বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের সেরা জয়গুলির একটি। এমনকি এটিকে দ্বিতীয় সেরা জয়ও বলা যেতে পারে। যদিও ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের আবেদন ও ওজন সবসময়ই অন্যরকম।
তার পরও, একটু গভীরে গিয়ে, এই টেস্টে দুই দলের শক্তি-সামর্থ্যকে বিবেচনায় নিলে, টেস্ট শুরুর আগের প্রেক্ষাপট এবং আরও সব পারিপার্শ্বিকতা ভাবলে, উইকেটের আচরণ মাথায় রাখলে, সাকিব-লিটন-ইবাদত-তাসকিনকে ছাড়া খেলতে নেমে পূর্ণশক্তির ও পূর্ণ মনোযোগের নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেটের এই জয়কেই এগিয়ে রাখতে হয়।
মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের জয় অবশ্যই সবার ওপরে। এর পরই হয়তো এই জয়। এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় এবং দেশের শততম টেস্টে পি সারা ওভালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রান তাড়ায় সেই জয়।
দয়া করে ‘ব্যাটসম্যানদের বধ্যভূমি’ ধরনের উইকেট ভাববেন না। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টের মতো ভয়ঙ্কর টার্নিং ও অসমান বাউন্সের উইকেট এটা মোটেও নয়। ৫ দিন ধরে খেলা দেখে থাকলে ও খেলাটা সম্পর্কে ধারণা থাকলে বোঝা উচিত, এটা দারুণ এক টেস্ট উইকেট।
প্রতিটি দিনের যা আচরণ, সময় গড়ানোর সঙ্গে যেরকম আচরণ হওয়া উচিত, সব মিলিয়েই উপমহাদেশের উইকেট হিসেবে প্রায় আদর্শ টেস্ট উইকেটের মতোই। এমনকি তৃতীয় দিনে কাইল জেমিসন, চতুর্থ দিনে এজাজ প্যাটেল ও ম্যাচ শেষে টিম সাউদি বলেছেন, এটা খুব ভালো উইকেট।
এই সময়টায় প্রচণ্ড গরমও নেই, আবহাওয়া ও কন্ডিশন তাই নিউজিল্যান্ডের জন্য অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং নয়। সব মিলিয়েই এই জয়টা স্মরণীয়।
মাঠের ভেতরে-বাইরে নেতৃত্বে এবং ব্যাট হাতে সামনে থেকে নেতৃত্বে শান্ত যেভাবে নিজেকে মেলে ধরেছেন, তাইজুল যেভাবে বোলিং আক্রমণের নেতার দায়িত্ব দারুণভাবে পালন করেছেন এবং চারপাশের প্রচুর শোরগোলের মধ্যে গোটা দল যেভাবে ক্রিকেটে মনোযোগ রেখেছে এবং দেশের ক্রিকেটে অবশেষে ‘ক্রিকেট’ ফিরিয়েছে, এই জয়ের মাহাত্ম আসলে অনেক।
আশা করি, বিশ্বকাপ ব্যর্থতা বা ব্যর্থতার যে প্রেক্ষাপট বা ওই সময়ের যে উপকরণগুলো ছিল, সেসবের গভীরে যাওয়ার চেষ্টা বাদ যাবে না কিংবা ওসব আড়ালে পড়বে না। এই জয় সেসবের ঢাল বানানো হবে না। সেসব নিজের গতিতে চলতে থাকুক। তবে মাঠের ক্রিকেটের মূল স্রোতও তো বহমান থাকা জরুরি। এই জয় সেই স্রোতধারাকেই প্রবাহমান রাখবে।
– ফেসবুক থেকে