ভারতের ক্রিকেটে পৃথ্বী শ যেন বিতর্কের আড়ালে ঢাকা পড়া এক নাম। প্রতিভাটা জন্ম থেকেই ছিল, সেটা চোখে পড়েছিল কৈশোরেই। কিন্তু সেই প্রতিভার আলো যতবারই ছড়িয়েছে, ততবারই তার ছায়ায় এসেছে বিতর্ক। আর সেটাই হয়ে গেছে ক্যারিয়ারেরও ছায়াসঙ্গী।
সম্প্রতি পুনেতে মুম্বাই ও মহারাষ্ট্রের তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে আগুন ঝরিয়েছিলেন তিনি। ব্যাট হাতে খেলেছেন ২২০ বলে ১৮১ রানের ইনিংস। কিন্তু দুর্ভাগ্য, যতটা না প্রশংসা ভেসে আসার কথা, তার থেকে বেশি এসেছে বিতর্ক!
ইনিংসের পরই মুম্বাই বোলার মুশীর খানের সঙ্গে ঘটে তীব্র বাকবিতণ্ডা। যা সীমা ছাড়িয়ে যায়, যখন পৃথ্বী শ মুশিরের কলার ধরে বসেন। সতীর্থ আর আম্পায়াররা দৌড়ে এসে শান্ত করেন পরিস্থিতি। স্পষ্টতই— শৃঙ্খলার পরীক্ষায় বারবার হোঁচট খাচ্ছেন তিনি।

২০১৯ সালের জুলাইয়ে ডোপিং কেলেঙ্কারিতে আট মাসের নিষেধাজ্ঞা থেকে শুরু। এরপর ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে ‘নকল ইনজুরি’ নিয়ে হাস্যকর বিতর্ক। আবার ২০২১ আইপিএলে কোচ রিকি পন্টিং প্রকাশ্যে বলেন, ‘পৃথ্বী শ প্র্যাকটিস করতে চায়নি!’ তখন থেকেই তাঁর সমস্যা প্রতিভায় নয়, মানসিকতায়।
শরীরের যত্নও যেন তার কাছে দ্বিতীয় বিষয়। ২০২৪ সালে মুম্বাই রঞ্জি দলে বাদ পড়েন ফিটনেস সমস্যার কারণে। রিপোর্টে বলা হয়েছিল, শরীরের ফ্যাট পারসেন্টেজ ৩৫! এমন পারফরম্যান্সে ২০২৫ আইপিএল নিলামেও তাকে কেউ নেয়নি। এক সময়ের প্রতিশ্রুতিশীল ব্যাটার এখন যেন উপেক্ষিত প্রতিভা।
তবে এখনো খুব বেশি দেরি হয়নি। চাইলেই হয়তো ফিরে আসতে পারেন পৃথ্বী শ। কিংবদন্তি কেভিন পিটারসনও সেই টোটকাটাই দিলেন। তিনি বলেন, ‘যদি ওর আশেপাশে ভালো মানুষ থাকে, যারা ওর ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবে, তাহলে ওকে সোশ্যাল মিডিয়া ছেড়ে কঠিন পরিশ্রমে ফিরতে হবে।’

এখন মহারাষ্ট্রের জার্সিতে নতুন শুরু খুঁজছেন পৃথ্বী শ। প্রতিভা নিয়ে প্রশ্ন নেই, প্রশ্ন কেবল— তিনি কি পারবেন নিজেকে নতুনভাবে গড়তে? নাকি প্রতিবারের মতো আবারও হারিয়ে যাবেন বিতর্কের ঘূর্ণিতে?











