেশ। বিশেষ করে, এই দলে তিনিই সবচেয়ে বড় এক্স ফ্যাক্টর।

এরপর দলের পরিপূর্ণ চার বোলার। প্রথমেই রিশাদ হোসেন, বাংলাদেশের লেগ স্পিন ভরসার প্রতীক। ব্যাট হাতেও ঝড় তুলতে জানেন শেষ ভাগে। শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ছিলেন দারুণ ফর্মে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় মঞ্চে তিনি কি পারফর্ম করতে পারবেন? পারলে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এক ধাপ।

এরপর দলের তিন পেসার। তাসকিন আহমেদ বাংলাদেশের পেস আক্রমণের নেতা। তার গতি, আগ্রাসন বাংলাদেশকে বাড়তি শক্তি দেবে। মুস্তাফিজুর রহমানের কাটার আগের মতো ভয়ঙ্কর না হলেও দুবাইয়ের মন্থর উইকেটে মুস্তাফিজকে খেলা কখনও কখও চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। আর নতুন মুখ নাহিদ রানা, গতি দিয়ে বিশ্বকে আবারও চমকে দেওয়ার অপেক্ষায় তিনি। ব্যাক আপ হিসেবে থাকছেন তানজিম হাসান সাকিব। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের পেস আক্রমণে ভরসা রাখাই যায়।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link