অলিম্পিকে বর্শা নিক্ষেপে সর্বোচ্চ দূরত্বের রেকর্ডটা ছিল আন্দ্রেস টর্কিল্ডসেনের দখলে; কিন্তু এখন আর নেই। তাঁর চোখের সামনেই তাঁর রেকর্ড ভেঙে নতুন গল্প লিখেছেন পাকিস্তানের আরশাদ নাদিম; ৯২.৯৭ মিটার পার করে তিনি এখন অলিম্পিক ইতিহাসের সেরা বনে গিয়েছেন। আর এরই মধ্য দিয়ে ১৯৯২ সালের পর প্রথম পদক জিতলো পাকিস্তান; ব্যক্তিগতভাবে এর আগে অবশ্য আর কেউই সোনা জিততে পারেনি।
অথচ পুরোটা সময় আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন ২০২০ অলিম্পিকে স্বর্ণ পদক জেতা নীরাজ চোপড়া। এবারের কোয়ালিফাইং রাউন্ডেও বাকিদের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন তিনি; এমনকি চূড়ান্ত পর্বে ক্যারিয়ার সেরা ৮৯.৪৫ মিটার দূরত্ব অর্জন করেছিলেন।
কিন্তু দিনটা ছিল পাঞ্জাব থেকে উঠে আসা আরশাদের, সবাইকে চমকে দিয়ে সামর্থ্যের চেয়ে বেশি কিছু করে দেখিয়েছেন। এর মাধ্যমে শুধু পাকিস্তানের ৩২ বছরের পদক খরার অবসান ঘটাননি, ফিল্ড ও ট্র্যাক বিভাগে দেশটাকে প্রথম পদক এনে দিয়েছে তিনি। অন্যদিকে, সাবেক সোনাজয়ীকে সন্তুষ্ট থাকতে রৌপ্য পদক নিয়েই।
এতে অবশ্য ভারতীয় এই তারকা পুনরায় রেকর্ড বুকে ঢুকে পড়েছেন। মাত্র তৃতীয় ভারতীয় হিসেবে পর পর দুই আসরে পদক জিতলেন তিনি; তবে ফিল্ড ও ট্র্যাক বিভাগে এমনটা কেউই আগে করে দেখাতে পারেনি। যদিও রেকর্ডের সব আলোচনা বাইরে রেখে এখন সব উন্মাদনা বৈশ্বিক আসরে দু’জনের পারফরম্যান্স নিয়ে; দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ থেকে উঠে দুই ক্রীড়াবিদের যেভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছন তা ইতিহাস হয়ে থাকবে অনেকদিন।
তাঁদের মাঝে অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেয়ে বন্ধুত্ব বেশি। এই তো মাস কয়েক আগে পাক তারকার বর্শা ভেঙে যায়, ভাল মানের একটা বর্শার জন্য অনেক ছোটাছুটি করেও জোগাড় করতে পারেননি তিনি। সে সময় এগিয়ে আসেন তাঁর বন্ধু নীরাজ, স্পন্সরদের অনুরোধ করেন সর্বোচ্চ মানের একটা বর্শা তাঁকে দেয়ার জন্য।
যদিও নীরাজ চোপড়া মনে করেন এই পারফরম্যান্সই তাঁর সর্বোচ্চ সেরা নয়। তিনি বলেন, ‘এ দিনটা আরশাদের ছিল; আমার সেরাটা এখনো দেয়া বাকি। আমি শারিরীক ও মানসিকভাবে পুরোপুরি ফিট হলে নিশ্চয়ই দেখতে পাবেন।’