তাসকিন আহমেদের প্রায় ১৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় ছোড়া এক শর্ট বল। সেই বলে পুল শট করতে চাইলেন কুশল মেন্ডিস। তবে গতির সাথে পেরে উঠলেন না ঠিক। মিডউইকেটে থাকা সৌম্য সরকারের হাতে এক নিতান্ত সহজ ক্যাচ। বিদায় ঘটে মেন্ডিসের। তবে এর আগেই নিজের কার্য্য সম্পাদন ঠিকঠাকভাবেই করে গেছেন তিনি।
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এক ইনিংস সর্বোচ্চ রান করলেন কুশল মেন্ডিস। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারনী তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে তিনি ফিরেছেন ৫৫ বলে ৮৬ রান। মেন্ডিসের বেশ প্রিয় প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। তাইতো একেবারেই হাতছাড়া করলেন না হাতখুলে খেলার সুযোগ।
প্রায় ১৫৬.৩৬ স্ট্রাইকরেটের আগ্রাসী ইনিংস খেলেই বিদায় নিয়েছেন তিনি। যদিও ছুটছিলেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম সেঞ্চুরির দিকে। তবে সেটা আর হয়ে ওঠেনি। প্রিয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আরও একটি রেকর্ড অন্তত গড়ে ফেলতেই পারতেন তিনি। রান তো তিনি বরাবরই করতে বেশ ভালবাসেন বাংলাদেশের বিপক্ষে।
অন্তত তার পরিসংখ্যানের খাতা সে কথাই বলে। টাইগারদের বিপক্ষে রীতিমত ব্যাটিং দূর্গ হয়ে দাঁড়িয়ে যান তিনি। এমনকি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানও তিনি করেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কুশল মেন্ডিসের ব্যাট থেকে এসেছে ৯৩০৭ রান।
এর মধ্যে ১৫৫০ রান নিয়েছেন তিনি স্রেফ বাংলাদেশের বিপক্ষেই। বাকি প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে এতটা সাবলীল ব্যাটিং করতে সচারচর দেখা মেলেনি কুশল মেন্ডিসের। যদিও রান তিনি কমবেশি সব প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই করেছেন। ধারাবাহিকভাবে রান তোলায় মেন্ডিসের জুড়ি মেলা ভার।
এমনকি বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনটি সেঞ্চুরির দেখাও পেয়েছেন লংকান এই তারকা ব্যাটার। সিলেটে শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজেই দুইটি হাফসেঞ্চুরি তিনি করেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। সেই দুইটি হাফ সেঞ্চুরি সহ ১১টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন তিনি বাংলাদেশের বিপক্ষে।
বিশ্ব ক্রিকেটে ‘বানি’ কথাটা বেশ প্রচলিত। নির্দিষ্ট কোন বোলারের কাছে কোন নির্দিষ্ট ব্যাটার বারবার আউট হলে- ওই ব্যাটারকে সেই বোলারের বানি বলা হয়। এদিক থেকে বানির সমার্থক কোন মতাদর্শ থাকলে তা ব্যবহার করা যেতে পারে বাংলাদেশের সাথে কুশল মেন্ডিসের রানধারা বর্ণনায়। তেমনটা হয়ত এখনও সৃষ্টি হয়নি। তবে বিষয়টাকে সংক্ষিপ্ত করতে কুশল মেন্ডিসের বানি গোটা বাংলাদেশ- সেটা অন্তত বলাই যায়।
সিলেটে হওয়া তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও অন্যতম সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক কুশল মেন্ডিস। তিন ইনিংসে দুইটি হাফসেঞ্চুরি সহ ১৮১ রান করেছেন তিনি। ৬০ এর বেশি গড়ে রান করে গেছেন। আসন্ন ওয়ানডে সিরিজেও নিজের এমন রানের ধারা অব্যাহতই রাখতে চাইবেন মেন্ডিস। তাতে করে পরিসংখ্যানের পাতাও হবে সমৃদ্ধ। আত্মবিশ্বাসে ভরে উঠবে হৃদয়।