বাদল দিনের মুখরতায় মিরপুর

আকাশ ফেঁটে অঝোর ধারায় প্লাবিত গোটা ঢাকা। তীব্র তাপদাহের পর ক্রমশ আবহাওয়া যেন বৃষ্টিস্নাত স্নিগ্ধ দিনের দিকে হচ্ছে অগ্রসর। সেই সময়টা দুই হাতে লুফে নিতে কে না চায়। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা তার বিপরীত নয়।

মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে সকাল বেলা ছিল আফগানিস্তান দলের নির্ধারিত অনুশীলন। টেস্ট দলের বাইরে থাকা টাইগার ক্রিকেটাররা তবুও মাঠে এসেছেন। নিজেদের প্রস্তুতি সেরে নিতে। এমন সময়েই মুষুল ধারার বৃষ্টি। অনুশীলন করবার সুযোগ নেই।

তাই যেন শৈশবের সুখস্মৃতিগুলো দোলা দিয়ে গেল শামীম, নাসুমদের মনে। দুইজনে এক ছাতা নিয়ে মিরপুর ইনডোর থেকে হেঁটে হেঁটে চলে এলেন জিমের দিকে। পুরোটা সময় হাসি-ঠাট্টা আর খুনশুটিতে মেতে ছিলেন নাসুম ও শামীম। মাঝে ক্যামেরা দেখে যেন হাসির পরিমাণ আর খুনশুটি দুই-ই বেড়ে গেল। দাঁড়িয়ে দু’জনে ছবি তোলার সুযোগ করে দিলেন।

এরপর আবারও নিজেদের গন্তব্যের পথে ছুটে বেড়িয়েছেন দু’জনে। এর আগে অবশ্য বিশাল এক ছাতার নিচে রনি, রাব্বি ও নাঈম নিজেদের গা বাচিয়ে জিমের পথে হেটেছেন। চিরায়ত ক্রিকেট অনুশীলন সম্ভব নয়। তাইতো জিম করেই বৃষ্টিস্নাত দিনের অবসান ঘটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা।

তবে এই অনাকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে সম্ভবত আফগানিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দল। কেননা বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের আগে খুব বেশি অনুশীলন করবার সুযোগ নেই। দ্বিতীয় সেশনটা ভেসে গেল বৃষ্টির জলে। প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে কোনমতে ছুটে গেছেন প্রতিটা খেলোয়াড়।

সরঞ্জাম বাচানোই যেন সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা। ঘন্টাখানেক বৃষ্টি হলো গোটা ঢাকা শহরে। শান্তির পরশ বুলিয়ে দিয়ে গেল। সেই প্রশান্তি উপভোগ করলেন আফগান বোলিং কোচ হামিদ হাসান। তিনি বৃষ্টিতে ভিজে দৌড়ে বেড়ালেন। হোম ক্রিকেট জুড়ে। যেন মস্তিষ্কের শত চাপ অবারিত ধারার সাথে ভাসিয়ের দেওয়ার একটা প্রয়াস।

যদিও বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর আবারও কর্মতৎপরতা শুরু হয়ে যায় গোটা স্টেডিয়াম জুড়ে। আফগান ব্যাটাররা ছুটে গেছেন ইনডোরের দিকে। সেখানেই নিজেদের প্রস্তুতি সেরে নেওয়ার শেষ প্রচেষ্টা। অভিজ্ঞতার বিচারে বেশ পিছিয়ে আছে আফগানিস্তানের এই টেস্ট দল। বাংলাদেশের বিপক্ষে সুখস্মৃতি থাকলেও নির্ভার হওয়ার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই।

তাছাড়া পেস আক্রমণে আফগানদের পরাস্ত করবার প্রস্তুতি নিচ্ছে টাইগাররা। সেই বিষয়টি নিশ্চয়ই হামিদ হাসান আন্দাজ করতে পেরেছেন। তাইতো টাইগারদের বিপক্ষে ছক কষে নেওয়ার নব্য পদ্ধতি খুঁজে নিয়েছেন। বৃষ্টির পানির ফোটায় নতুন নতুন ডট যুক্ত করেছেন। এখন দেখার পালা একমাত্র টেস্টও ভেস্তে যাবে বৃষ্টির জলে, নাকি  হামিদ পারবেন নিজের আঁকা ছক তার শির্ষ্যদের দিয়ে বাস্তবায়ন করতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link