মিরপুর টেস্ট থেকে ছিটকে গেলেন নাঈম

হাতে থাকা ব্যাট, গ্লাভস ছুড়ে ফেলে দিলেন নাঈম হাসান। ব্যথায় নুয়ে পড়লেন তিনি। হাটু গেড়ে মাটিতে বসে রইলেন খানিকক্ষণ। মেডিকেল দলের সদস্য এসে হাজির হওয়ার আগেই বোলার মেহেদী হাসান রানা হাজির। তার করা বলটিই তো লেগেছে নাঈমের ডান-হাতের তর্জনীতে।

প্রচণ্ড ব্যথায় কাতরাতে থাকেন নাঈম। অস্বস্তি যেন ক্রমেই বেড়ে চলেছিল। দ্রুতই বরফের প্রলেপ দিয়ে ব্যথা উপশম করবার চেষ্টা চালানো হয় প্রাথমিকভাবে। দূর থেকেই হাতে চোট বেশ গুরুতরই ঠেকছিল। নিদেনপক্ষে আঙুলে চিড় ধরে যাওয়ার সম্ভব প্রবল।

তাতে করে শঙ্কা জেগেছে পরবর্তী টেস্ট ম্যাচে নাঈমের একাদশে থাকা নিয়ে। অথচ ঢাকা টেস্টে হতে পারতেন তিনি অন্যতম অস্ত্র। মিরপুরের ঘূর্ণি সহায়ক উইকেটে নাঈম হয়ত খাবি খাওয়াতে পারতেন কিউই ব্যাটারদের। বল হাতে সে কাজের প্রস্তুতি তিনি আগেই নিয়ে রেখেছিলেন।

তবে ব্যাট হাতেও দলের জন্যে শেষের দিকে অবদান রাখা চাই। সে জন্যেই ব্যাটিং অনুশীলন করছিলেন নাঈম হাসান। ইনিংসের শেষের দিকে প্রতিপক্ষ বোলাররা নিজেদের গতিতে পরাস্ত করতে চাইতে পারেন নাঈমকে। ঠিক সে কারণেই পেসারদের বিপক্ষে অনুশীলন করছিলেন তিনি।

তাকে প্রস্তুত করতে নেট বোলারদের পাশাপাশি মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ও মেহেদী হাসান রানার মত বোলারাও বল করে যাচ্ছিলেন। ঘুনাক্ষরে সম্ভবত নাঈম টের পাননি একটি বল তার দীর্ঘ অপেক্ষার পর পাওয়া সুযোগ কেড়ে নিতে পারে। তবে দুর্ভাগ্যের চরম পর্যায়ে গিয়ে ইনজুরি আক্রান্তই হলেন নাঈম হাসান।

বা-হাতি পেসার রানার বল সজোরে গিয়ে আঘাত করে নাঈমের গ্লাভসে। বলের গতির কারণে গ্লাভস ভেদ করে চোট পান নাঈম। ব্যথার তীব্রতায় তিনি হাতে থাকা ব্যাট ছুড়ে ফেলেন মাটিতে। এরপর এক ঝটকায় নিজের হাতকে গ্লাভসমুক্ত করেন।

ব্যথার কমাতে হাত ঝাড়তে ঝাড়তে বসে পড়েন মাটিতে। রানা চোটের তীব্রতা বুঝতে পেরে মেডিকেল সংশ্লিষ্টদের ডেকে পাঠান। মুহূর্তের মধ্যেই ডানহাতের তর্জনী খানিকটা ফুলে ওঠে। আঙুল যেন নাড়াতেই পারছিলেন না নাঈম। মিরপুর ইনডোরের পাশে বসেই প্রাথমিক সেবা-শুশ্রূষা করা হয় তাকে।

নিউজিল্যান্ড সিরিজেই লম্বা সময় পর জাতীয় দলে ফিরেছেন নাঈম হাসান। জাতীয় ক্রিকেট লিগে দূর্দান্ত পারফরমেন্সের পুরষ্কার হিসেবেই সিলেট টেস্টে একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন নাঈম। ১৫০ রানের ব্যবধানে সেই ম্যাচ জিতে নিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচের দুই ইনিংসে মিলিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছিলেন ডানহাতি এই  স্পিনার।

এমনকি হেডকোচ চান্ডিকা হাতুরুসিংহেও নাঈমের প্রশংসা করতে কার্পণ্য করেননি। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ও নিজের ভূমিকা নিখুঁতভাবে পালন করেছে। বিভিন্ন সময়ে সে রক্ষণাত্মক বোলার ছিল, কখনো কখনো সে আক্রমণও করেছে। সে ব্যাটারদের মনে অনেক সন্দেহ তৈরি করেছিল। কেন উইলিয়ামসনকে সে ভুগিয়েছে, তার ফলটাও পেয়ে যাচ্ছিল। তাকে নিয়ে আমি বেশ সন্তুষ্ট।’

মিরপুর টেস্টেও নিজের সামর্থ্য প্রমাণের চেষ্টা নিশ্চিতরুপেই করতে চেয়েছিলেন নাঈম। তবে সেটা সম্ভবত হচ্ছে না। তাকে মাঠের বাইরেই বসে থাকতে হচ্ছে। তার পরিবর্তে নবাগত হাসান মুরাদের অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনা আরও খানিকটা প্রবল হল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link