স্বয়ং পেলেই সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যখন তোমার হৃদয় ভালোবাসায় উপচে পড়ে, তখন তোমার পথ পরিবর্তন করা কঠিন । তোমার মত আমি জানি প্রতিদিন একই শার্ট পড়ে ভালো লাগে । আমি জানি তোমার মত আমরা মনের মধ্যে যে জায়গা অনুভব করি তার চেয়ে ভালো আর কিছু নেই । লিওনেল মেসি, তোমার ঐতিহাসিক রেকর্ডের জন্য অভিনন্দন । কিন্তু সর্বোপরি, বার্সেলোনায় তোমার সুন্দর ক্যারিয়ারের জন্য অভিনন্দন । আমাদের মত গল্প, একই ক্লাবকে এতোদিন ধরে ভালোবাসার, দুর্ভাগ্যবশত ফুটবলে যত দিন গড়াবে ততই বিরল হতে থাকবে। আমি তোমাকে অনেক অনেক শ্রদ্ধা করি।’
হ্যাঁ, ফুটবলের রাজা পেলে শ্রদ্ধা করে লিওনেল মেসিকে। যতই মাঠে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হোক না কেন – মাঠের বাইরে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ অটুট তাঁদের। আর মেসির কীর্তিটাই এমন যে গোটা বিশ্ব তাঁকে কুর্ণিশ করতে বাধ্য।
মেসি একটি নির্দিষ্ট ক্লাবের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড গড়েছেন। ছুয়েছেন তিনটি বিশ্বকাপজয়ী পেলেকে। ‘ফুটবলের রাজা’ পেলের পাশে এখন নাম লিখিয়েছেন ‘ফুটবলের যুবরাজ’ মেসি।
বলাই বাহুল্য সেই ক্লাবটি হল বার্সেলোনা। মেসি কাতালানদের হয়ে রেকর্ড ৬৪৩ টি গোল করেছেন। শনিবার রাতে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ২-২ ড্র করে বার্সেলোনা, সেই ম্যাচেই মেসি এই কীর্তি গড়েন। চাইলে এই রাতেই মেসি ছাড়িয়ে যেতে পারতেন পেলেকে। কিন্তু, তাঁর পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক জাউমে ডোমেনেখ।
মেসি বার্সেলোনার হয়ে প্রথম গোল করেন ২০০৫ সালে। মানে ১৫ বছরে তিনি ছুলেন পেলেকে। এই সময়ে বার্সেলোনার হয়ে খেলেন ৭৪৮ টি ম্যাচ। এমন অর্জনের রাতেও মেসি উদযাপন করেন খুবই সামান্য। কারণ, মধ্য টেবিলের দল ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে জিততে ব্যর্থ হয়েছে বার্সেলোনা।
পেলে ১৯৫৬ থেকে ১৯৭৪ – এই টানা ১৮ বছরে ১৯ টি মৌসুম খেলেছেন ব্রাজিলের ক্লাব স্যান্তোসে। ব্রাজিল তাঁকে নিজেদের ‘জাতীয় সম্পদ’-এর স্বীকৃতি দিয়েছিল। এই স্বীকৃতি যৌবনে তাঁকে দেশের বাইরে খেলতে দেয়নি। তাই ব্রাজিলের বাইরে নিজেদের সেরা সময়টায় যেতে পারেননি পেলে।
মেসি এখন ঠিক ক্যারিয়ারের সুদিনে নেই। তবুও, নিত্য নতুন নানা রেকর্ডই লেখা হচ্ছে তাঁর নামের সাথে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বড় সাফল্য না পাওয়া মেসির ক্লাব পর্যায়ে সাফল্য ঈর্ষণীয়। এত দিনে তাঁর যে অবস্থান তাতে তাকে কেবল ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসেই সর্বকালের সেরা নয়, বিশ্ব ফুটবলেও সেরাদের একজন বলা যায়। এখন তিনি কোথায় গিয়ে থামবেন – সেটাই দেখার বিষয়!