বিশ্বকাপ দলে তাঁদের ঠাই নেই

‘আমি আগেই বলেছিলাম ২০২৩ সালটা আমাদের ভাল যাবে’। এমন আত্মবিশ্বাসই প্রকাশ করেছেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের এমন মন্তব্য আশা জাগায়, ভরসা দেয়, স্বপ্ন দেখতে উদ্বুদ্ধ করে।

২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপটা প্রতিবেশি দেশ ভারতে। বাংলাদেশের চেনা কন্ডিশন, পছন্দের ফরম্যাট। তাছাড়া এশিয়া কাপও রয়েছে সামনে। সেটাও একদিনের ফরম্যাটে। শিরোপা জয়ের মোক্ষম সময়। বাংলাদেশের সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক তেমনই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এখনই আমাদের বড় টুর্নামেন্ট জেতার সময়। যেটা হতে পারে এশিয়া কাপ কিংবা বিশ্বকাপ।’

তবে এই যে আশার আলো, বর্ণিল এক স্বপ্ন জয়ের হাতছানি এসবকিছু থেকে বঞ্চিত হতে পারেন অনেক ক্রিকেটার। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ যাত্রা থেকে ছিটকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন সব ক্রিকেটারদেরকে নিয়েই থাকছে আজকের আয়োজন।

  • মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অভিজ্ঞতায় ভরপুর। তবে সম্ভাবনা অত্যন্ত প্রবল। তিনি হয়ত থাকবেন না ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে। অন্তত সাম্প্রতিক সময়ে দলের পরিকল্পনায় তিনি নেই। বিশ্রাম শব্দে আটকে ফেলে তাকে রাখা হয়েছে জাতীয় দলের বাইরে।

তার সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি রীতিমত দিবাস্বপ্ন। বয়সের ভারে তার কার্যকারিতা কমেছে। তাছাড়া জাতীয় দল থেকে খানিক দূরত্ব থাকার সময়টাও খুব একটা কাজে লাগাতে পারছেন না। ঘরোয়া ক্রিকেটে দু’একটা ভাল ইনিংস উপহার দিচ্ছেন ঠিক। তবে নজর কাড়তে পারেননি তিনি। তাই হয়ত তিনি থাকছেন না ভাবনায়।

  • নুরুল হাসান সোহান 

দেশের অন্যতম সেরা উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান। এই বিষয়টি নিয়ে দ্বিধা নেই বললেই চলে। যদিও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ কয়েকটি দৃষ্টিকটু চিত্রের অবতারণা তিনি করেছেন। তবে সে বিবেচনায় তিনি হয়ত বাদ যাবেন না বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকে।

সোহানের ব্যাটিংয়ের খুব বেশি সৌন্দর্য নেই। তাছাড়া তার ব্যাটিং টেকনিকও প্রশ্নবিদ্ধ। এছাড়া তার সীমিত শট নির্বাচন বিপাকে ফেলতে পারে বাংলাদেশ দলকে। শুধুমাত্র উইকেট কিপিংয়ের জন্য বিশ্বকাপগামী বিমান ধরতে পারাটা বর্তমান প্রেক্ষাপটে দুষ্কর। নিজেকে শাণিত করবার কাজটা ঠিকঠাক করতে পারছেন না, স্বল্প সময়ে সেটা করতে পারার সম্ভাবনাও ক্ষীণ।

  • আফিফ হোসেন ধ্রুব

নিজেকে প্রমাণ করেই আফিফ হোসেন ধ্রুবকে আসতে হবে জাতীয় দলে। টাইগার কোচ চাণ্ডিকা হাতুরুসিংহে সেই হুঙ্কার দিয়ে রেখেছেন। আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন আফিফ বহুবার। ইতিহাসে লিখে রেখেছেন নিজের নামটি। তবুও অধারাবাহিকতা একটা বড় চিন্তার কারণ। তাছাড়া দলের পরিকল্পনায় তার রোল ফিনিশার।

যদিও তিনি সে রোলে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ে বিপক্ষে তার রেকর্ড গড়া ইনিংসগুলো এসেছে দলের ক্রান্তিলগ্নে। তখন অবশ্য় তিনি নিজেকে বাইশ গজে থিতু করবার সুযোগ পেয়েছিলেন। আর তাতেই অন্যতম সেরা পারফরমেন্স উপহার দিয়েছেন। তবে দল তাকে মিডল অর্ডার কিংবা টপ অর্ডার ব্যাটার হিসেবে এই মুহূর্তে বিবেচনা করছে না।

  • নাসুম আহমেদ

বাঁ-হাতি স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য বাংলাদেশ। সেই রাজ্যের আরও এক প্রতিনিধি নাসুম আহমেদ। সাদা বলের ক্রিকেটে তিনি রীতিমত অবিচ্ছেদ্য়, স্পিনিং কন্ডিশনে। তবে সে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। তিনি আর অবিচ্ছেদ্য নেই। এমন কি পছন্দের তালিকায় তার স্থান বেশ পেছনের দিকে। কারণটা তার খরুচে বোলিং।

তার পরিবর্তে এগিয়ে থাকছেন তাইজুল ইসলাম। কেননা ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের পছন্দের তালিকায় তাইজুল রয়েছে। এছাড়াও তিনি সাদা বলে নিজেকে মেলে ধরছেন। এই দুইয়ের মিশেলে হয়ত কপাল পুড়তে পারে নাসুম আহমেদের।

  • শরিফুল ইসলাম

দীর্ঘদেহী একজন পেসার শরিফুল ইসলাম। বাঁ-হাতি হওয়া তার জন্য বাড়তি আশীর্বাদ। তিনি একটা সময় দাপটও দেখিয়েছেন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে। তবে যুব বিশ্বকাপজয়ী এই পেসার হয়ত যাবেন না ওয়ানডে বিশ্বকাপের দলের সাথে। তিনিও যথেষ্ট খরুচে। তাছাড়া লাইন আর লেন্থের মনস্তাত্ত্বিক খেলায় তিনি বেশ নড়বড়ে। পাশাপাশি ইনজুরি জনিত সমস্যাও রয়েছে তার।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে চলছে পেস বিপ্লব। তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদরা দলের প্রথম পছন্দ। এদের মধ্য কারো অনুপস্থিতিতে এবাদত হোসেন দলে সুযোগ পান। তাছাড়া মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরিকেও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তিনি ব্যাট হাতে শেষদিকে দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে পারেন। এসব বিবেচনায় শরিফুলের ওয়ানডে বিশ্বকাপের দলের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশ মলিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link