সকাল সকাল হঠাৎ জানা গেল তিনি আর নেই। গণমাধ্যমে খবর হল। শোক বার্তায় ছেয়ে গেল সোশ্যাল মিডিয়ায়। স্মৃতিতে হিথ স্ট্রিককে স্মরণ করলেন অনেকেই।
কিন্তু ঘণ্টা তিনেক যেতে না যেতেই পাল্টে গেল খবর। জানা গেল, যা রটেছে তাঁর কোনো ভিত্তি নেই। সতীর্থ হেনরি ওলোঙ্গা প্রথমে শোকবার্তা দিলেও বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টার দিকে টুইটারে জানালেন, হিথ স্ট্রিক দিব্যি বেঁচে আছেন!
টুইটারে হোয়াটসঅ্যাপে স্ট্রিকের সাথে কথোপকথনের স্ক্রিনশট টুইটারে দিয়েছেন ওলোঙ্গা। যেখানে স্ট্রিক বলছেন, ‘আমি খুব ভালভাবে জীবিত আছি। দ্রুত এই আউটের সিদ্ধান্ত বাতিল করো।’
স্ক্রিনশট শেয়ার করে ওলোঙ্গা লিখেছেন, ‘গুজবটা একটু বেশি দূর ছড়িয়ে গেছে। আমি নিশ্চিত করতে পারি যে, ওর সাথে আমার মাত্র কথা হয়েছে। তৃতীয় আম্পায়ার ওকে ফেরত এনেছে। খুব ভাল ভাবেই ও বেঁচে আছে।’
আর এরই মধ্য দিয়ে জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক হিথ স্ট্রিকের মৃত্যু বিষয়ক গুজবের অবসান হল। তবে, এটা ঠিক তাঁর শরীরে ব্লাড ক্যান্সার আছে। প্রাণঘাতী এই রোগের সাথে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটে ইতিহাসে সর্বকালের সেরাদের একজন হিথ স্ট্রিক। ২০০০ থেকে ২০০৪ সাল – এই পাঁচটা বছর তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন আফ্রিকান দেশটিকে। খেলেছেন ৬৫ টি টেস্ট ও ১৮৯ টি ওয়ানডে। আজও তিনি জিম্বাবুয়ের হয়ে ১০০ টি টেস্ট উইকেট নেওয়া একমাত্র বোলার। ১২ বছরের লম্বা ক্যারিয়ার তাঁর অর্জনের শেষ নেই।
খেলোয়াড়ী জীবন শেষে কোচ হিসেবে ছিলেন আরও আলোচিত। জিম্বাবুয়ে, স্কটল্যান্ডের কোচিং স্টাফ দলে ছিলেন। বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ ছিলেন বড় সময়। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) কলকাতা নাইট রাইডার্স ও গুজরাট লায়ন্সের মত দলে ছিলেন।
যদিও, ক্রিকেট জীবনের সকল অর্জন তিনি বিসর্জন দিয়েছিলেন ২০২১ সালে। সেবার আট বছরের জন্য তাঁকে নিষিদ্ধ করে আইসিসি। আইসিসিরি দুর্নীতি দমন বিধির চারটি ধারা ভঙ্গ করেছিলেন তিনি। তদন্তে প্রমাণিত হয়তো ২০১৭ ও ২০১৮ সালে শীর্ষস্থানীয় কয়েকটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ফিক্সিং জনিত অনৈতিক কাজের সাথে নিজেকে জড়ান তিনি।
এমনকি ২০১৮ সালে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার সিরিজ চলাকালেও তিনি তথ্য পাচার করেছেন। তখন তিনি জিম্বাবুয়ে দলের কোচ ছিলেন। এরপর থেকেই স্ট্রিকের নামটা চলে যায় অন্ধকারে।
চলতি বছরের মে মাসে তাঁর ক্যান্সার ধরা পড়ে। মৃত্যু নিয়ে গুজবের শুরুটা সেখান থেকেই হয়।