প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচ। গুরুত্ব নিতান্তই নেই। তবুও নিয়ম রক্ষার খাতিরে মুখোমুখি খুলনা টাইগার্স ও ফরচুন বরিশাল। খুলনার টূর্নামেন্ট শেষ এই ম্যাচ দিয়েই। তবে বরিশাল যাচ্ছে প্লে-অফ রাউন্ডে। সেটা নিশ্চিত। সেই সাথে নিশ্চিত প্রথম এলিমিনেটর খেলা। সেখানের প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্স। এই সব তথ্য হাতে নিয়েই মাঠে নেমেছিল গেল বারের ফাইনালিস্টরা।
স্রেফ নিয়ম রক্ষার ম্যাচ। তবুও বরিশাল নিশ্চয়ই একটু বাড়তি আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেতে চেয়েছিল পরের রাউন্ডে। তবে ম্যাচের শুরুর দিকে গোটা স্টেডিয়াম ব্ল্যাকআউট হয়ে যাওয়ার মতই বরিশালের সে পরিকল্পনার ড্রয়িং বুকেও কাল দাগ পড়ে যায়। ছয় উকেটের বিশাল ব্যবধানে হেরে যায় ফরচুন বরিশাল।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ওপেনিংয়ে খানিকটা রদবদল। দলকে বাজিয়ে দেখার প্রচেষ্টা। এনামুল হক বিজয়ের সাথে জুটি গড়লেন মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ। খানিকটা ধীর গতিতেই এগিয়ে যেতে থাকে বরিশালের ইনিংস। রিয়াদ, এনামুলরা একটু দেখেশুনে খেলতে থাকে। যদিও নিজেদের ইনিংস খুব একটা বড় করতে পারেননি এই দুইজনের কেউই।
মাঝে চাতুরাঙ্গা ডি সিলভাও বল প্রতি রান নিয়ে আউট হয়ে যান। সাকিব নিজের আগ্রাসী মনোভাবটা এদিনও বজায় রেখেছিলেন। ছোট্ট একটি ক্যামিও ইনিংস খেলেন তিনি। হাসান মুরাদের শিকারের পরিণত হওয়ার আগে তাঁর ব্যাট থেকে আসে দুই ছক্কায় ১৪ বলে ২২ রান। ১১ ওভার শেষে ৭৭ রানে চার উইকেট হারিয়ে মোটামুটি মানের একটি সংগ্রহের পথে হাঁটছিল ফরচুন বরিশাল।
তবে সে পরিস্থিতিতে গিয়ার পরিবর্তন করেন দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস। প্রোটিয়া এই বোলিং অলরাউন্ডার স্বল্প সময়ের এক ঝড় তোলেন খুলনার বোলারদের উপর। ২৯ বলে ৪৯ রান করে প্যাভিলনে ফেরার আগে চারটি সুবিশাল ছক্কা হাকিয়েছেন তিনি। তাঁর সেই মারকুটে ব্যাটিংয়ের ধারা অব্যাহত রাখেন ইব্রাহিম জাদরান ও করিম জানাত। তাঁরাও দলের পক্ষে দ্রুত রান তুলতে থাকেন।
শেষ অবধি নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে আট উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান সংগ্রহ করে ফরচুন বরিশাল। খুলনা টাইগার্সের হারাবার কিছুই নেই। এই ম্যাচটি জিতে একটা ইতিবাচক নোটে শেষ করার প্রত্যয় নিয়েই যেন তাঁরা ব্যাট করতে নামে। যদিও শুরুতেই ধাক্কা খায় দলটি সাব্বির রহমানের উইকেট হারিয়ে। তাঁকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে পাঠান প্রিটোরিয়াস।
অধিনায়ক শাই হোপ এদিনও ছিলেন বিবর্ণ। একশ এর কাছাকাছি স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন আইরিশ ব্যাটার অ্যান্ডি বালবির্নি। ৮২ রানে তৃতীয় উইকেট হিসেবে প্যাভিলনে ফেরেন বালবির্নি। তবে তখনও খুলনার আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তরুণ ক্রিকেটার মাহমুদুল হাসান জয়। আর সেই আশার তরী জয়ের বন্দরে নিয়ে যান হাবিবুর রহমান সোহান। শেষ দিকে টর্নেডোর গতিতে রান তোলেন তরুণ আনকোড়া এই ক্রিকেটার। ৯ বলে ৩০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে তিনি দলকে এনে দেন স্বস্তির জয়।
তবে এর আগে, জয়ের পথটা সুগম করে রেখেছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। শেষ অবধি তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৪৩ বলে ৬৪ রান। এই দুই ব্যাটার তিন বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয়। এই পরাজয়ে মানসিকভাবে খানিকটা ব্যাকফুটে থেকেই এলিমিনেটর খেলতে যাচ্ছে ফরচুন বরিশাল। তবে আগামী মৌসুমে ভাল কিছু করবার রসদ নিয়েই বিদায় ঘটে খুলনা টাইগার্সের।