শেষ তিন ম্যাচে তিনটি এক অংকের স্কোর! বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে, একটু কি চাপে ছিলেন লোকেশ রাহুল?
চাপে থাকুক আর না থাকুক, বাংলাদেশের বিপক্ষে সেমিফাইনালের লড়াইয়ে টিকে থাকার ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার হয়ে নিজের সেরাটাই যেন ঝুলি থেকে বের করে আনলেন এই ওপেনার ব্যাটসম্যান।
বিশ্বকাপের আগের তিনটি ম্যাচে তিনবারই এক অঙ্কের ঘরে কাটা পড়েছিলেন। এর চেয়েও দৃষ্টিকটু ছিল, স্যুইং বোলিংয়ের বিপক্ষে তাঁর ভুগতে থাকা। অবশেষে বাংলাদেশের বিপক্ষে দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা যখন শুরুতেই ফিরে যান সাজঘরে, দায়িত্বটা যেন নিজের কাধে তুলে নেন লোকেশ রাহুল।
ম্যাচ শুরুর আগের সংবাদ সম্মেলনে, টিম ইন্ডিয়ার কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, লোকেশ রাহুলের এই অফ ফর্ম সম্পর্কে, এক কথায় ‘দ্যা ওয়াল’ সেখানে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি মোটেও চিন্তিত নন।
লোকেশ রাহুল ও যেন, এই কথারই প্রমাণ দিতে অ্যাডিলেডের মাঠে নেমেছিলেন, দিলেনও প্রমাণ। শুরুর তাসকিন আহমেদের আগুন ঝরানো স্পেলকে কাটিয়ে উঠে মাত্র ৩২ বলে ৫০ রানের এক ঝঁকঝকে ইনিংস খেলেন। শুধু এই ইনিংস তাঁরই মনোবল বাড়ায়নি, টিম ইন্ডিয়াকেও গড়ে দেয় এক বড় সংগ্রহের ভীত।
লোকেশ রাহুলের ভূমিকা এখানেই শেষ নয় ম্যাচে। ম্যাচের বোধকরি, সবচেয়ে বড় ভূমিকাটা তিনি পালন করেছেন অন্যখানে, ফিল্ডিংয়ের সময়। বৃষ্টির আগে বাংলাদেশের লিটন দাস ব্যাটিংয়ে চার, ছক্কায় নাস্তানাবুদ করছিল। বৃষ্টির পরে দ্বিতীয় বলেই, ডিপ স্কয়ার লেগের বাউন্ডারির কাছে থেকে সরাসরি থ্রোতে লিটনকে রান আউট করেন রাহুল।
ম্যাচের সবচেয়ে বড় টার্নিং পয়েন্ট সেটিই ছিল। ম্যাচ পরবর্তীতে রাহুলকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়, বৃষ্টির সময় ড্রেসিংরুমের অবস্থা সম্পর্কে, রাহুল বলেন, ‘ম্যাচটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল, আর আমরা সবাই ভাল করার জন্য মরিয়া হয়ে ছিলাম। খেলতে উন্মুখ হয়ে ছিলাম।’
লিটন দাশের ইনিংস টিম ইন্ডিয়াকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিল কিনা, সে প্রশ্নের জবাবে রাহুল বলেন, ‘অবশ্যই লিটন দাসকে অভিনন্দন দিতেই হবে, ও যেভাবে শুরু করেছিল, সত্যি কথা বলতে প্রশংসা তাঁর প্রাপ্যই। তবে আমরা ভাল করার জন্য মরিয়া ছিলাম, আর এর আগেও আমরা নিজেদেরকে কমফোর্ট জোনের বাইরে গিয়ে কিভাবে ফিরে আসতে হয়, সেটা করে দেখিয়েছি। তাই আমরা প্রস্তুত ছিলাম।’
রাহুল তাঁর নিজের ব্যাটিং ইনিংস নিয়ে তৃপ্ত। এই সম্পর্কে বলেন, ‘ঠিক আছে আমি রান পাচ্ছিলাম না। কিন্তু আমি কোনভাবেই খারাপ অবস্থায় ছিলাম না, আমার সকল টিমমেট এবং কোচিং স্টাফের সবাই আমাকে সহায়তা করেছে।’ আর ইনিংস চলাকালীন সময়, ভিরাট কোহলি অস্ট্রেলিয়ার মাঠে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে তাকে বেশ সাহায্য করেছেন বলেও স্বীকার করেন রাহুল।