পিঞ্চ হিটিং, স্পিন ভেলকি — ইডেন গার্ডেনে কলকাতা-ব্যাঙ্গালুরু ম্যাচের সারমর্ম এতটুকুই। আর তাতে দুই ইউনিটেই আধিপত্য দেখিয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৮১ রানের জয় তুলে নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।
কলকাতার ঘরের মাঠে এ দিন উপস্থিত ছিলেন কেকেআর ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক, বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খান। আর তাঁর উপস্থিতিতেই দারুণ উজ্জীবিত হয়ে এবারের আসরের প্রথম জয় তুলে নিল কলকাতা নাইট রাইডার্স।
তবে টসে হেরে এ দিন ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা খায় কলকাতা। ম্যাচের তৃতীয় ওভারে ইংলিশ পেসার ডেভিড উইলির পরপর দুই বলে বোল্ড আউট হয়ে ফিরে যান ওপেনার ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও মনদীপ সিং।
এরপর অধিনায়ক নিতিশ রানাও ফিরে যান ১ রান করেই। আর দলের অন্যতম ভরসা আন্দ্রে রাসেল আউট হন রানের খাতা খোলার আগেই। তবে টপ অর্ডারের ব্যর্থতার দিনে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। আফগান এ ওপেনার এ ম্যাচ দিয়েই আইপিএল ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি তুলে নেন।
তবে ফিফটি পূরণের পর উইকেটে আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি এ ব্যাটার। ৪৪ বলে ৫৭ রান করে কার্ন শর্মার বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। অবশ্য তাঁর ভিত গড়ে দেওয়া দলীয় সংগ্রহকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্বটা এ দিন নিয়েছিলেন রিঙ্কু সিং আর শার্দুল ঠাকুর।
এ দুই ব্যাটারের ৪৫ বলে ঝড়ো ১০৩ রানের জুটিতে ২০০ এর পথে পা বাড়ায় কলকাতা নাইট রাইডার্স। রিঙ্কু সিং ৪৬ রানে ফিরে গেলেও ফিফটি তুলে নিতে ভুল করেননি শার্দুল ঠাকুর। মাত্র ২২ বলেই পৌঁছে যান ব্যক্তিগত অর্ধশতকে। শেষ পর্যন্ত থেমেছেন ৯ চার আর ৩ ছক্কায় ২৯ বলে ঝড়ো ৬৮ রানের ইনিংসে। আর এতেই শুরুর ধাক্কা দারুণ ভাবে সামলে নিয়ে ব্যাঙ্গালুরুকে ২০৫ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় কলকাতা।
এমন বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালই করেছিলেন ফাফ ডু প্লেসি আর বিরাট কোহলি। ১০ এর বেশি আস্কিং রেটের কথা মাথায় রেখে এ দুই ব্যাটার ইনিংসের প্রথম ৪ ওভারেই তুলে ফেলেছিলেন ৪২ রান। তবে এর পরেই ব্যাঙ্গালুরের ছন্দচ্যূতি ঘটে।
কলকাতার হয়ে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন সুনীল নারাইন। দারুণ এক ডেলিভারিতে বিরাট কোহলিকে বোল্ড করেন তিনি। এরপর আরেক ওপেনার ডু প্লেসিও বিরাটের পথ ধরেই বোল্ড আউট হয়ে ফিরে যান। তিনি পরাস্ত হন বরুণ চক্রবর্তীর বলে।
বরুণ চক্রবর্তীর ভয়ংকর হয়ে ওঠার শুরু সেখান থেকেই। একাই গুড়িয়ে দেন ব্যাঙ্গালুরু মিডল অর্ডার লাইন আপ। ফাফ ডু প্লেসির পর এ দিন বরুণ চক্রবর্তীর স্পিন বিষে নীল হয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, হার্শা প্যাটেলও। দুজনেই ফিরে যান বোল্ড হয়ে। মূলত কলকাতার এ স্পিনারের ঐ ৩ ওভারের স্পেলেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু।
পরবর্তীতে কলকাতার স্পিনের সামনে সামান্য প্রতিরোধও গড়ে তুলতে পারেনি ব্যাঙ্গালুরুর ব্যাটাররা। উল্টো শেষদিকে অভিষিক্ত সুয়াশ শর্মার লেগস্পিন ভেলকিতে ১২৩ রানেই গুটিয়ে যায় ব্যাঙ্গালুরু। কলকাতার হয়ে বরুণ চক্রবর্তী নিয়েছেন ৪ উইকেট আর সুয়াশ শর্মা পেয়েছেন ৩ টি উইকেট।