বাবা মা স্টেডিয়ামে এসে ছেলের খেলা দেখবেন— সেটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু সেই স্বাভাবিক ব্যাপারটাই ‘অস্বাভাবিক’ হয়ে উঠেছে পাকিস্তানি ওপেনার ইমাম উল হকের বেলায়। তাঁর পরিবারের কোনো সদস্যে মাঠে এসে খেলা দেখেন না।
২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ইমাম উল হকের। সে সময়ে পিসিবির প্রধান নির্বাচক ছিলেন ইনজামাম উল হক। যিনি আবার সম্পর্কে ইমামের চাচা হন। মূলত এ কারণেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার পর থেকেই ‘নেপোটিজম’-এর ট্যাগ লেগে যায় ইমাম উল হক নামের পাশে।
যদিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকেই সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। এরপর থেকে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিয়মিতই রান করেছেন। মাত্র ৫৯ ম্যাচেই করেছেন ৯ টা সেঞ্চুরি। যেখানে ৫১.৩০ গড়ে তিনি করেছেন ২৭১৯ রান। শুধু তাই নয়, এই মুহূর্তে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে বিশ্বের চতুর্থ সেরা ব্যাটার হচ্ছেন তিনি।
তবে এরপরও দর্শকদের দুয়োধ্বনি থেকে তিনি রেহাই পান না। বিশেষত, ফিল্ডিংয়ে সময় তাঁকে ‘পারছি’ নামে ডেকে কটাক্ষ করা হয়। যার অর্থ, কোটায় খেলা খেলোয়াড় কিংবা স্বজনপ্রীতিতে স্বার্থ সিদ্ধি।
ইমাম উল হকের বাবা মা অবশ্য এরপরও মাঠে বসে ছেলের খেলা দেখতে আগ্রহী। তবে ইমাম তা চান না। কেন চান না, সেটির ব্যাখ্যায় এবার এক ইউটিউব চ্যানেলের পডকাস্টে জানিয়েছেন ইমাম উল হক।
তিনি বলেছেন, ‘মা-বাবা আমার খেলা দেখতে চান। কিন্তু স্টেডিয়ামে বসে কখনোই তাঁরা আমার খেলা দেখেননি। আসলে এটা আমিই চাই না। কারণ কেউ আমার মায়ের সামনে পার্চি বলবে, এটা আমি মেনে নিতে পারি না। খুবই দু:খজনকভাবে, ফিল্ডিংয়ের সময় প্রায়ই আমাকে শুনতে হয় এই কথা। আবার ব্যাটিংয়ে খারাপ করলেও এভাবে বলে। ওরা আসলে অতীত ভুলে যায় সহজেই। আর আমি আমার পরিবারকে এসব কটুক্তি কখনোই শোনাতে চাই না।’
২০২২ সালে পাকিস্তানে এবার ইমামের বোন খেলা দেখতে এসেছিলেন। তখনও গ্যালারি থেকে দর্শকেরা পাকিস্তানের ইমামকে উদ্দেশ্য করে কটুক্তি করেছিল। অথচ ততদিনে ইমাম দলের সিনিয়র ক্রিকেটার হয়ে উঠেছেন।
তাই কিছুটা আক্ষেপ ঝরা কণ্ঠেই সে ঘটনা টেনে এনে ইমাম বলেন, ‘২০২২ সালে প্রথমবার আমার বোন খেলা দেখতে এসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ হয়েছিল। তখনও গ্যালারি থেকে দুয়োধ্বনি এসেছিল। এটা আমার কাছে এক রকম মানসিক অত্যাচারের মতো লেগেছিল। কারণ তখন আমি সিনিয়র ক্রিকেটার ছিলাম। দর্শকদের কাছে এরকম আচরণ যে কারো কাছেই খারাপ লাগার কথা। আর এ কারণে আমি কখনও পরিবারকে নিয়ে আসিনা স্টেডিয়ামে।’