মরুভূমিতে লিটন মরীচিকার পানে ছুটছেন

পা পিছলে যাচ্ছে। খাদের ঢালু রাস্তা বেয়ে উঠতে চাইছেন লিটন দাস। কিন্তু পায়ের নিচের মাটি যেন পরিণত হয়েছে বালুর আস্তরণে।

পা পিছলে যাচ্ছে। খাদের ঢালু রাস্তা বেয়ে উঠতে চাইছেন লিটন দাস। কিন্তু পায়ের নিচের মাটি যেন পরিণত হয়েছে বালুর আস্তরণে। যতই দিচ্ছে জোর, ততই পিছলে যাচ্ছে। ব্যাট হাতে সবকিছু করতে চেয়েও লিটন তাই প্রতিবারই ব্যর্থ।

ঢাকা ক্যাপিটালস দলে কেন লিটনকে অধিনায়কত্ব দেওয়া হল না, সে প্রশ্ন উঠেছিল বেশ জোরালভাবে। কেননা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ঠিক আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতিয়েছেন অধিনায়ক লিটন। তবে প্রশ্নের সাথে সাথে মানুষ উত্তর খুঁজে নিয়েছে- তাকে নির্ভার রাখতেই ফ্রাঞ্চাইজি দেয়নি কোন বাড়তি দায়িত্ব।

তেমনটি ঘটলে বেশ প্রশংসা প্রাপ্য ঢাকা ক্যাপিটাল টিম ম্যানেজমেন্টের। লিটন যে রানে নেই। বহু প্রচেষ্টা চালিয়েও তিনি রান করতে পারছেন না। ব্যাটিংয়ের সেই মাধুর্য তো ঠুনকো। দিনশেষে নামের পাশে চাই রান। বড় না হোক, ছোট ছোট কার্যকর ইনিংস অন্তত প্রয়োজন। একজন ব্যাটারের আত্মবিশ্বাস বাড়ে সেসবে।

সব ধরণের ক্রিকেট মিলিয়ে শেষ দশ ম্যাচে লিটন সর্বোচ্চ ৪০ রানের একটি ইনিংস খেলেছেন। এই দশ ম্যাচের মধ্যে টেস্টের চারটি ইনিংসও রয়েছে। এরপরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি বিপিএলে- ৩১ রান করেছিলেন রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে।

এছাড়া লিটনের ব্যাট শুষ্ক এক মরুভূমি। তীব্র খরায় লিটন ছুটছেন মরীচিকার পানে। যেদিকেই মনে হচ্ছে রানের জল বইছে, সেদিকেই ছুটছেন তিনি। কিন্তু রান আর পাওয়া হচ্ছে না। বহু চেষ্টা করেও রান আর লিটনের মেলবন্ধন হচ্ছে না। তাতে করে অবশ্য লিটন নিজের জন্যেই বিপদ ডেকে আনছেন।

সামনেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। অন্তত রানে থাকা ভীষণ প্রয়োজন ছিল তার। নতুবা তাকে রেখেই হয়ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরিকল্পনা সাঁজাতে হবে, বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টকে। এমন একটা বিষয় নিশ্চয়ই টাইগার সমর্থকরা প্রত্যাশা করেন না। কিন্তু বাস্তবতা অন্তত লিটনকে সেদিকেই ঠেলে দিচ্ছে।

প্রচণ্ড চেষ্টার পরও যখন রান পাওয়া যাচ্ছে না, তখন বরং বিশ্রাম নেওয়াই শ্রেয়। অহেতুক নিজের উপর চাপ বাড়িয়ে ক্যারিয়ারের ‘ফুলস্টপ’ টেনে আনার কোন মানে নেই। বিপিএল শেষে লিটনকে নিশ্চয়ই বিশ্রাম দিতে চাইবে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু লিটন ক্যালিবারের একজন ব্যাটারকে বাদ দেওয়া ভীষণ কঠিন।

লিটন অবশ্য সেই রাস্তাই প্রশস্ত করছেন প্রতি মুহূর্তে। এক্ষেত্রে অবশ্য লিটনের ভাগ্যকে দোষারোপ করা যেতে পারে। এছাড়াও মানসিক অবসাদ হতে পারে অন্যতম কারণ। তাইতো সময়মত বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হতো তাকে। এবার সম্ভবত দেরী হয়েই গেল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে লিটন ছাড়াই খেলতে চলেছে বাংলাদেশ- এমন মানসিক প্রস্তুতি দর্শকদের নেওয়া উচিত, সেই সাথে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টেরও।

Share via
Copy link