মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট যেন এক গোলকধাঁধা। তবে তা অবশ্য বাংলাদেশের জন্যে বড্ড পয়া। এই মাঠেই তো ধরাশায়ী হয়েছে ক্রিকেটের মোড়ল। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ড আর ২০১৭-এ অস্ট্রেলিয়া হাবুডুবু খেয়েছে শেরে বাংলার বাইশ গজে।
তবুও উইকেট নিয়েই যত দুশ্চিন্তা বাংলাদেশের। নয়া অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত শুরুতেই এসেছেন বাইশ গজে। কথা বলেছেন পিচ কিউরেটর গামিনি ডি সিলভার সাথে। এরপর হয়ে গেল ত্রিপক্ষীয় আলোচনা সভা।
সেন্টার উইকেটে দাঁড়িয়ে থেকে এবার আলাপে যুক্ত হলেন হেড কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে। তিনজনে মিলে যেন আলোচনা করে ঠিক করলেন উইকেট কেমন হওয়া উচিৎ। গামিনিও যেন শুনে নিলেন স্বাগতিকদের চাহিদা।
বর্তমান সময়ে অন্যতম ধারাবাহিক দল নিউজিল্যান্ড। সেই দলকে হোয়াইট ওয়াশ করবার সুযোগ হাতছানি দিয়ে ডাকছে বাংলাদেশকে। তাইতো উইকেটটা বুঝে নেওয়া দরকার। খুটিয়ে খুটিয়ে দেখেছেন প্রধান কোচ, অধিনায়ক।
দস্তানা হাতে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানও দেখেছেন উইকেট। স্ট্যাম্পের পেছনে থেকেই তো তিনি বেশ ভাল আন্দাজ করতে পারেন উইকেটের ধরণ। তিনি সে প্রচেষ্টাই করলেন। উইকেট বোঝা তো তার নিজের জন্যেও প্রয়োজন।
ব্যাট হাতে প্রত্যাবর্তন খুব একটা সুখকর হয়নি সোহানের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট ম্যাচে আগ্রাসী শুরু করেও থেমেছেন দ্রুতই। টেস্টের টেম্পারমেন্টের সাথে উইকেটে টিকে থাকতে হলে বাইশ গজটা বোঝা প্রয়োজন।
বিস্ময়ে ভরা হোম অব ক্রিকেটের উইকেট নিয়ে অবশ্য দুর্নামের শেষ নেই। এই মাঠে বহু অবিস্মরণীয় জয় এসেছে। তবে মন্থর গতির উইকেটের সাথে সাথে দ্রুতই উইকেটের দশা বেগতিক হওয়া নানা মহলে সমালোচনার জোগান দিয়েছে। সে জায়গা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার যেন উপায়ই নেই।
মিরপুরকে উদাহরণ হিসেবে ধরে সিলেটে বাংলাদেশের পাওয়া জয়কেও খাটো করে দেখছেন অনেকে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে দু’টো উইকেটের ফারাক রয়েছে বিস্তর। সিলেটের স্পোর্টিং উইকেটে নিজেদের সক্ষমতার প্রদর্শন করেই ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ দল।
তবে, মিরপুর যেহেতু এক ধুম্রজাল, সেটা সম্পর্কে আগাম জ্ঞান থাকা তাই ভীষণ জরুরি। তাইতো কোচ, অধিনায়কের দিনের প্রথম কাজই ছিল উইকেট পরিদর্শন।
তাছাড়া দলের কম্বিনেশন কেমন হবে, স্পিনার বাড়ানো হবে নাকি পেসার, সেসবের জন্যেও পিচ রিপোর্ট জানা জরুরী। ঠিক সেকারণেই ঢাকায় বাংলাদেশের প্রথম অনুশীলনের দিন উইকেটই ছিল আকর্ষণের কেন্দ্রে।