মাঠে আক্ষরিক অর্থেই ‘জ্যোতি’ ছড়ান তিনি। মাঠে তিনি থাকা মানেই বাড়তি একটা আত্মবিশ্বাস। বিরাট কোহলি যেমন ভারতের জন্য। দলের জন্য এতটাই জরুরী নিগার সুলতানা জ্যোতি। এতটাই আলো ছড়ান। নেতৃত্ব যেমন, ব্যাট হাতেও তেমন।
চলমান আয়ারল্যান্ড সিরিজেও সেই ধারা বজায় রাখলেন তিনি। ১৯৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শুরুতেই হারায় মুর্শিদা খাতুনের উইকেট। এরপরে ফারজানা হক আর শারমিন আক্তারের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
তবে হঠাৎই ছন্দ পতন ঘটে বাঘিনীদের। ৩৫তম ওভারে ১২৯ রানে চার উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাঘিনীরা। মিরপুরের স্লো পিচে রানের চাপে পড়ে কলাপ্স করতে পারত দল। তখনই দৃশ্যপটে হাজির নিগার সুলতানা জ্যোতি।
গতানুগতিক ধারায় এমন সময়ে সবাই ডিফেন্সিভ খেলে উইকেট ধরে রাখতে চায়। কিন্তু নামটা যে জ্যোতি, দ্যুতি ছড়ানোই তো তার কাজ। রক্ষনশীল না, উল্টো কাউন্টার অ্যার্টাকে গেলেন তিনি। দলীয় ১৮২ রানে যখন পঞ্চম ব্যাটার হিসাবে সাজঘরে ফিরছেন জ্যোতি, ততক্ষণে দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের বন্দরে। ৩৯ বলে ৪০ রানের ইনিংসটায় ছিল চারটি বাউন্ডারি আর একটা ওভার বাউন্ডারি।
এই যে চিরাচারিত প্রথার বাইরে গিয়ে ম্যাচ বের করে আনা, আগ্রাসী মনোভাব এটাই যেন তাকে আলাদা করে দেয় সবার থেকে। মাঠে নামলেই যেন পরিবেশ বদলে যায়, চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে এক অনন্য দ্যুতি। তার ব্যাটিং শুধু রান তোলে না, তুলে আনে দলের আত্মবিশ্বাস।
বিপদের সময় তার আগ্রাসী খেলার ধরণ সবাইকে অবাক করে, যেন মঞ্চে কোনো সুপারস্টারের প্রবেশ। মাঠে তার উপস্থিতি একেবারে অদ্ভুত, বাস্তবতার বাইরে এক জাদুকরী অনুভূতি। নেতৃত্বে, খেলায়, আর ব্যক্তিত্বে তিনি ঠিক যেন এক বিরল তারকা, যিনি প্রতিটি মুহূর্তেই রচনা করতে চান নতুন ইতিহাস। সোজা বাংলায়, সুপারস্টার কিংবা ব্রান্ডের অপর নাম যেন নিগার সুলতানা জ্যোতি।