রদ্রিগো বল কেড়ে নিলেন। সামনে এগিয়ে গিয়ে বল বাড়িয়ে দিলেন ভিনিসিয়াসের কাছে। ভিনি পাস বাড়িয়ে দিলেন এমবাপ্পের দিকে। তবে এমবাপ্পে সেটার নাগাল পেলেন না। দৃশ্যপটের বেশ খানিকটা দূর থেকে দৌড়ে এসে বলটা নিয়ন্ত্রণে নিলেন বেলিংহ্যাম। এরপর প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের কাছে টানতে খানিকক্ষণ নিজের পায়ে বল রাখলেন।
ততক্ষণে পেনাল্টি স্পটের আশপাশের জায়াগা হয়ে গেছে খালি। এমবাপ্পে সেই খালি জায়গার উদ্দেশ্যে দৌড় শুরু করলেন। বেলিংহ্যাম সেখানেই বল বাড়িয়ে দিলেন। বাকি কাজটা করতে একটুও ভুল করেননি এমবাপ্পে। বল জালে জড়িয়ে নিজের নামটি তুলে নেন স্কোরশিটে। শত অপেক্ষার পর, রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি গায়ে প্রথম গোল!
এরপর উদযাপনের জন্যে ছুটলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। পেছন পেছন ছুটেছেন ভিনিসিয়াস জুনিয়রও। এমবাপ্পে দু হাত বুকে বেঁধে নিজের ট্রেডিশনাল উদযাপন করলেন। তার দেখাদেখি ভিনিসিয়াসও উদযাপন করলেন ঠিক একই ভঙ্গিমায়। মুহূর্তেই দলের বাকিরা এসে যোগ দিলেন সেখানটায়।
অথচ সবাই ভেবেছিল, এমন কিছু ঘটবে না। এমবাপ্পে থেকে যাবেন আড়ালে। বাকিদের সাথে থাকবে মনমালিন্য। এমন সব ভবিষ্যতবাণী তো ইতোমধ্যেই দিয়ে ফেলেছেন অনেকেই। যদিও সময় এখনও অনেকটা বাকি। তবে দিনের প্রথম আলোই নাকি বলে দেয়, পুরো দিন কেমন যাবে। ঠিক তেমনই এক শুরু পেয়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে।
লম্বা সময় ধরে কিলিয়ানের জন্য অপেক্ষা করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। দুই বার তো প্রায় চলেই এসেছিলেন তিনি। তারপরও কত নাটকীয়তার মঞ্চায়ন। এক সময় তিক্ত হয়ে উঠেছিল সমর্থকেরা। গত মৌসুমে ভিনিসিয়াস চ্যাম্পিয়ন্স লিগ আর লা লিগা জেতানোর পর এমবাপ্পেকে প্রয়োজন নেই এমন গুঞ্জনও হয়েছিল প্রবল।
কিন্তু সব জল্পনার পথ পেরিয়ে রিয়ালের সাদা জার্সিটা নিজের গায়ে জড়ালেন। অনুশীলনে তিনি সতীর্থদের সাথে হাসি-ঠাট্টায় মেতে উঠলেন। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ল। একসাথে অনেক তারকা থাকলে নাকি কোন্দল বেড়ে যায়। অবশ্য রিয়াল মাদ্রিদ বরাবরই তারকায় ঠাসা দল। এখন অবধি কোন্দলের কোন গুঞ্জনই সত্য বলে প্রমাণিত হয়নি।
সেই ধারা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর মাদ্রিদের তরুণ প্রজন্ম। তারা সাদরে গ্রহণ করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পেকে। ভিনিসিয়াস, বেলিংহ্যাম, রদ্রিগোরা প্রত্যেকেই এক-একটি উজ্জ্বল তারকা। রিয়াল মাদ্রিদ নামক গ্যালাক্সি-তে যুক্ত হয়েছে আরও একটি নক্ষত্র। তাতে করে অবশ্য আমুল বদলে যায়নি মাদ্রিদের ভারসাম্য।
এমবাপ্পের শুরুটা হয়েছে গোল দিয়ে। সেটা যে আরও কয়েকশো গোলের শুরু- তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। রিয়ালের শুভ্র জার্সিতে সবকিছু জিততে এসেছেন কিলিয়ান। প্রথম শিরোপার স্বাদ পেয়ে গেলেন তিনি। তাকে সহয়তা করতে কোন প্রকার কার্পণ্য করছে না গোটা দল। এখানেই সম্ভবত রিয়াল মাদ্রিদ বাকিদের চাইতে এগিয়ে যায়। বড় বড় তারকা সামলানো তো চাট্টিখানি কথা নয়।