অভাগার সাগরে পানির দেখা

আইপিএলে তিনি দল পেলেও ছিলেন অনিয়মিত। ২০১৩ সালে সর্বোচ্চ ৯ ম্যাচ খেলেন তিনি। পরের দুই আসর আবার দল পেলেন না। ২০১৬ সালে দল পেলেও মোটে তিন ম্যাচ খেলার সুযোগ পান। এরপর বাজে ফর্মের কারণে পরের চার আসরে দলে বাইরে। অস্ট্রেলিয়ার জার্সি গায়েও তিনি চরম অধারাবাহিক। ইনজুরি আর বাজে ফর্মের কারণে বার বার ছিটকে গেছেন দল থেকে।

অস্ট্রেলিয়ার জার্সি গায়েও বেশ অনিয়মিত এক মুখ ছিলেন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দল পেলেও বার বার ইনজুরি বাঁধায় থমকে যেতে হয়েছে। এই ইনজুরি কাল হয়ে দাঁড়ায় ক্যারিয়ারে। অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার মিশেল মার্শের ক্যারিয়ারের ঘাটলে এমন চিত্রই দেখা মিলবে – বার বার ছিটকে গেছেন ইনজুরির কারণে। মেঘের পরেই রোদের মত আঁধার কাটিয়ে আলোর দেখা পেয়েছেন মার্শও।

গেল এক বছরে টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে সেরা পারফরমারদের একজন তিনি। খেলছেন নিয়মিতই। জাতীয় দলের পারফরম্যান্স দিয়ে সুযোগ পেয়ে যান আইপিএলের পঞ্চদশ আসরে। দিল্লী ক্যাপিটালসের হয়ে ২ কোটি রুপিতে বিক্রি হন তিনি। কথায় আছে অভাগা যেদিকে চায়, সাগর শুকিয়ে যায়। দূর্ভাগ্য পিছু হটেনি মার্শের। ইনজুরি সমস্যায় শুরুর দিকে খেলতে পারবেন না সেটা নিশ্চিত ছিল। কিন্তু এরই মাঝে কাল হয়ে দাঁড়ায় করোনা!

করোনায় আক্রান্ত হয়ে আবার ছিটকে গেলেন। উড়ন্ত ফর্মে থাকা সত্ত্বেও আসরের প্রথম ছয় ম্যাচে খেলতে পারলেন না। অবশ্য মার্শের পোড়া কপাল এবারই প্রথম নয়। ২০২০ আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে নিজের প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমেই ইনজুরিতে পড়ে ছিটকে যান পুরো আসর থেকে। ২০২১ আইপিএলেও ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি।

এবারের আইপিএলের শুরুটাও ছিল এমনই। তবে বিধাতা এবার যেন মুখ তুলে তাকিয়েছে। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে দলে ফিরেন মার্শ। কিন্ত ব্যাঙ্গালোরের বিপক্ষে আইপিএলে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে করলেন ২৪ বলে মাত্র ১৪ রান। ব্যাস, কচ্ছপগতির ইনিংসে জন্ম দিলেন সমালোচনার। এরপর কলকাতার বিপক্ষে ৭ বলে ১৩ ও লখনৌর বিপক্ষে খেললেন ২০ বলে ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস। হায়দ্রাবাদ-চেন্নাইয়ের বিপক্ষে রান পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি।

মোদ্দাকথা জাতীয় দলে গেল এক বছরে যে ফর্মে ছিলেন সেটি আইপিএলে টেনে আনতে পারেননি। প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফরম করতে পারছিলেন না এই অজি অলরাউন্ডার। তবে গেল দেখা মিলল মার্শ ব্যর্থতার উল্টো পিঠ। রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে খেললেন ৬২ বলে ৮৯ রানের তাণ্ডব এক ইনিংস। ৭ ছক্কা ও ৫ চারে ১৪৩ স্ট্রাইক রেটে কাল দেখা মিলল মার্শের বিধ্বংসী রূপের।

শুধু যে ব্যাট হাতেই তাণ্ডব চালিয়েছেন এমন না; বল হাতেও দেখিয়েছেন দাপট। করেছেন এবারের আসরে ব্যক্তিগত সেরা পারফরম্যান্স। ৩ ওভারে ২৫ রানের বিনিময়ে শিকার করেন দু’টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। ব্যাটে-বলের অনবদ্য পারফরম্যান্সে প্রথমবারের মত জিতলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কারও।

দলের জয়েও অবদান রাখলেন, জিইয়ে রাখলেন প্লে অফের আশাও; সেই সাথে ফর্মে ফেরাটাও ছিল স্বস্তির নিঃশ্বাস। গেল এক বছরে অস্ট্রেলিয়ার জার্সি গায়েও ছিলেন ফর্মের তুঙ্গে। প্রায় ৩৭ গড়ে ছয়শোর বেশি রান করেছেন তিনি।

আইপিএলে তিনি দল পেলেও ছিলেন অনিয়মিত। ২০১৩ সালে সর্বোচ্চ ৯ ম্যাচ খেলেন তিনি। পরের দুই আসর আবার দল পেলেন না। ২০১৬ সালে দল পেলেও মোটে তিন ম্যাচ খেলার সুযোগ পান। এরপর বাজে ফর্মের কারণে পরের চার আসরে দলে বাইরে। অস্ট্রেলিয়ার জার্সি গায়েও তিনি চরম অধারাবাহিক। ইনজুরি আর বাজে ফর্মের কারণে বার বার ছিটকে গেছেন দল থেকে।

ব্যাটে- বলের মার্শের এই পারফরম্যান্স অবশ্যই আশা জাগিয়েছে নতুন করে। সামনেই নিজের দেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। মার্শ নিশ্চই চাইবেন বিশ্বমঞ্চের শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াইয়ে স্কোয়াডে নিজের জায়গাটা পাঁকা করতে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...