ক্যারিয়ারের বড় একটা সময় খেলেছেন এই ছয় নম্বর পজিশনে। তবে গত সাত বছর ধরে চার নম্বর পজিশনেই থিতু ছিলেন মুশফিকুর রহিম। চান্দিকা হাতুরুসিংহে কোচ হয়ে আসার এক সিরিজ পরেই খেললেন একটি মাস্টার স্ট্রোক। সবাইকে অবাক করে দিয়ে মুশফিককে খেলালেন ছয় নম্বরের ভিন্ন রোলে।
তার চেয়েও বেশি অবাক করে নতুন পজিশনে যেন নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন মুশফিক। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজের পর এবার অ্যাওয়েতেও ছয় নম্বরে নিজের দুর্দান্ত ফর্ম ধরে রেখে ক্যারিয়ারের ৪৪ তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিলেন মুশফিক।
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে দল থেকে বাদ দেবার পর তাঁর ছয় নম্বার পজিশনে কে খেলবেন সেই আলোচনায় অনেকের নাম থাকলেও ছিলো না মুশফিকের নাম। তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে অনেকটা চমক হয়েই ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন মুশফিক।
সেই সিরিজে সিরিজসেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন মুশফিক। ওয়ানডে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরিটাও করেছিলেন সেই সিরিজেই। এবার বিদেশের মাটিতেও ধরে রাখলেন নিজের সেই ফর্ম।
মুশফিক যখন ব্যাটিংয়ে নামলেন তখন ১০২ রানে চার উইকেট হারিয়ে কিছুটা বিপদেই বাংলাদেশ দল। এরপর দলীয় ১২২ রানে তাওহিদ হৃদয়ও ফিরে গেলে আরো চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
তবে সেখান থেকে মেহেদি হাসান মিরাজের সাথে ৬৫ রানের জুটিতে বিপদ সামাল দেন মুশফিক। ব্যক্তিগত ১৯ রানে একবার জীবন পান তিনি। তারপর সেই পড়ে পাওয়া সুযোগ কাজে লাগিয়ে এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে বিপদ থেকে টেনে তুলতে থাকেন মুশফিক। ৬৩ বলে তুলে নেন নিজের ৪৪ তম অর্ধশতক।
যদিও অর্ধশতক পেড়োনোর পর নিজের ইনিংস খুব বেশি বড় করতে পারেননি মুশফিক। ৭০ বলে ছয় চারে ৬১ রান করে জশ লিটলের শিকার হন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। ইনিংস বড় করতে না পারার আক্ষেপ থাকলেও নিজের ৩৬ তম জন্মদিন রাঙিয়ে রাখলেন মুশফিক।
এই অর্ধশতকে একটি রেকর্ডেও নাম তুলেছেন মুশফিক। শ্রীলঙ্কান গ্রেট সনাথ জয়াসুরিয়ার পর সবচেয়ে বেশি বয়সী ক্রিকেটার হিসেবে জন্মদিনে হাফ সেঞ্চুরি করলেন মুশফিক। পেছনে ফেলেছেন ৩৫ তম জন্মদিনে অর্ধশতক করা ক্যারিবিয়ান গ্রেট ব্রায়ান লারাকে।
তবে সব ছাপিয়ে ছয় নম্বরে মুশফিকের এমন দুর্দান্ত ফর্ম নিশ্চয় স্বস্তি দিচ্ছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে। ছয় নম্বরে দলের চাহিদা অনুযায়ী স্ট্রাইকরেট মেনে যে মুশফিক ব্যাট করতে পারেন তা তিনি প্রমাণ করেছেন সবশেষ চার ওয়ানডেতে। বিশ্বকাপের আগে তাই এই পজিশন নিয়ে নির্ভার থাকতেই পারেন হাতুরুসিংহে।