দানি আলভেজ, যে পাপে স্বর্গত্যাগ

ফুটবলারদের নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়া আজকের নতুন ঘটনা নয়। অপহরণ, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, ধর্ষণ এমনকি হত্যার মতো গুরুতর অভিযোগেও জেলে যেতে হয়েছে ফুটবলারদের। রেনে হিগুয়েতা, ফ্রেডি রিংকন, বেঞ্জামিন মেন্ডি, রোনাদিনহোদের সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন হলেন দানি আলভেস। স্পেনের বার্সেলোনার এক তরুণী তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে তাঁকে। 

কাতারে হতাশাজনক এক বিশ্বকাপ কাটিয়েছে ব্রাজিল। ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে শেষ আট থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে সেলেসাওদের। কাতার বিশ্বকাপে ক্যামেরুনের বিপক্ষে ৩৯ বছর বয়সে অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড হাতে মাঠে নামেন দানি আলভেস, বনে যান বিশ্বকাপের সবচেয়ে বেশি বয়সী অধিনায়ক।

অথচ, বিশ্বকাপের মাসখানেক পেরোতেই নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হয়েছেন এই তারকা। এবারে ধর্ষণের অভিযোগে জেলে যেতে হয়েছে তাঁকে। ফুটবলারদের নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়া আজকের নতুন ঘটনা নয়। অপহরণ, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, ধর্ষণ এমনকি হত্যার মতো গুরুতর অভিযোগেও জেলে যেতে হয়েছে ফুটবলারদের।

রেনে হিগুয়েতা, ফ্রেডি রিংকন, বেঞ্জামিন মেন্ডি, রবিনহো কিংবা রোনাদিনহোদের সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন হলেন দানি আলভেস। স্পেনের বার্সেলোনার এক তরুণী তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে তাঁকে। 

ঘটনার সময়কাল গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর। ঘটনাস্থল বার্সেলোনার সাটন নাইট ক্লাব। স্প্যানিশ গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, ৩৯ বছর বয়সী তারকা এই ফুটবলার প্রথমে মেয়েটিকে ভিআইপি জোনে ড্রিংক করার জন্য ডাকেন। এরপর বাথরুমে দরজা আটকে জোর করে মেয়েটির অন্তর্বাসে ভেতর হাত ঢুকিয়ে দেন।

মেয়েটির দাবি তিনি বাঁধা দেবার চেষ্টা করলেও আলভেস থামেননি। এরপর কোনোরকমে তিনি বাইরে বেরিয়ে আসেন। পরে এক বান্ধবী এবং নিরাপত্তারক্ষীর সহায়তায় নাইট ক্লাব থেকে বেরিয়ে যান। 

পরবর্তীতে ২ জানুয়ারি আলভেসের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান সেই তরুণী। বার্সেলোনার সিটি কাউন্সিল এরপর আলভেসের বিরুদ্ধে শারীরিক আক্রমণ এবং হেনস্তার অভিযোগ এনে থানায় হাজিরা দেবার নির্দেশ দেয়। এরপর ঘটনার ২০ দিন বাদে আলভেসকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়। আদালতে পাঠানো হলেও ট্রায়ালের আগ পর্যন্ত তাঁকে জেলেই রাখার আদেশ দিয়েছেন বিচারক। 

বার্সেলোনা, জুভেন্টাস, প্যারিস সেইন্ট জার্মেই, সাও পাওলো হয়ে আলভেস বর্তমানে খেলছিলেন মেক্সিকান ক্লাব উনামে। সেখান থেকে শ্বাশুরির অন্ত্যষ্টক্রিয়ায় অংশ নেবার জন্য ক্লাব থেকে ছুটি নিয়ে বার্সায় আসেন এই তারকা। প্রথমে বার্সেলোনার এক পুলিশ স্টেশনে হাজিরা দেন তিনি। এরপর স্টেশন থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠার পর গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

এরপর আদালতে হাজির করা হলেও জামিনের অযোগ্য অপরাধ দেখিয়ে তাঁকে পুনরায় জেলে পাঠানো হয়। বিচারকরা আশংকা করছিলেন একবার ছাড়া পেলে স্পেন ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারেন আলভেস। সে কারণেই জামিন দেয়া হয়নি তাঁকে। এদিকে উনামও ইতোমধ্যেই আলভেসের সাথে সমস্ত সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছে। 

আলভেস অবশ্য নিজেকে নির্দোষ দাবিই করছেন। স্প্যানিশ টিভিতে পাঠানো ভিডিও বার্তায় এই তারকা বলেন, ‘আমি সত্যিই দু:খিত, আমি জানি না ওই ভদ্রমহিলা কে। আমি সত্যিই তাঁকে চিনি না। আমি কোনোদিন তাঁকে দেখেছি বলে মনে পড়ে না। আমি আমার জীবনে কখনোই কারো ব্যক্তি ব্যাপারে নাক গলায়নি। আমি কি করে একজন নারীর সাথে এমনটা করতে পারি!’

তবে সেদিন রাতে নাইট ক্লাবে থাকার কথা স্বীকার করে নেন তিনি। পরে অবশ্য দাবি করেন, ওই নারীকে আলভেজ চিনেন। আর ওই মেয়েটিই নাকি জোর করে ঝাপিয়ে পড়েন আলভেজের ওপর।

এদিকে তাঁকে জেলে রাখা নিয়েও বিপাকে আছে স্প্যানিশ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। শুরুতে এক জেলে রাখা হলেও নিরাপত্তা শংকায় পরবর্তীতে অন্য জেলে স্থানান্তরিত করা হয়। বন্দি হিসেবে আলভেসের জনপ্রিয়তার কথা বিবেচনা করেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্প্যানিশ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...