বাবর আজম নামের কেউ আর নেই। থাকলেও কেউ আর তাঁকে চেনে না। তিনি নিজেও সম্ভবত আয়নায় নিজেকে চিনতে পারেন না। কিংবা টেলিভিশনে নিজের খেলা দেখলে চিনতে পারেন না। আসলে এই ধরার বুকে বাদশাহ বাবর নামের কোনো ব্যাটিং গ্রেট আদৌ কোনোদিন ব্যাট করতে নামেননি। কাভার ড্রাইভে মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেওয়া মানুষটা আর নেই।
বাবর আজম আর ফ্যাবুলাস ফাইভের কেউ নন। আসলে তিনি ফ্যাবুলাস ফোরের কেউও ছিলেন না কখনও। তাঁকে ঢোকাতে এক সময় মার্টিন ক্রোর ফ্যাবুলাস তত্ত্ব ভাঙা হয়। তখন বাবর আজম আসলেই যোগ্য ছিলেন। তবে, এখনকার প্রেক্ষাপট ভিন্ন।
এখন তিনি জনগুরুত্বপূর্ণ কেউ নন, তাকে নিয়ে আজকাল কাব্য করা মুশকিল। বাবরের অবস্থা আজকাল এমন যে, মনে হতে পারে বাবর আজম নামের গুরুত্বপূর্ণ কেউ কোনো দিনও ছিলেনও না। তিনি নিজেই নিজের নামের বিপদ ডেকে এনেছেন।
আসলে ফ্যাবুলাস ফোর তো গেছেই, ফ্যাবুলাস ফাইভের প্রায় কেউই তাদের সুদিনে নেই। এক জো রুটকে বাদ দিলে বাকি সবাই টিকে আছেন নিজেদের ছায়া হয়ে, কেবলই যেন শেষ বিকালের অপেক্ষা, স্রেফ মনের টানে ব্যাটটাকে আরেকটু এগিয়ে নেওয়ার তাড়ণা।
বাবর অবশ্য বাকি চারজনের তুলনায় বেশ তরুণ। তবুও তাঁর তাড়নায় যেন বিশাল ঘাটতি। বাবর আজম যেন আজকাল আর বাদশাহ বাবর নন, যেন তিনি সাধারণ একজন। অতি-সাধারণ একজন। ডাইনিং টেবিলের পাশে পড়ে থাকা চেয়ারটা যেমন, কিংবা টেবিলে আধ খাওয়া এক গ্লাস পানি।
ব্যাস, এই তো – তিনি থাকলেই কি আর না থাকলেই বা কি। বাবর আজম তো আর বাদশাহ নন। তিনি তো আর সেই ব্যাটার নন – যিনি ব্যাট করতে নামার সময় বুকের ভেতর থেকে সাধারণ একজন দর্শক বলে উঠবে – আইজকা একটা বিরাট ফাটাফাটি হইবো।
হ্যাঁ, বাবর আজম আর ফাটাফাটি কেউ নন। তাঁর পক্ষে আর বিরাট ফাটাফাটি কিছু করা সম্ভব নয়। তিনি এখন খুবই সাদামাটা, মলিন। কাশফুলের শুভ্রতা বা সুন্দরতা তাঁর ফিঁকে হয়ে গেছে।
সাজ সাজ রব তুলে আসা সুবিশাল সাগরের গর্জন তাঁর ব্যাটে আর আসে না। বাবরের বাদশাহী ব্যাটিংটা আজকাল আর ঠিক আসে না। তিনি ব্যাট হাতে নামলে দিলের ঘণ্টা আর বাজে না। তাঁর ব্যাটিংটাও পাকিস্তানের আজকাল আর কাজে আসে না। হয়ত, মর্ত্যের বুকে বাদশাহ বাবর নামের কেউ আর ব্যাট করতে আসেন না।