ভারতের হারানো তারাদের মিছিলে…

ভারতের ক্রিকেটেও আমরা অনেক গ্রেট ক্রিকেটার দেখেছি। আবার অনেক সম্ভাবনা নিয়ে এসেও হারিয়ে গিয়েছেন এমন উদাহরণও কম নেই। ভারত দলে এসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দারুণ শুরু করেছিলেন, তবে সেই শুরুটা ধরে রাখতে পারেননি। খারাপ সময় কাটিয়ে নিজেদের সেরা ফর্মে ফিরে আসতে পারেননি।

ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। এখানে খেলাটা যেমন অনিশ্চিত তেমনি প্রতিটা ক্রিকেটারের জীবন অনিশ্চিত। দলের সেরা খেলোয়াড়ও এখানে খারাপ দিন কাটায়। তবে তিনি সেরা কারণ তিনি আবার ফিরে আসতে জানেন। এই ফিরে আসতে জানার ব্যাপারটাই একজন ক্রিকেটার ও একজন গ্রেট ক্রিকেটারের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়।

ভারতের ক্রিকেটেও আমরা অনেক গ্রেট ক্রিকেটার দেখেছি। আবার অনেক সম্ভাবনা নিয়ে এসেও হারিয়ে গিয়েছেন এমন উদাহরণও কম নেই। ভারত দলে এসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দারুণ শুরু করেছিলেন, তবে সেই শুরুটা ধরে রাখতে পারেননি। খারাপ সময় কাটিয়ে নিজেদের সেরা ফর্মে ফিরে আসতে পারেননি। ভারতকে আশা দেখিয়ে হারিয়ে যাওয়া সেই নক্ষত্রদের নিয়েই এই আয়োজন।

  • রবিন উথাপ্পা

রবিন উথাপ্পার প্রতিভা নিয়ে কোন সংশয় ছিল না। একেবারে নিখুঁত ব্যাটিং টেকনিকের অধিকারি। শর্টার ফরম্যাটে ভারতের বড় সম্পদ হতে পারতেন। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলিতে যাওয়ার আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ একটি সিরিজ কাটিয়েছেন।

নিজের প্রতিভার সেরাটা দেয়ার জন্য এসেছেন এমনই মনে হচ্ছিল। তবে নিজের সেই শুরুটা ধরে রাখতে পারেননি। ফলে দ্রুতই দলে জায়গা হারান। এরপর কয়েকবার সুযোগ পেলেও আর আগেই সেই রূপে ফিরে যেতে পারেননি। মাত্র ৪৬ ওয়ানডে ও ১৩ টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই থমকে রয়েছে তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার।

  • ইরফান ও ইউসুফ পাঠান

এই দুই ভাই-ই ভারতের হয়ে দারুণ শুরু করেছিলেন। দুজন ভিন্ন সময়ে ভারতের বেশ সম্ভাবনার নাম হয়ে উঠেছিলেন। ইরফান পাঠান মাত্র ১৮ বছর বয়সে পাকিস্তানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে তাঁর প্রতিভার প্রমাণ দেন। তবে পরবর্তীতে ইনজুরি ও অফ ফর্মের কারণে আর জাতীয় দলে থিতু হতে পারেননি।

ওদিকে বড় ভাই ইউসুফ পাঠানও তাঁর স্লগ করার দক্ষতার জন্য পরিচিত ছিলেন। ফলে শর্টার ফরম্যাটে তাঁকে নিয়েও বড় স্বপ্ন দেখেছিল ভারত। তবে দ্রুতই নিজের ফর্ম হারিয়ে বাদ পড়ে যান। ফলে দুই ভাইয়ের কেউই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের সেরাটা দিতে পারেননি।

  • মোহম্মদ কাইফ

এখনো ভারতের ক্রিকেটে ভীষণ জনপ্রিয় ক্রিকেটারদের একজন মোহম্মদ কাইফ। তাঁর অসাধারণ ফিল্ডিং এবিলিটি ও লর্ডসে তাঁর একটি ইনিংস ভারতের ক্রিকেট ভক্তদের মনে দাগ রেখে গিয়েছিল। শুরুর বছর অসাধারণ ক্রিকেট খেললেও পরে নিজের ফর্ম হারিয়ে ফেলেন। এরপর আর কখনোই জাতীয় দলে ফিরে আসতে পারেননি এই ক্রিকেটার।

  • ওয়াসিম জাফর

ভারতের ক্রিকেটের এক অনন্ত আক্ষেপের নাম ওয়াসিম জাফর। প্রচণ্ড প্রতিভা নিয়ে আসা এই ক্রিকেটারও কখনো ভারত দলে নিজের জায়গা পাকা করতে পারেননি।

সেই সময় বীরেন্দ্র শেবাগ কিংবা গৌতম গম্ভীরের মত ওপেনার থাকাও এর অন্যতম কারণ। ফলে ভারতের হয়ে কিছু রান করার পরেও বাদ পড়েন এবং আর কখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা হয়নি এই ব্যাটসম্যানের।

  • লক্ষ্মীপতি বালাজি

তামিলনাডুর এই পেসার ছিলেন তাঁর দলের সেরা একজন পেসার। আইপিএলের বিভিন্ন আসরেও বেশ দূর্দান্ত পারফর্ম করেছিলেন। কিন্তু জাতীয় দলে বেশ ছোটো সময় খেলেছিলেন। তিনি তাঁর সময়ে ইনস্যুইং এবং আউটস্যুইং দুইটাই করতে পারদর্শী ছিলেন।

ভারতীয় জাতীয় দলকে বড় সময়ের জন্য সার্ভিস দিতে পারেননি তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে দূর্দান্ত পারফর্ম করতে পারলেও জাতীয় দলের হয়ে পারফর্ম করতে পারেননি তিনি। তাই বালাজিকে জাতীয় দলের হয়ে বেশি খেলতে দেখা যায় নি। এখন তিনি কোচ বনে গেছেন, কাজ করেন আইপিএলেও।

  • পার্থিব প্যাটেল

গুজরাটের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ভারতের হয়ে অভিষিক্ত হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। কিশোর বয়সেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন প্রতিভাবান এই ক্রিকেটার। সেই সময় দারুণ পারফর্মও করেন এবং দেশের সেরা কিপার হিসেবেও অ্যাখ্যা পান। তবে ভারতের ক্রিকেটে মহেন্দ্র সিং ধোনি আসার পর নিজের জায়গা আর কখনো ফিরে পাননি এই ক্রিকেটার।

  • শান্তাকুমারান শ্রীশান্ত

ভারতের ক্রিকেটে আরেকজন বড় তারকা হতে পারতেন শ্রীশান্থ। বল হাতেও দারুণ পারফর্মেন্স ও করছিলেন। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ – ভারতের হয়ে দু’টি বড় শিরোপা জয় করেন তিনি। তবে মাঠে তাঁর নানারকম আচরণের জন্য প্রায় নিষেধাজ্ঞায় পড়তে হতো।

তবে, শেষে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) স্পট ফিক্সিংয়ের কারণে নিষিদ্ধ হলে আর কখনো জাতীয় দলে ফিরতে পারেননি এই পেসার।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...