চারদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ। প্রথম দিনের কথা বলছি। দিনের খেলা তখনও চলছে।
হঠাৎই তড়িঘড়ি করে বিসিবির একটা গাড়ি মাঠ থেকে বেরিয়ে গেল। সবগুলো ক্যামেরার লেন্স যেন ওই গাড়িটার কাচ ভেদ করে কিছু একটা দেখার চেষ্টা করছে। কেননা কিছুক্ষণ আগেই একটা বল নাঈম ইসলামের চোখের দিকে ধেয়ে আসে। তিনি কোনভাবে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। তবুও বলটা নাঈমের চোখের একটু উপরে আঘাত করে। ফেটে যাওয়া কপালটা থেকে রক্ত বের হতে শুরু করলে মাঠে একটা গুমট হাওয়ার তৈরি হয়। সাথেসাথেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।
তবে শেষ পর্যন্ত স্বস্তির খবর হল বাংলাদেশ টাইগার্স ও হাই পারফর্মেন্সের মধ্যকার ম্যাচের প্রথম দিন বিকালের দিকেই আবার মাঠে ফিরে এসেছিলেন নাঈম ইসলাম। কপালে ব্যান্ডেজ নিয়েই তাঁকে মাঠে আসতে দেখা যায়। যদিও তাঁর পক্ষে আজ আর মাঠে নামা সম্ভব হয়নি। আঘাতটা মাথার দিকে বলে চারদিনের এই ম্যাচে তিনি আর মাঠে নামতে পারবেন কিনা সেটাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা।
নাঈমের এই ঘটনাটুকুতেই প্রথম দিন শেষ হয়। সেদিন সকাল সকাল রাজশাহীর পেস বোলিং উইকেটে হাসান মাহমুদ আগুন ঝড়িয়েছেন বটে তবে এরপর মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনাতেই বেশি সরগরম ছিল শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়াম। নানাঘটনার পর আবার দিনের শেষে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও আকবর আলীর ব্যাটিংও মুগ্ধতা ছড়িয়েছে।
ওদিকে বৃষ্টির কারণে দুইবার বন্ধ রাখতে হয়েছে মাঠের খেলা। নির্ধারিত সময়ের ৪০ মিনিট আগেই দিনের খেলা বন্ধ করতে হয়েছে। দেশের অন্যতম পেস সহায়ক উইকেটে দুজনই নিজেদের দলকে টেনে তোলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশ টাইগার্স ও হাই পারফর্মেন্স বিসিবির আলাদা দুটি বিভাগ।
দুটি ব্যানারেই চলছিল আলাদা করে ক্যাম্প। বাংলাদেশ টাইগার্সে আছে জাতীয় দলে থেকে বাদ পড়া ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকারদের মত তারকারা। আর এইচপিতে আছেন আকবর, মৃত্যুঞ্জয়দের মত উঠতি তারকারা।
এবার তাদের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে চারদিনের ম্যাচ। আজ রাজশাহীর বিভাগীয় স্টেডিয়ামে শুরু হয় বাংলাদেশ টাইগার্স ও হাই পারফর্মেন্সের এই ম্যাচ। পেস সহায়ক এই উইকেটে বল করতে নেমেই বাংলা টাইগার্সের হয়ে আগুন ঝড়ান হাসান মাহমুদ। গতি, বাউন্স ও নিয়ন্ত্রণে হাই পারফর্মেন্সের ব্যাটসম্যানদের হাঁপিয়ে তুলেন কিছুদিন আগেই ইনজুরি থেকে সেরে উঠা এই পেসার। বল হাতে আজ তিনি একাই তুলে নিয়েছিলেন তিন উইকেট।
ওদিকে ব্যাট হাতে পরে এইচপিকে খাদের কিনারা থেকে তুলে আনার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের দুই বন্ধু আকবর আলী ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। দুজনই ব্যাট হাতে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। তবে আগামীকাল সকালে বাংলা টাইগার্সের পেসারদের সামনে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে এই দুই ব্যাটসম্যানকে।
সবমিলিয়ে রাজশাহীতে বাংলাদেশের ক্রিকেটের যেন এক মেলা বসেছে। নিজেদের মধ্যে এমন সব ম্যাচ গুলো নিশ্চয়ই বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। তাইতো দলগত পারফর্মেন্সের চেয়ে ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সেই বেশি নজর সবার। কেননা এখান থেকেই তো প্রয়োজন হলে ডাকা হবে জাতীয় দলে। সেজন্যই রাজশাহীতে বসে প্রতিটি ক্রিকেটারের উপর বিশেষ নজর রেখেছেন দুই নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন ও আব্দুর রাজ্জাক।