তামিম ইকবালের অবসর ঘোষণার পর পেরিয়ে গেছে প্রায় একদিন। বাংলাদেশ ওয়ানডে দল পুনঃরায় নেমেছে অনুশীলনে। তবে কোথাও একটা হারিয়ে গেছে চনমনে ভাব। দুষ্টমি আর হাসি-ঠাট্টার কিঞ্চিৎ পরিমাণও দেখা মেলেনি। কিন্তু পেশাদারিত্বের খাতিরেই সবাই যথেষ্ট মনোযোগী।
একটু বাড়তি মনোযোগী অবশ্য কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে। তিনিই তো বেজায় চটেছিলেন তামিমের উপর। তামিমের শতভাগ ফিট না হওয়া বক্তব্যকে আনফিট ধরে নিয়েই তিনি করেছেন রাগারাগি। সেটাও নিশ্চিতভাবেই প্রভাবিত করেছে তামিমকে অবসর গ্রহণ করতে।
তাইতো জাতীয় দলের একাদশে তৈরি হয়েছে শূন্যস্থান। দীর্ঘদিন ধরে একপ্রান্ত আগলে রাখা তামিম ইকবাল যে চলে গেছেন নির্বাসনে। আর ঠিক সেকারণেই মোহাম্মদ নাইমের উপর হাতুরু রাখছেন বাড়তি নজর। দলের প্রায় প্রতিটা খেলোয়াড় তখন ফিল্ডিং অনুশীলনে ব্যস্ত। ঠিক সে সময়ে নাইমকে ডেকে সলা-পরামর্শ করলেন চান্দিকা।
যেন বলে দিতে চাইলেন, তোমার হাতেই এখন তোমার ভাগ্য। পথে নেই কোন বাঁধা। এদফা জাতীয় দলে থিতু হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। নাইমও সম্ভবত কড়া হেডমাস্টারের কথা মাথায় গেঁথে নিলেন। দলের বাকিরা তখনও বিভিন্ন পজিশনে ক্যাচ লুফে নেওয়ার অনুশীলন করতেই ব্যস্ত। তাছাড়া ত্রিশ গজ বৃত্তের ভেতর থেকে ফিল্ডিং করে পিনপয়েন্ট থ্রো করবার অনুশীলনও করেছে দলের সদস্যরা।
কিন্তু সবার আগে নাইম চলে গেলেন প্রস্তুত হয়ে নিতে। এরপর তিনি হাজির নেট অনুশীলনে। ততক্ষণে জাতীয় দলের পেসাররা, নিজেদের লাইন লেন্থের উপর কাজ শেষে প্রস্তুত নেটে বোলিং করতে। সেই সাথে একঝাক নেট বোলাররা তো ছিলেনই।
থ্রোয়ার, পেস বোলার, স্পিন বোলার এমনকি বোলিং মেশিনের বিরুদ্ধেও ব্যাটিং অনুশীলনটা করেছেন নাইম। নিজেকে পুরোপুরি প্রস্তুতই করে নিচ্ছেন নাইম। অন্যদিকে তার দিকে বাড়তি নজরও রেখেছেন কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে। এছাড়া সতীর্থ তাওহীদ হৃদয়ও নাইমের অনুশীলনে করেছেন সহয়তা। নিক পোথাসের তত্ববধানে নাইম বোলিং মেশিনে অনুশীলন করছিলেন।
এমন সময়ে হৃদয় বোলিং মেশিনের সেটিংস খানিকটা পরিবর্তন করে দেওয়ার পরামর্শ দেন। তাতে সম্মতি দেন সহকারী কোচও। এরপর আবার হৃদয়ের কাছ থেকে সবকিছু ঠিক আছে কি-না সেই সম্মতি নিয়ে নাইম নিজের অনুশীলনটি চালিয়ে যান।
বেশ লম্বা সময় ধরেই নাইম নিজের ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন। নিশ্চয়ই তিনি খানিকটা চাপ অনুভব করছেন। দলের অন্যতম সেরা ওপেনারের অবসরের ঠিক পরেই, তার সেই জায়গাটা নেওয়া খানিকটা চাপেরই বটে। চাপটা বরং প্রত্যাশার। অন্যদিকে স্বাভাবিক নিয়মে তামিম অবসরে চলে গেলে সম্ভবত নাইম মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করার সময়টুকু পেতেন।
তবে সিরিজের মাঝপথে তামিমের হুট করেই অবসরে চলে যাওয়াটা গোটা দলকেই মানসিকভাবে প্রভাবিত করেছে। সেদিক থেকে আলাদা হওয়ার কথা নয় নাইমে। এই চাপটা সামাল দিয়ে নাইমকে খেলতে হবে ফজল হক ফারুকি ছাড়াও আফগানিস্তানের তুখোড় স্পিন বোলারদের। স্নায়ুচাপটা সামলে নিতে পারবেন তো নাইম?