পাকিস্তান কি আসলেই নিজেদের ভুলের মাশুল দিল? আগেই কি আউট হতে পারতেন? অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ডের ফাঁদে বিরাট কোহলিকে ফেলা যেত? ক্রিকেটের আইন কি বলে? – আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আকাশে-বাতাসে এমন অনেক গুঞ্জন ভেসে বেড়াচ্ছে।
বলাবলি হচ্ছে, হাফ-সেঞ্চুরিও করতে পারতেন না বিরাট কোহলি, যদি পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা একটু বুদ্ধি খাটাতেন! কিন্তু ভাগ্য তার পক্ষে ছিল। বিপক্ষের বোকামির সুবাদে বেঁচে গেলেন তিনি—এমনটাই মনে করেন ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার। তিনি মনে করেন, একটু খেয়াল করলেই বিরাটকে সাজঘরে পাঠানো যেত!
অবশ্য, এখানে যে একটা বিরাট গলদ তিনি করে ফেলেছেন, সেটা বলে না দিলেও চলে। আইসিসির নিয়ম বলছে, ফিল্ডিংয়ে বাধা দেওয়া মানেই ‘আউট’ হওয়ার সুযোগ তৈরি করা! ইচ্ছাকৃতভাবে ফিল্ডারদের রান আউট বা ক্যাচ নিতে বাধা দিলে, ব্যাটারকে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আউট দেওয়া যায়। কিন্তু, কোহলি তো কোনো রকম বাঁধা দেননি, বা সেখানে তো রান আউট হওয়ার কোনো সুযোগও ছিল না।
ঘটনা ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের ২১ তম ওভারের। হ্যারিস রউফের বলে এক রান নিয়ে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে চলে গিয়েছিলেন কোহলি। এদিকে বাউন্ডারি লাইনের কাছে থাকা পাকিস্তানি ফিল্ডার স্ট্রাইকার এন্ডে সরাসরি থ্রো ছুড়লেন। কিন্তু বল গড়িয়ে যাওয়ার আগেই কোহলি সেটি হাত দিয়ে ধরে ফেললেন! তবে, এখানে কোনো বিতর্কের সুযোগ নেই। কারণ, কোহলি এখানে কোনো রকম বাঁধা দেননি ফিল্ডারকে। বলটা ডেড হয়নি, হাত দিয়ে ধরে বলটা ডেড করেছেন তিনি।
অথচ ভুলভাল বলে ফেললেন গাভাস্কার। তিনি বলেন, ‘বিরাট অহেতুক হাত বাড়িয়ে বল ধরল। পাকিস্তানি খেলোয়াড়রা যদি আবেদন করত, তাহলে আম্পায়ার ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আইনে তাকে আউট দিতে পারতেন। কিন্তু ওরা কিছুই করল না! পাকিস্তানের ক্রিকেট সচেতনতার অভাবই বিরাটের রক্ষা করল।’
তখন কোহলির স্কোর ঠিক ৪২ রান! রমিজ রাজাও সরাসরি বলে দিলেন, ‘পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের ম্যাচ সচেতনতাই নেই!’ মানে, সাবেক এই পাকিস্তানিও আইসিসির নিয়ম বেমালুম ভুলে বসে আছেন।
কোহলির ক্ষেত্রে গল্পটা একটু আলাদা। তিনি বল ধরেছিলেন ঠিকই, তবে সেটা পপিং ক্রিজের মধ্যে ঢুকে পড়ার পর। কোহলি যখন বল হাত দিয়ে ধরেছেন, তখন কোহলি ইতোমধ্যেই রান শেষ করে ফেলেছেন। তিনি স্রেফ সৌজন্যতা করে বলটা তুলে দিয়েছেন। এই দৃশ্য এখন ক্রিকেটে খুব স্বাভাবিক। এখানেই আম্পায়ারের বিবেচনার ব্যাপার চলে আসে। পাকিস্তান একটু সচেতন হয়ে সর্বোচ্চ আবেদন করতে পারত। কিন্তু, তাতে খুব একটা লাভ হওয়ার সুযোগ ছিল না।
তবে, ব্যাটারকে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আউট দেওয়ার উদাহরণ আছে বিস্তর! ২০০৬ সালে ইনজামাম উল হক ভারতের বিরুদ্ধে এভাবে আউট হয়েছিলেন। ২০১৫ সালে বেন স্টোকস অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একইভাবে সাজঘরে ফিরেছিলেন। একই ভাবে মিরপুরে টেস্ট চলাকালে স্ট্রাইকিং এন্ডে অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ডের শিকার হন মুশফিকুর রহিম। ক’দিন আগে বিপিএলে অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ডের শিকার হন রংপুর রাইডার্সের শেখ মেহেদী হাসান।