ভারত-পাকিস্তান, এই দুই দেশের নাম শুনলেই কেমন একটা লড়াই-লড়াই বিষয়বস্তু মাথায় ঘুরপাক খেতে শুরু করে। এই দুই দেশের লড়াইটা জমেও বেশ। হোক সেটা রাজনীতির টেবিলে কিংবা সীমান্তে অথবা খেলার মাঠে। খেলার মাঠের এবারের লড়াইয়ে মুখোমুখি দুই দেশের নারী ক্রিকেট দল। আর সেই লড়াইটাও হয়েছে জম্পেশ।
শেষ ওভার অবধি গড়িয়েছে ম্যাচটি। তবে শেষ হাসিটা হেসেছে পাকিস্তানের মেয়েরা। বাংলাদেশের সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের আউটার ফিল্ডে বসেছে এবারের নারী এশিয়া কাপের আয়োজন। সেখানেই টুর্নামেন্টের দুই হট ফেভারিট দল হয়েছিল নিজেদের মুখোমুখি। টসে জিতে আগে ব্যাট করবার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান ক্রিকেট নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিসমাহ মারুফ। ধীরগতির শুরুটা নিশ্চয়ই প্রত্যাশিত ছিলনা অধিনায়কের।
অন্যদিকে খুব দ্রুতই তিন উইকেট পড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে যায় পাকিস্তানের মেয়েরা। তবে অধিনায়ক বিসমাহ মারুফ শক্ত হাতেই সে ধাক্কাটা প্রতিহত করেন। তিনি জুটি গড়েন নিদা দারের সাথে। দুইজনে গড়েন ৭৬ রানের এক অনবদ্য জুটি। নিদা দার একপ্রান্ত থেকে হাতখুলে ব্যাট করতে থাকেন। অপরপ্রান্তে অধিনায়ক তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে যেতে থাকেন। ১০৯ রানের মাথায় বিসমাহ আউট হয়ে গেলে আর বেশিদূর যেতে পারেনি পাকিস্তানের মেয়েরা।
তবে নিদা একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াকু সংগ্রহ নিশ্চিত করেন। ১৩৭ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে থামে পাকিস্তানের ইনিংস। ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন দীপ্তি শর্মা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে অনায়াসে জয় পেয়ে যাওয়ার চিন্তাই হয়ত করছিল নারী এশিয়া কাপের সবচেয়ে সফল দল ভারত। তবে এবারের টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের মেয়েরা যেন রয়েছে দুর্দান্ত ফর্মে। তাদের থামানোটা যেন প্রায় অসম্ভব। পাকিস্তানের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং বড্ড বেশি চাপে ফেলে দেয় ভারতের মেয়েদের।
দয়ালান হেমলতা আর উইকেট রক্ষক রিচা ঘোষ বাদে আর কেউ ২০ রানের কোটা পার করতে পারেনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে হারমানপ্রীত কৌরের দল। ১৩৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা যেন বহুদূরের কোন এক পথ মনে হতে থাকে ভারতীয় নারী ক্রিকেটারদের। বড় কোন পার্টনারশীপও গড়তে পারেনি ভারতের নারীরা। অন্যদিকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিতে থাকে পাকিস্তানের বোলাররা। নাশরা সান্ধুর তিন উইকেট শিকারের পাশাপাশি নিদা দার ও সাদিয়া ইকবাল দুইটি করে উইকেট শিকার করেন।
নিজেদের মেলে ধরার সুযোগটুকুও পায়নি ভারতের মেয়েরা। পাকিস্তানের বোলারদের দাপটে মাত্র ১২৪ রানে গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস। ফলশ্রুতিতে ১৩ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান নারী দল। থাইল্যান্ড নারী দলের কাছে অপ্রত্যাশিত হারের পর এই জয় পাকিস্তানের মেয়েদের আবারও নতুনভাবে উজ্জীবিত করবে নিশ্চয়ই। চিরপ্রতিদ্বন্দীদের হারিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় অবস্থানটা শক্তপোক্তই করল পাকিস্তান। তবে এখনও শীর্ষস্থানটা নিজেদের দখলে রেখেছে ভারত।