এখনও পাকিস্তানের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। তবে তা মাটিতে মিশে যেতে পারত যদি কি-না পাকিস্তান কানাডার বিপক্ষে ম্যাচটাও হেরে যেত। কিন্তু শেষ অবধি তেমনটি হয়নি। পেছনের কারণ হিসেবে আবারও সামনে চলে আসবে বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের যুগলবন্দী।
একটু পেছনে ফেরা যাক। বেশিদূর নয়, এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই পাকিস্তানের প্রথম দুই ম্যাচে নজর দিলেই কিছু বিষয় হবে স্পষ্ট। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ ছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই ম্যাচে ওপেনিং করেছেন বাবর ও রিজওয়ান। দলীয় মাত্র ৯ রানের মাথায় প্যাভিলিয়নে ফেরেন রিজওয়ান।
ডালাসের উইকেটে পাকিস্তান সেদিন থেমেছিল ১৫৯ রানে। অথচ পিচ রিপোর্টে অন্তত ১৭০ রান যথেষ্ট হত বলে জানানো হয়েছিল। শেষ অবধি বোলারদের কারণেই ম্যাচটি গড়িয়েছিল সুপার ওভারে। সেখানে পাকিস্তান হেরেছিল শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচে। সেই ম্যাচে বাবর ও রিজওয়ানের জুটি খানিকটা বড় হলেই পরিস্থিতি হতে পারত ভিন্ন।
একই রকম ঘটনা ঘটেছে চিরপ্রতিদ্বন্দী ভারতের বিপক্ষেও। সেই ম্যাচে অবশ্য পাকিস্তানের বোলারদের হয়েছিল প্রত্যাবর্তন। নিউ ইয়োর্কের ধাঁধার থেকে জটিল উইকেটে রীতিমত তাণ্ডব চালালেন প্রত্যেকে। তাতে করে মাত্র ১১৯ রানেই গুটিয়ে যায় ভারত। সেদিন পাকিস্তানের সামনে সুযোগ ছিল ম্যাচটি জিতে নেওয়ার।
কেননা রোদ উঠে উইকেট খানিক ব্যাটিং সহায়ক হয়েছিল বটে। সেদিনও ওপেনিং করেছেন বাবর ও রিজওয়ান। সেদিনও এই জুটি ভেঙেছে স্বল্প রানে। মাত্র ২৬ রানেই থেমেছিল সেদিন তাদের যুগলবন্দী। শেষ অবধি পাকিস্তান আর ১২০ রানের জয়ের লক্ষ্য ছুঁয়ে দেখতে পারেনি।
কানাডার বিপক্ষে একপ্রকার বাঁচা-মরার লড়াই ছিল ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়নদের। সেই ম্যাচটিতে দাঁড়িয়ে গেল বাবর-রিজওয়ান জুটি। ব্যাস জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পাকিস্তানের খুব বেশি সমস্যা হয়নি। যদিও এদিন এই দুই ব্যাটার ওপেনিং করতে আসেননি। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন বাবর। ওপেনিংয়ে রিজওয়ানের সঙ্গী ছিলেন সাইম আইয়ুব।
বাবর উইকেটে আসার পর থেকেই জুটি জমে ক্ষীর হতে থাকে। ১০৮ রানের টার্গেটে ৬৩ রানের জুটি গড়েন এই দুই জনে মিলে। তাতে করেই নিউ ইয়োর্কের সেই দুর্ধর্ষ উইকেটেও জয় পেতে পাকিস্তানের খুব বেশি সমস্যা হয়নি শেষতক।
তাতে অন্তত প্রমাণিত হয় যে বাবর-রিজওয়ান জুটিই পাকিস্তানের সফলতার একমাত্র চাবিকাঠি। এই দুই ব্যাটারের উপরই পাকিস্তানের জয়ের ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করে। তাদের স্ট্রাইকরেট নিয়ে প্রায়শই সমালোচনা হয়। তবে দিনশেষে জয়টা মুখ্য। আর এবারের বিশ্বকাপে স্ট্রাইকরেটের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ধৈর্যশীলতা। সেটা তো এই দুইজনের মধ্যে রয়েছে ভরপুর।