মিথুনের ‘অধিনায়কোচিত’ ইনিংস

১৩ রানে নেই ৩ উইকেট। সিলেট স্ট্রাইকার্স তখন রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে। শরিফুলের পেসের সামনে দিগ্বিদিক জ্ঞান হারানোর পথে সিলেটের ব্যাটিং অর্ডার। এই যখন দলের অবস্থা, ঠিক তখনই ত্রাতা হয়ে হাজির হলেন মোহাম্মদ মিথুন। একাই লড়ে গেলেন সিলেট অধিনায়ক। অধিনায়কের সে নিঃসঙ্গ লড়াইয়ে লড়াই করার মতো পুঁজিও পেয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স।

এবারের বিপিএলের শুরুতে ওপেনার হিসেবেই খেলেছিলেন মোহাম্মদ মিথুন। শুরুটাও হয়েছিল দুর্দান্ত। ২৮ বলে খেলেছিলেন ৪০ রানের ইনিংস। কিন্তু পরের তিন ম্যাচে আর ব্যাট হাতে খুঁজেই পাওয়া যায়নি এ ব্যাটারকে। শেষ ম্যাচে ছিলেন না একাদশেই। এমন সময়ে আবার মাশরাফি বিপিএল থেকে বিরতি নেওয়ায় অধিনায়কত্বের গুরুদায়িত্ব পড়লো তাঁর কাঁধে।

এমনিতে টানা ৫ ম্যাচ হেরে জয়শূন্য সিলেট এখন পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে। তার উপর ছন্দে নেই দলের কোনো ব্যাটার। এমনকি মোহাম্মদ মিথুন নিজেও ব্যাট হাতে টুর্নামেন্ট জুড়ে স্বস্তিতে ছিলেন না। কিন্তু এত নেতিবাচকতার মাঝেও কিছুটা হলেও দলের মধ্যে ইতিবাচকতা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন এ ব্যাটার। ১৩ রানে ৩ উইকেট হারানো সিলেট তাঁর ব্যাটে ভর করেই পেয়েছে ১৪২ রানের লড়াকু সংগ্রহ। যেখানে তিনি একাই খেলেছেন ৪৬ বলে ৫৯ রানের একটি ইনিংস।

 

তবে এ দিন মিডল অর্ডারে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন মিথুন। শুরুটা করেছিলেন সামিত প্যাটেলকে নিয়ে ৫৭ রানের জুটি গড়ে। ওই জুটিতেই প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে সিলেট। তবে শরিফুলের শুরুর ধাক্কায় সিলেটের রান তখনও মন্থর গতিতে আটকে। সেখান থেকে রানের গতি বাড়ানোর কাজটাও করলেন মিথুন।

প্রথমে আরাফাত সানি, এরপর মোসাদ্দেক- ঢাকার এ দুই স্পিনারের দুই ওভারে হাঁকান দুটি করে চার ও ছক্কা। এরপর উসমান কাদিরের এক ওভারেও একটি ছক্কা ও চার মারেন মিথুন। তিন স্পিনারের বিপক্ষে মিথুনের এমন রুদ্রমূর্তিতেই পাল্টে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট। ডান হাতি এ ব্যাটার নিজেও পৌঁছে যান ব্যক্তিগত অর্ধশতকে। ৩৭ বলে ফিফটি পূরণ করেন তিনি।

ফিফটি পূরণের পর যদিও শেষ দিকে  পাওয়ার হিটিং সেভাবে করতে পারেননি। ইনিংসের প্রায় সিংহভাগ সময়েই ঢাকার বোলিং আক্রমণ দারুণ ভাবেই প্রতিহত করেছেন তিনি। ৪ চার আর ৩ ছক্কায় ৫৯ রানের ইনিংস খেলে আউট হন এ ব্যাটার। তবে ততক্ষণে লড়াই করার মতো পুঁজি পেয়ে যায় সিলেট। প্রথম ১০ ওভারে ৫৫ রান করা সিলেট শেষ ওভারে তোলে ৮৭ রান। যে সংগ্রহের পথে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন মিথুন।

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link