মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশ দলের চিরকালীন সাথী। সেই ২০০৫ সাল থেকে শুরু করে বর্তমান সময় – দীর্ঘ ১৯ বছর তিনি বাংলাদেশকে সার্ভিস দিয়ে চলেছেন। আর এরই ব্যক্তিগত ও দলীয় বেশ কয়েকটা মাইলফলকে সঙ্গী হয়েছেন তিনি।
এবার রাওয়ালপিন্ডিতে তিনি পাকিস্তানের বিপক্ষে খেললেন ১৯১ রানের ইনিংস। মুশফিকের প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা লম্বা এই ইনিংসের সুবাদে বাংলাদেশ অল আউট হওয়ার আগে করে ৫৬৫ রান। টেস্ট ক্রিকেটে এটা বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
এর আগে ২০১৩ সালের মার্চে শ্রীলঙ্কার গলে বাংলাদেশ ৬৩৮ রান করেছিল। সেদিন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পেয়ে যান মুশফিক। শুধু মুশফিকই নয়, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসেরও সেটা প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি।
এরপর ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বেসিন রিজার্ভে ৫৯৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। সেদিন ডাবল সেঞ্চুরি করেন সাকিব আল হাসান। এদিনও দৃশ্যপটে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। সেদিন তাঁর ব্যাট থেকে আসে ১৫৯ রান।
এরপর বাংলাদেশের চতুর্থ সেরা টেস্ট ইনিংসে আরও বেশি উজ্জ্বল ছিলেন মুশফিকুর রহিম। সেদিন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুরে বাংলাদেশ ছয় উইকেট হারিয়ে ইনিংস ঘোষণা করার আগে ৫৬০ রান করে। মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ২০৩ রানে।
মানে টেস্টে বাংলাদেশের উজ্জ্বলতম দিনগুলোর সঙ্গী মুশফিকুর রহিম। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ দল ১২ বার ৫০০-এর ওপর রান করেছে। এর সবগুলোতেই খেলেছেন মুশফিক। ১২ টি ইনিংসের মধ্যে আটটিতেই কমপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিক।
যে চারটিতে ৫০ ছুঁতে পারেননি, এর মধ্যে একটিতে করেছেন ৪৩ রান। মানে, বাংলাদেশের ব্যাটিং দাপটের অন্যতম পূর্বশর্ত হল মুশফিককে ভাল খেলতে হবে। সব মিলিয়ে এই ১২ ইনিংসে মুশফিক রান করেছেন ১৩০৩ রান। অপরাজিত ছিলেন তিনটিতে। গড় ১৪৪.৭৮। এর মধ্যে সেঞ্চুরি পাঁচটা, যার মধ্যে তিনটিই ডাবল সেঞ্চুরি। আর হাফ সেঞ্চুরি তিনটি। টেস্টে বাংলাদেশের সাফল্যের জন্য মুশফিককে তাই অপরিহার্য্য না বলে আর উপায় থাকছে না।
টেস্টে মুশফিকের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ২১৯ রানের। শুধু মুশফিক নয়, সেটা বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসেরও সেরা ইনিংস। সেদিনও অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। এবারও প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। সেদিন বাংলাদেশ সাত উইকেটে ৫২২ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে।
মুশফিক পান ক্যারিয়ারের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। এর মধ্যে দু’টিই উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে। মহেন্দ্র সিং ধোনি, কুমার সাঙ্গাকারা কিংবা অ্যাডাম গিলক্রিস্ট আর কোনো উইকেটরক্ষক ব্যাটারেরই এই কীর্তি নেই! অব্যাহত থাকুক মুশফিকের এই জয়যাত্রা, তাতে দিন শেষে লাভবান তো বাংলাদেশই!