ধারাভাষ্যকক্ষ থেকে ভেসে এলো, ‘আ রুথলেস সেশন অব পেস বোলিং’। এমন শব্দগুচ্ছের প্রধান প্রভাবক লিকলিকে গঢ়নের নাহিদ রানা। গতিবান একজন পেসার যে চোখের শান্তি, তাই তিনি প্রমাণ করছেন প্রতিনিয়ত। শুধু গতি না, মাথার ব্যবহারও করতে জানেন তিনি।
গতির বন্দনায় ভেসে যাচ্ছেন নাহিদ। দেশ ছাপিয়ে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন ইয়ান বিশপের কাছ থেকেও। ভিনদেশি ধারাভাষ্যকাররা তাকে বোলিং করতে দেখতে চান, অকপটে জানাচ্ছেন তা। অন্যদিকে লিটন দাস উইকেটের পেছন থেকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘শান্তি, শান্তি’।
ঠিক কতটা অভিভূত নাহিদ করে রেখেছেন গোটা ক্রিকেট বিশ্বকে। ম্যালকম মার্শালদের ভূমিতে দাঁড়িয়ে তিনি গতির নব ছন্দ শোনাচ্ছেন। ক্যারিবিয়ান ব্যাটারদের ভীত কাঁপিয়ে দিচ্ছেন। ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি- এমন অবস্থা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটারদের।
কিন্তু সেই নাহিদ, বুদ্ধিদ্বীপ্ত বোলিংও করতে জানেন। গতিতে ব্যাটারকে সেট করে, বাউন্সারে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়ে, ফ্লোটার স্লোয়ারে উইকেট তুলে নিতে জানেন। আবার শ্যামার জোসেফদের মাথায় আঘাত করে জানিয়ে দেন, প্রতিউত্তর দেওয়ার জন্যে বাংলাদেশের কাছেও অস্ত্র আছে।
ঠিক কবে এমন মন্ত্রমুগ্ধের মত বাংলাদেশি পেসারের বোলিং দেখেছে বিশ্ব, তা স্মৃতিতে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। যখন শুরু করেছিলেন নাহিদ, তখন বেশ এলোমেলো ছিল লাইন আর লেন্থ। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তিনি সেসবও শুধরে নিচ্ছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নির্দিষ্ট জায়গা ধরে বোলিংও করছেন।
তাতে করে জ্যামাইকা টেস্টে বাংলাদেশ রয়েছে চালকের আসনে। নাহিদ রানা প্রতিপক্ষের ব্যাটিং ভীতকে তছনছ করে দিয়েছেন একা হাতে। ঝর্ণা থেকে অবারিত পানির ঢলের চাইতেও সৌন্দর্য ছড়িয়ে যাচ্ছেন নাহিদ। ঝর্ণায় জেগে ওঠা রংধনু হয়ে সামনে চলে আসছে তার উইকেট সংখ্যাও। এখন স্রেফ সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থণা, তাকে অন্তত গিলে না খাক ইনজুরি নামক সেই দৈত্য-দানব।