পুরান ঝড়ে লণ্ডভন্ড হায়দ্রাবাদ!

ক্যারিবিয়ান পাওয়ার হাউজ বুঝি একেই বলে! লখনৌ সুপার জায়ান্টস তখনও ম্যাচজয় থেকে অনেকটা দূরে। কিন্তু উইকেটে এসেই টানা তিন ছক্কায় এক ঝটকায় লখনৌর দিকে ম্যাচটা নিয়ে নিলেন নিকোলাস পুরান। দুই দলেরই মাস্ট উইন গেমে তাই জয়টা গিয়েছে লখনৌ সুপারজায়ান্টসের ঘরে। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে তাঁরা হারিয়েছে ৭ উইকেটে।

টসে জিতে এ দিন ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ইনফর্ম অভিষেক শর্মার উইকেট হারায় সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। যদিও অভিষেকের দ্রুত ফিরে যাওয়ার ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে দেন অপর ওপেনার আনমোলপ্রীত সিং। গ্যাপ খুঁজে চারের সৌন্দর্যে হায়দ্রাবাদকে কক্ষপথেই রাখেন এ ব্যাটার।

তবে দারুণ শুরু করেও নিজের ইনিংস দীর্ঘায়িত করতে পারেন আনমোলপ্রীত। অমিত মিশ্রার শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৩৬ রানে সাজঘরের ফিরে যান এ ব্যাটার। তার আগে রাহুল ত্রিপাঠি দারুণ শুরুর আভাস দিলেও ২০ রানেই থেমে যায় তাঁর ইনিংস।

হায়দ্রাবাদের ইনিংস মূলত গড়িয়েছে এমন ছোট ছোট ইনিংসেই। দলের অধিনায়ক এইডেন মারক্রাম করেন ২৮ রান। আর ইনিংসের মাঝখানে দলের রানের গতি বাড়ানোর কাজটা করেছিলেন হেনরিখ ক্লাসেন। ৩ চার আর ৩ ছয়ে শেষ পর্যন্ত অবশ্য ব্যক্তিগত ফিফটি পূরণ করতে পারেননি। তবে তাঁর ২৯ বলে ৪৭ রানের ইনিংসেই দারুণ সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ।

আর ইনিংসের শেষদিকে ২৫ বলে ৩৭ রানের দুর্দান্ত এক ক্যামিও ইনিংস খেলেন খেলেন আব্দুল সামাদ। এতেই ১৮২ রানের দারুণ এক সংগ্রহ গড়ে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ।

১৮৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই কাইল মেয়ার্সের উইকেট তুলে নেন গ্লেন ফিলিপস। পাওয়ার প্লে-তে ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই এ ক্যারিবীয় ওপেনার ফিরে যান ব্যক্তিগত ২ রানে। মেয়ার্স ফিরে যাওয়ার পর অবশ্য পাওয়ার প্লে’র ফায়দা তুলে নিয়ে কুইন্টন ডি কক আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে শুরু করেন।

তবে প্রোটিয়া এ ওপেনার দারুণ শুরু করার পরও সেটা ধরে রাখতে পারেননি। ব্যক্তিগত ২৯ রানে ফিরে যান তিনি। লখনৌর এ দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পর দলের হাল ধরেন প্রেরক মানকাড আর মার্কাস স্টয়নিস। কিছুটা রয়েসয়ে ব্যাটিং করলেও কিছুক্ষণ বাদে ঠিকই খোলস ছেড়ে আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে শুরু করেন স্টয়নিস। অপর দিকে প্রেরক মানকাডও দারুণ সঙ্গ দিয়ে আইপিএল ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম অর্ধ-শতকে পৌঁছে যান।

তবে আস্কিং রেটের চাপে তখনও লখনৌর জন্য ম্যাচ জয় অনেক দূরের পথ ছিল। কিন্তু ১৬ তম ওভারে এসে পাশার দান বদলে যায় লখনৌর দিকে। অভিষেক শর্মার ঐ ওভারে স্টয়নিস ফিরে গেলেও শেষ তিন বলে নিকোলাস পুরানের টানা তিন ছক্কাসহ মোট ৫ ছক্কায় ৩১ রান তুলে নেয় লখনৌ সুপারজায়ান্টস। আর এতেই দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে লখনৌ।

উইকেটে এসেই পুরানের এমন বিধ্বংসী রূপের পরই মূলত পথ হারিয়ে ফেলে হায়দ্রাবাদের বোলাররা। অভিষেক শর্মার ঐ ওভারের পর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি তাঁরা। উল্টো এরপরের ওভারে মানকাডের ব্যাটিং তোপের মুখে পড়েন নটরঞ্জন।

পুরান আর মানকাডের এমন বিধ্বংসী জুটিতেই শেষ পর্যন্ত ৪ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় লখনৌ সুপারজায়ান্টস। লখনৌর হয়ে প্রেরক মানকাড ৪৫ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। আর ৩ চার ও  ৪ ছক্কায়  ১৩ বলে ৪৪ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেন পুরান।

৭ উইকেটের এ জয়ে রাজস্থান রয়্যালসকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের চারে উঠে আসলো লখনৌ সুপারজায়ান্টস। অপর দিকে ৪ জয়ের বিপরীতে ৭ পরাজয়ে শীর্ষ চারের স্বপ্ন থেকে অনেকটাই ছিটকে গেল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link