অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও এক পর্যায়ে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দারুণ এক জুটিতে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন আফিফ হোসেন ধ্রুব ও নুরুল হাসান সোহান। চাপ জয় করে ম্যাচ জয়ী জুটি গড়ার পর আফিফ জানিয়েছেন উইকেটে শান্ত থেকেই সফল হয়েছেন তারা।
৬৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর জুটি বাঁধেন আফিফ এবং সোহান। তখনো দলের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫৩ বলে ৫৫ রান। এই দুজনের পর স্বীকৃত ব্যাটসম্যান বলতে ছিলেন শুধু শামিম হোসেন পাটোয়ারি। তাই আর একটি উইকেট হারালেও আরো চাপে পড়তো বাংলাদেশ। এমন অবস্থা থেকে ৪৫ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়েন দু’জন।
আফিফ অপরাজিত থাকেন ৩১ বলে ৩৭ রান করে ও সোহান অপরাজিত থাকেন ২১ বলে ২২ রান করে। গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হন আফিফ। ম্যাচ শেষে তিনি জানিয়েছেন তাদের পরিকল্পনা ছিল শান্ত থাকা ও উইকেটের চারপাশে দেখে শট খেলা।
আফিফ বলেন, ‘ভাবছিলাম আমার শেষ পর্যন্ত উইকেটে থাকা উচিত। আমারা শুধুমাত্র শান্ত থেকেছি ও চারপাশে দেখে শট খেলেছি। সেই পরিকল্পনাই ছিল আমাদের। সোহানও খুব ভালো খেলেছে চাপ দূর করতে। আপনি তরুণ নাকি অভিজ্ঞ এটা কোন ব্যাপার না, শুধু দলের জন্য খেলতে হবে।’
২১ বলে ২২ রান করে অপরাজিত ছিলেন সোহান। আফিফ বলেন, ‘সোহান ভাই অনেক ভালো ব্যাটিং করেছে। তার সাথে পরিকল্পনা ছিল যে আমরা উইকেট দেব না। উইকেট না দিয়ে বল টু বল রান করবো। উইকেট না দিয়ে রান বের করার চেষ্টা করছিলাম। অপর প্রান্ত থেকে ভালো সমর্থন পাওয়ার কারণে চাপ জয় করতে পেরেছি।’
আফিফ মনে করেন, ব্যাটিংয়ে পরিকল্পনামাফিক খেলতে পেরেছেন তাঁরা। বললেন, ‘উইকেটে যাওয়ার পর রিয়াদ ভাইয়ের থেকে একটাই ম্যাসেজ ছিল দুই তিন ওভার যেন নরমাল খেলি। আমার প্ল্যান ছিল শেষ পর্যন্ত যেন উইকেটে থাকতি পারি, ম্যাচটা শেষ করে আসতে পারি। ব্যাটিংয়ে নেমে উইকেট বোঝার চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস ছিল যে রানরেটই থাকুক ম্যাচ শেষ করতে পারবো।’
আফিফ ও সোহান যে ভাবে ব্যাটিং করেছে এটা নিয়ে খুশি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের অধিনায়ক জানিয়েছেন দুজনই দারুণ পরিপক্কতা দেখিয়েছে। দ্রুত উইকেট হারালে ড্রেসিংরুমে সাময়িক উত্তেজনা দেখা দিলেও দুজনের ব্যাট স্বস্তি এনে দিয়েছিল বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে।
মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘আফিফ এবং সোহান দাঁড়িয়ে গিয়ে যে ভাবে শেষ পর্যন্ত উইকেটে থেকেছে তা খুবই আনন্দদায়ক ছিল। অনেক পরিপক্কতা দেখিয়েছে ওরা। বোলাররা দারুণ বল করে ১২০ রানের ভিতর আটকে ছিল। প্রথম দিকে কিছু উইকেট হারালে ড্রেসিংরুমে উত্তেজনা দেখা দেয় কিন্তু সোহান ও আফিফ যেভাবে ব্যাটিং করেছে তাতে ড্রেসিংরুম বেশ স্বস্তিতে ছিল।’
ইনিংসের মাঝপথে ভালো অবস্থানে থেকেও শেষের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ২০ ওভারে মাত্র ১২১ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া। সফরকারী অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড জানিয়েছেন আর ১০-২০ রান বেশি করলেই এই ম্যাচ জিততে পারতো তারা। ওয়েড প্রশংসা করেছেন দুই দলের বোলারদেরই।
ওয়েড বলেন, ‘আমরা কয়েকজন উইকেটে থিতু হওয়া ব্যাটসম্যানের সাথে ভালো অবস্থায় ছিলাম। কিন্তু পিছনের ব্যাটসম্যানরা ভালো করতে পারেননি। ১৩০ বা ১৪০ রান করা উচিত ছিল। যা এই উইকেটে জয়ের জন্য উপযোগী স্কোর ছিল। দুই দলের বোলাররা সত্যিই ভালো করেছে। বোলিং আমাদের জন্য সমস্য নয়। ব্যাটিংয়ে ভালো করতে হবে।’