ডেভিড মালান দেখালেন নিজের ক্লাস। কেন তাঁর মত ব্যাটারদের দলে রাখা উচিত, সে প্রশ্নেরও উচিৎ জবাব দিলেন। সকল প্রতিকূলতার মাঝে দাঁড়িয়ে মাথা ঠাণ্ডা রাখা বেশ বড় এক গুণ। হিসেব কষে ম্যাচ জয়ের পথে জাহাজ পরিচালনা বাড়তি দক্ষতার পরিচয় বহন করে। চট্টগ্রাম কিংসের বিপক্ষে সেসব কিছুই করে দেখালেন ইংলিশ এই বা-হাতি ব্যাটার।
মাত্র ১২২ রানের লক্ষ্যমাত্রা। সহজ জয়ই মনে হচ্ছিল ফরচুন বরিশালের জন্যে। কিন্তু যাত্রাপথ মোটেও সহজ ছিল না। শুরুতেই একটা গণ্ডগোল পাকিয়ে ফেলেছিলেন খোদ মালান। ভুল কলে অধিনায়ক তামিম ইকবালকে রান আউটের মুখে ঠেলে দেন তিনি। অধিনায়ক প্রচণ্ড নাখোশ ছিলেন তার প্রতি।
নিজের ভুলটা তখনই বুঝে ফেলেছিলেন মালান। তাইতো দলের জয় নিশ্চিত করা পর্যন্ত মাঠে থেকেছেন। দ্রুত চার উইকেট পতনে বিপাকে ছিল বরিশাল। সেখান থেকে ইনিংস বিল্ডআপ করেছেন। ট্রিকি উইকেটে দাঁড়িয়ে চট্টগ্রামের বোলারদের দেখেশুনে খেলেছেন বা-হাতি এই ব্যাটার।
ব্যক্তিগত ইনিংসে যুক্ত করেছেন ৫৬ রান। এই ইনিংসটি মালানের সক্ষমতার এক উজ্জ্বল প্রতিফলন হয়ে রইল। ৫৬ রানে চার উইকেট হারায় ফরচুন বরিশাল। তামিম ইকবাল, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিমের মত বড় নামগুলো ততক্ষণে প্যাভিলিয়নে। তখন মালান ইনিংস বিল্ডআপে দিয়েছেন নজর। মোহাম্মদ নবীর সাথে পার্টনারশিপ গড়তে চেয়েছেন। নীরব থাকলেও যোগ্য সঙ্গ দিয়ে গেছেন নবী।
একটা পর্যায়ে ২৩ বলে তার রান ছিল ২০। টি-টোয়েন্টি বিবেচনায় সেটা বড্ড বেমানান। কিন্তু ম্যাচের পরিস্থিতির দাবি ছিল সেটাই। কিন্তু যখন একটা জুটি পেয়ে গেছে স্থিতিশীলতা। তখন তিনি ঠিকই পরিবর্তন করেছেন নিজের ব্যাটিং গিয়ার। বড় সব শট খেলেছেন।
দায়িত্ব নিয়ে দলকে জয় এনে দিয়েছেন ডেভিড মালান। ১৯ বল ও ছয় উইকেট হাতে রেখে শেষ অবধি জয় পেয়েছে ফরচুন। ততক্ষণে অধিনায়ক তামিমের রাগ গলে হয়ে গেছে বরফ শীতল। সতীর্থের ফিফটিতে ডাগআউটে দাঁড়িয়ে হাততালি দিতে দ্বিধা করেননি তামিম।
এমন সব রান তাড়া করতে ডেভিড মালানের অভিজ্ঞতা বড্ড প্রয়োজন। তাইতো কাইল মায়ার্সের মত আগ্রাসী ব্যাটাররা স্কোয়াডে থাকলেও, মালানদের যত্ন সহকারে দলের সাথে রাখতে হয়। এমন দুর্দিনের মালানরা ম্যাচ জয়ের পার্থক্য গড়ে দেন।
চট্টগ্রাম কিংসের বিপক্ষে বরিশালের ম্যাচটি ছিল ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় অবস্থান পোক্ত করার মিশনে মালান লিখেছেন বরিশালের জয়ের ভাগ্য। মালানের স্ট্রাইকরেট কিংবা খেলার ধরণকে প্রশ্নবিদ্ধ করবার উপায় নেই। দলের জন্যে যা প্রয়োজন তাই করেছেন বরিশালের ওপেনার।