একটা সময় ছিল, যখন বাংলাদেশের বোলিং সফলতা মানেই ছিল শুধু স্পিনারদের উল্লাসনৃত্য। আর আড়ালে ব্রাত্য হয়ে উদাসমনে সেই নৃত্য সাইডলাইনে বসে দেখতেন পেসাররা। তবে সে সব সময় হয়েছে অতীত। এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট রীতিমত চলছে পেস বোলিং বিপ্লব।
আর ঐ বৈপ্লবিক পরিবর্তনের নেপথ্যে সম্মুখ গতিতে দৌর্দণ্ড্য প্রতাপে এগিয়ে চলছেন তাসকিন, মুস্তাফিজ, এবাদত, হাসান, শরিফুলদের মতো এক ঝাঁক পেসাররা। তাদের বদৌলতেই শেষ চার বছরে সেরা পেস বোলিং লাইন আপদের কাতারে উঠে এসেছে বাংলাদেশ।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে ওয়ানডে ক্রিকেটে বোলিং গড় ও স্ট্রাইকরেটের বিচারে সবচেয়ে সফলতম পেস বোলিং লাইনআপের নাম পাকিস্তান। আর পাকিস্তানের পরেই সবচেয়ে সফল দলটার নাম বাংলাদেশ।
শেষ চার বছরে পাকিস্তানি পেসারদের বোলিং গড় ছিল ২৭। অর্থাৎ প্রতি উইকেট তুলে নিতে পাকিস্তানি পেসাররা খরচ করেছে ২৭ টি রান। এ সময়কালে তাদের বোলিং স্ট্রাইকরেট ছিল ২৯.৩৮। অর্থাৎ পাকিস্তানি পেসাররা প্রতি উইকেট তুলে নিতে ব্যয় করেছে ২৯.৩৪ টি বল।
বোলিং গড় ও স্ট্রাইকরেটের বিচারে পাকিস্তানের পরেই সবচেয়ে সফল দলটার নাম বাংলাদেশ। শেষ ৪ বছরে তাদের বোলিং গড় ছিল ২৮.৩৩। অর্থাৎ প্রতি উইকেট তুলে নিতে বাংলাদেশের পেসাররা খরচ করেছেন ২৮.৩৩ রান। আর এ সময়কালে তাসকিন, মুস্তাফিজদের বোলিং স্ট্রাইকরেট ছিল ৩১.৫৫। অর্থাৎ প্রতি উইকেট পেতে বাংলাদেশি পেসারদের ব্যয় করতে হয়েছে ৩১.৫৫ টি বল।
২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে পেস বোলিংয়ে এমন সফলতার পথে বাংলাদেশ পিছনে ফেলেছে ভারত, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর পেসারদের। যেমন কিউই পেসারদের এ সময়কালে বোলিং গড় ছিল ৩০.০৪, এরপরে ভারত ৩০.৪৪, অস্ট্রেলিয়া ৩০.৬১ আর ইংলিশ পেসারদের বোলিং গড় ছিল ৩০.৮৬।
বোলিং গড়ের দিক দিয়ে এ সময়কালে সবার তলানিতে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের পেসারদের এই চার বছরে বোলিং গড় ছিল ৩৩.৫০। তবে বোলিং স্ট্রাইকরেটের দিক দিয়ে সবার পিছনে আছে আফগান পেসাররা। এ সময়কালে তাদের বোলিং স্ট্রাইকরেট ছিল ৩৬.১৮।
এ তো গেল বোলিং স্ট্রাইকরেট আর গড়ের বিবেচনায় শেষ ৪ বছরের পরিসংখ্যান। উইকেট সংখ্যাতেও বাংলাদেশি পেসাররা রয়েছেন সেরাদের কাতারেই। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে ৪৫ টি ওয়ানডে বাংলাদেশি পেসাররা উইকেট নিয়েছেন সর্বমোট ১৮৯ টি।
বাংলাদেশি পেসারদের চেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছে দুটি দেশের পেসাররা; ভারত ও নিউজিল্যান্ড। উইকেটের দিক দিয়ে ৫৭ ম্যাচে ২৫৮ টি উইকেট নিয়ে সবার উপরে আছে ভারত। আর ৩৬ ম্যাচে কিউই পেসাররা ১৯৫ টি উইকেট নিয়ে রয়েছেন দুইয়ে।
অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের পেসাররা ২৯ ম্যাচে ১৬৩, অস্ট্রেলিয়া ৩৬ ম্যাচে ১৬৫, ইংল্যান্ড ৩৬ ম্যাচে ১৭৮, আফগানিস্তান ২৫ ম্যাচে ৭১, শ্রীলঙ্কা ৫০ ম্যাচে ১৭৯, আয়ারল্যান্ড ৪১ ম্যাচে ১৮০ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার পেসাররা ৩৫ ম্যাচে নিয়েছেন ১৫২ টি উইকেট।