বড় সম্ভাবনা নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এসেছিলেন। জাতীয় দলে আহামরি পারফরম্যান্স করতে না পারলেও লড়াকু মেজাজ দিয়ে নজর কেড়েছিলেন। সর্বশেষ ৬ বছর বিরতি দিয়ে ২০১৯ সালে জাতীয় দলেও একবার ডাক পেয়েছিলেন। দারুন খেলছিলেন তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে। কিন্তু গত বছর তিনেক সে অর্থে আর পারফরম্যান্স নেই। এখন যেন কোনো খবরেই নেই জহুরুল ইসলাম অমি।
মূলত বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে উঠে এসেছেন জহুরুল ইসলাম অমি। ২০১০ সালে জাতীয় দলে অভিষেক। বছর তিনেক নিয়মিত খেলেছেন। খুব ভালো পারফরম্যান্স ছিলো না। তবে তিন ফরম্যাটেই কিছুদিন খেলেছেন।
সর্বশেষ ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়েছিলেন জাতীয় দলের সঙ্গে। খুব একটা ভালো কিছু করতে না পারলেও জাতীয় দলের সঙ্গে ছিলেন। তবে, মনে রাখার মত পারফরম্যান্স করেছিলেন ২০১২ সালের এশিয়া কাপে। সেবারই প্রথম বারের মত উপমহাদেশিয় শেষ্ঠত্বের এই লড়াইয়ে ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ দল।
এর পরই অমির প্রথম দফা হারিয়ে যেতে বসার শুরু। শ্রীলঙ্কা সফরের পরপরই মেয়ের অসুস্থতা অমির জগতকে নাড়িয়ে দিলো। মেয়েকে নিয়ে ছুটতে হয়েছে দেশ-বিদেশের অনেক ডাক্তারের কাছে। কী অসুস্থতা; তা কাউকে পরিষ্কার বলেননি অমি।
এর মাঝে খুব ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর অপারেশন নিয়ে উদ্বেল হয়ে উঠলেন। আবার নিজে খেলতে গিয়ে চোট পেলেন; তাতে পরপর দু বছরে দুটো অপারেশন লাগলো। এই তালগোল পাকানো অবস্থা চরমে থাকতে দুনিয়ায় এলো তার দ্বিতীয় সন্তান। কদিন পরই অমিকে দ্বিতীয়বার ইনজুরিতে পড়তে হলো।
এসব পার করে ২০১৫ সালে আবার আলোয় এসেছিলেন। সেবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ফিরে পাচ্ছিলেন নিজেকে। এমনকি জাতীয় দলেও ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু ক্যাম্পের প্রথম দিনেই ইনজুরিতে পড়ে আবার ছিটকে যেতে হয়েছিলো মাঠের বাইরে।
অনেকে অমির শেষ দেখে ফেলেছিলেন ওখানে। কিন্তু অমি তো হাল ছাড়ার লোক নন। তিনি আবার ফিরে আসেন তিনি। ২০১৯ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে রানের বন্যা বইয়ে দিয়ে নিজেকে করে তুলেছেন আবার জাতীয় দলের দাবিদার।
সেবার ঢাকা লিগে লম্বা সময় ধরে শীর্ষ রান সংগ্রাহক ছিলেন। শেষদিকে প্রতিযোগিতায় একটু পিছিয়ে পড়লেও ১৫ ম্যাচে ৭৩৫ রানের বিস্ময়কর সংখ্যা নিয়ে লিগ শেষ করেছেন। সেই পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে এই ওপেনার তরুণ সৌম্য, লিটন, সাদমানদের সঙ্গে লড়তে চলে এসেছিলেন। এই লড়াইয়ে মূল দলে ঢোকা হোক বা না হোক একটা জয় অমির হয়ে গেছে। আপাতত তার পরিশ্রমে সাফল্য এসেছে।
এরপর থেকে আবার খবরের বাইরে চলে যাওয়া শুরু অমির। মাঝে মধ্যে টুকটাক পারফরম্যান্স করলেও সেরকম ধারাবাহিক ভাবে রান বন্যা আর দেখা যায়নি তার ব্যাটে। এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলছেন শেখ জামালের হয়ে। প্রথম ম্যাচে ৪৭ রানের একটা ইনিংস খেলেছিলেন। তারপর থেকে আর তেমন কিছু করতে পারেননি।
খুবই নিষ্প্রভ হয়ে আছেন এশন অমি। খবরের পাতায় তাকে খুজে পাওয়া কষ্ট। তাই বলে হারিয়ে যাবেন? না, অমি লড়তে জানেন। কে জানে, আবার হয়তো প্রবল পরাক্রমে ফিরে আসবেন শিরোনামে, আবারও ফিরে পাবেন হারানো লাইমলাইট।