ম্যাচ সেরার পুরস্কার নেই পুরো ক্যারিয়ারে। অথচ সিরিজ সেরার খেতাব জিতে নিয়েছেন এমন ঘটনা ক্রিকেট দুনিয়াতে খুব একটা বিরল নয়। অবাক হওয়ার বিষয় বাংলাদেশেও তিন ফরম্যাটে এরকম তিনজন খেলোয়াড় আছেন। তাঁদের অর্জন নিয়েই আজকের এই আয়োজন।
- রবিউল ইসলাম (টেস্ট)
২০০০ সালে টেস্ট খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। তবে সাফল্যে এসে ধরা দিয়েছে কালেভদ্রে। টেস্ট স্ট্যাটাসের প্রথম দশকে ম্যাচ হারের ফিরিস্তি ছিল বেশ লম্বা। তবে ২০১৩ সালে একটু ব্যতিক্রম হয়েছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। না, সিরিজটা শেষ পর্যন্ত জেতা হয়নি, ড্র হয়েছিল। তবে দেখা গিয়েছিল রবিউল ইসলামের বীরত্ব। দুই ম্যাচের সিরিজে নিয়েছিলেন ১৫ উইকেট।
লাল বলে একজন বাংলাদেশি পেসারের অমন দাপট দেখা যেত না খুব একটা। ব্যাটারদের নাকাল করেন সুইং দিয়ে। তারপরেও ম্যাচ সেরা হতে পারেননি ব্রেন্ডন টেইলর আর মুশফিকুর রহিমের দারুণ ব্যাটিংয়ে। সিরিজ সেরা হওয়া থেকে অবশ্য আটকানো যায়নি তাকে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ক্যারিয়ারে এই সিরিজের মতো এর পরেও আর কখনো ম্যাচ সেরা হননি রবিউল।
- খালেদ মাসুদ পাইলট (ওয়ানডে)
২০০২ সাল। বাংলাদেশ তখনও বুঝতে শেখেনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাঙ্গন। সে কারণেই ওয়ানডেতে বেশ নড়বড়ে এক দলই ছিল টাইগারদের। স্বাভাবিকভাবেই আরো একটি শোচনীয় সিরিজ হারের স্বাদ নিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ০-৩ ব্যবধানে সিরিজ হারলেও একটা প্রাপ্তিই ছিল বটে। সেটা খালেদ মাসুদ পাইলটের সিরিজ সেরা হওয়া। ১০৬ রান নিয়ে হয়েছিলেন ২য় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক, ছিল একটা ফিফটি।
এর সাথে ভালো অধিনায়কত্ব আর উইকেটকিপিং দিয়ে জিতে নেন সিরিজ সেরার তকমা। যেহেতু কোনো ম্যাচেই বাংলাদেশ জিততে পারেনি, সেহেতু ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়েরা। কিন্তু পাইলটের ধারাবাহিকতার সাথে তাঁরা আর পেরে ওঠেননি। শেষ অবধি সিরিজ সেরার লড়াইয়ে এগিয়ে যান খালেদ মাসুদ পাইলট। তিনিও পরে আর কখনোই পাননি ম্যাচ সেরার সম্মান।
- শরিফুল ইসলাম (টি টোয়েন্টি)
সদ্য সমাপ্ত নিউজিল্যান্ড সিরিজে ৬ উইকেট আর কিপটে বোলিংয়ে শরিফুল ইসলাম হলেন সিরিজ সেরা। প্রথম ম্যাচে ২৬ রানে ৩ উইকেট, দ্বিতীয় ম্যাচে ১৬ রানে ১ উইকেট আর তৃতীয় ম্যাচে ১৭ রানে ২ উইকেট- সিরিজ জুড়েই ছিল তাঁর ধারাবাহিকতা। ইকোনোমিও ছিল বেশ ভালো- প্রথম ম্যাচে ৬.৫, দ্বিতীয় ম্যাচে ৮ আর তৃতীয় ম্যাচে ৪.৬৩। প্রতি ৯ রান পরপর নিয়েছেন একটা করে উইকেট।
এই সিরিজের আগে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার ওঠেনি তার হাতে। চোখ ধাঁধানো বোলিং করার পরেও অর্জনের ঝুলি ছিল শূন্য। মেহেদি হাসান আর মিশেল স্যান্টনারের অলরাউন্ড নৈপুণ্য হয়েছে বাঁধা। তবে তিন ম্যাচ মিলিয়ে তিনিই যে সেরা ছিলেন তা স্পষ্ট হয়েছে শেষ বেলায়।