ফাইনালের পর ঘুমাতে পারছেন না মোহিত শর্মা

শেষ ওভারে ১৩ রান দরকার। উইকেটে শিভম দুবে আর রবীন্দ্র জাদেজার মত ভয়ংকর দুই ব্যাটার। এমন সময় বোলার মোহিত শর্মার পক্ষে বাজি ধরবেন এমন লোক খুঁজে পাওয়াটা বেশ কঠিনই ছিলো। ফাইনালের স্নায়ুচাপের এমন কঠিন মুহূর্তে মোহিত যেন অসম্ভবকেই সম্ভব করে ফেলছিলেন।

প্রথম চার বলে মোহিত শর্মা দিলেন মোটে তিন রান। নিখুঁত লেন্থ কিংবা পারফেক্ট ব্যাক হ্যান্ড স্লোয়ার, মোহিত শর্মার প্রথম চারটি বল থেকে তাঁর বোলিংয়ের প্রসংশা ঝড়ছিলো সবার মুখে।

তবে শেষ দুটি বলে স্কিলের প্রয়োগটা ঠিকঠাক আর করতে পারলেন না মোহিত শর্মা। রবীন্দ্র জাদেজাকে করা পঞ্চম বলটি হয়ে গেলো হাফ ভলি, লং অন দিয়ে ছক্কা হাঁকালেন জাদেজা। শেষ বলে তখন দরকার চার রান। এবারও লাইন কিংবা লেন্থটা ঠিক রাখতে পারলেন না মোহিত।

 

লেগ স্ট্যাম্পের ওপর করা লো ফুলটস বলটিকে ফাইন লেগ দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠিয়ে চেন্নাইকে পঞ্চম আইপিএল শিরোপা জেতানোর উল্লাসে মেতে ওঠেন জাদেজা। মোহিত শর্মার তখন নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিলো না।

গুজরাটকে শিরোপা এনে দিতে না পারলেও একটুও ম্লান হয়নি শেষ ওভারে প্রবল স্নায়ুচাপ সামলে দুর্দান্ত প্রথম চার বল করা মোহিতের কীর্তি। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই দুর্দান্ত বোলিং করা মোহিতকে এখনো তাড়িয়ে ফিরছে শেষ দুটি বল। এমনকি সেদিন রাতে ঘুমাতেও পারেননি মোহিত।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মোহিত বলেন, ‘আমি আমার কাছে পরিষ্কার ছিলাম যে আমি কি করতে যাচ্ছি। নেটে আমি এসব পরিস্থিতিতে বোলিং করা অনুশীলন করেছি এবং এমন পরিস্থিতিতে এর আগেও আমি পড়েছি। তাই তখন আমি বলছিলাম যে আমাকে সব গুলো বল ইয়োর্কার করতে দাও এবং আমি আমার সামর্থ্যের ওপর ভরসা করছিলাম।’

মোহিত আরো বলন, ‘দলের বাকিরা শেষ দুই বলের জন্য আমার পরিকল্পনা জানতে চাচ্ছিলো। আমি বলেছিলাম আমি আবারো ইয়োর্কার করার চেষ্টা করব। মানুষ এখন অনেক কথাই বলবে কিন্তু এখন আর এসবের কোনো মানে নেই। আমি জানতাম আমি কি করতে যাচ্ছি।’

ফাইনালের শেষ দুই বলের ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা করছিলেন মোহিত, ‘আমি আবারো ইয়োর্কার করতে যাই। আমি তখন পূর্ণ মনযোগ দিতে চাচ্ছিলাম এবং নিজের সামর্থ্যের ওপর ভরসা করছিলাম। পুরো আইপিএল জুড়েই আমি এটা করে এসছি। বল যেখানে পড়ার কথা না সেখানে পড়লো আর জাদেজা তাতে ব্যাট লাগালো। আমি চেষ্টা করেছি, আমি আমার সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করেছি।’

ফাইনালের সেই রাতের পর ঘুমাতে পারেননি এবারের আইপিএলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী মোহিত। মোহিত বলেন, ‘আমি ঘুমাতে পারিনি। যদি আমি সেই দুটি বল আবার করতে পারতাম! এটা ভালো কোনো অনুভূতি না। কোথাও যেন কিছু একটা নেই৷ কিন্তু আমি এ থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link